বিজ্ঞাপন
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৭জনের। একইসঙ্গে কেবলমাত্র বৃহস্পতিবারই জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৬জন। সবমিলিয়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত এসে দাঁড়িয়েছে মোট ৫২৪জন। এরইমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৮২জন। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৩৬জন।
এদিকে, জেলা জুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় এবং তারইসঙ্গে রীতিমত দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে বর্ধমান পুর এলাকাতেও করোনা আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় গত সোমবার থেকে একটানা ৭দিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে বর্ধমান পুরএলাকার ৩৫টি ওয়ার্ডেই। জেলা প্রশাসনের রিপোর্ট অনুসারে গোটা জেলা জুড়েই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় জেলায় কন্টেইনমেন্ট জোনের সংখ্যাও বাড়তে শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় কণ্টেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা ছিল ১৬৯টি। এদিকে, জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় এবং গোটা জেলা জুড়েই বেশ কিছু এলাকায় করোনা বিধি উপেক্ষা করে মানুষের সমাগম হতে থাকায় শুক্রবার জেলাশাসক জেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় নতুন করে লকডাউনের ঘোষণা করেছেন। পাশাপাশি বর্ধমান শহরে লকডাউন বিধি ভঙ্গকারী ১৮জনকে বৃহস্পতিবার পুলিশ আটক করে। তারমধ্যে বেশ কয়েকজন মুদিখানা দোকানের মালিক ও অন্যান্য সামগ্রী বিক্রেতা সহ সাধারণ মানুষও ছিলেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, নতুন করে কালনা, কাটোয়া এবং মেমারী সমগ্র পুর এলাকাকেই ২৬ থেকে ২৮ জুলাই ৩দিন পুরোপুরি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে পূর্বস্থলী ১ ব্লকের নসরৎপুর গ্রাম পঞ্চায়েত, সমুদ্রগড় গ্রাম পঞ্চায়েত এবং শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সমগ্র এলাকাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এরই পাশাপাশি মেমারী ১ ব্লকের দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এবং মেমারী ২ ব্লকের সাতগাছিয়া মোড়, সাতগাছিয়া বাজার এবং সংশ্লিষ্ট এলাকাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে ২৬ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত।
অন্যদিকে, বর্ধমান ১নং ব্লকের সরাইটিকর গ্রাম পঞ্চায়েত, রায়ান ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েত এবং বেলকাশ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাকেও ২৬ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের ভিডিও কনফারেন্সের সময় বেশ কিছু এলাকার জনপ্রতিনিধি তাঁদের এলাকায় ব্যাপক হারে করোনা বিধি উপেক্ষা করে জমায়েত করার বিযষয়টি তুলে ধরে প্রশাসনের কাছে সেই সমস্ত এলাকাকেও ৭দিনের জন্য লকডাউনের দাবী জানান।
অপরদিকে, পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডুর নিরাপত্তারক্ষীর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসার পর শুক্রবার জেলা পরিষদের একঝাঁক কর্মকর্তার সোয়াব টেস্ট করানো হল। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার থেকেই জেলা পরিষদকে ৭দিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরই পাশাপাশি জেলার একাধিক তৃণমূল বিধায়কের নিরাপত্তারক্ষীদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় রীতিমত আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। কারণ পুলিশ বিভাগের এই নিরাপত্তারক্ষীদের করোনা আক্রান্ত হবার ঘটনায় গোটা পুলিশ মহল বিশেষত বর্ধমান জেলা পুলিশ লাইনের আবাসিক পুলিশ কর্মীদের মধ্যেও করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।