ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ ব্লকের শশঙ্গা পঞ্চায়েতের দামোদর নদের ধারে গৈতানপুর চরমানা এলাকায় সরকারি জমি দখল করে বেআইনিভাবে একের পর এক নির্মাণ কাজ চালানোর খবর প্রকাশ করেছিল ফোকাস বেঙ্গল। আর তারপরই রীতিমত নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন। জেলা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তর এই ঘটনায় সরজমিনে এলাকার তদন্ত করে রিপোর্ট পাঠিয়ে জেলায়। গৈতানপুর চরমানা এলাকায় মোট চারটি প্লটে বেআইনিভাবে নির্মাণকাজ চালানো হচ্ছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। মূলত রিসর্ট ও বাগানবাড়ি বা নার্সারি করার উপলক্ষে এই সমস্ত নির্মাণ কাজ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।ওই সরকারি জমির উপর বোর্ডও লাগানো রয়েছে। তাতে স্পষ্ট লেখা আছে ‘এই জমি সরকারি সম্পত্তি। এখানে কোনও নির্মাণ কার্য ও ক্রয়-বিক্রয় করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ’। কিন্তু তার পরেও কীভাবে ওই জমি জখল করে দীর্ঘদিন ধরে বেআইনিভাবে নির্মাণকাজ চালানো হলেও প্রশাসনের কারও নজরে পড়লো না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
যদিও এই সমস্ত নির্মাণকাজ যারা করেছেন তাদের কেউই কোন অনুমতিপত্র প্রশাসন কে দেখাতে পারেননি। ফলে একদিকে যেমন দীর্ঘ সময় ধরে এই সমস্ত নির্মাণ কাজ করা হলেও স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে ভূমি দপ্তর কিছুই জানতে পারলো না, তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠছে। তেমনি যে সমস্ত ব্যক্তি নদের ধারে সরকারি জায়গায় বিনা অনুমতিতে জমি দখল করে রীতিমত পাকা বাড়ি তুলে বিনোদনের ব্যবস্থা করল, তারাই বা কোন সাহসে ও কাদের ভরসায় লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে এখানে ব্যবসা ফাঁদলো তা নিয়েও ব্যাপক কৌতূহল তৈরি হয়েছে। স্থানীয় গ্রামবাসীদের একাংশ অভিযোগ করেছেন, এই সমস্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রশাসনের গোপন আঁতাতেই এই অবৈধ নির্মাণ গড়ে উঠেছে।
এদিকে এলাকার তদন্ত শেষ করে যারা ওই বেআইনি নির্মাণকাজ চালাচ্ছে তাদের সকলেই ইতিমধ্যে নোটিস পাঠিয়েছেন খণ্ডঘোষ ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক রোহিতরঞ্জন ঠাকুর। নোটিশে চারজন ব্যবসায়ীকে বলা হয়েছে কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানাতে। তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতেও বলা হয়েছে। ভূমি দফতর সূত্রে খবর, প্রথম ধাপে নোটিস পাঠানো হয়। পরবর্তী ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বেআইনি নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে। পাশাপাশি, বেআইনি নির্মাণকারীদের ওই নির্মাণকাজ ভেঙে দিতে হবে। না হলে প্রশাসনই তা ভেঙে দেবে। ব্লক ভূমি আধিকারিক রোহিতরঞ্জন ঠাকুর বৃহস্পতিবার বলেন, “ওখানে বেআইনিভাবে স্থায়ী কাঠামো নির্মাণ হয়েছে। তা ভেঙে দিতে বলা হয়েছে। নোটিস করা হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। তার পর মহকুমা শাসক পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন।”
জানা গিয়েছে, গৈতানপুর মৌজায় ১২০২, ১২০৩, ১২০৪ ও ১২০৫ নম্বর প্লটে বেআইনিভাবে স্থায়ী কাঠামো নির্মাণ করে রিসর্ট,নার্সারি সহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীক পরিকাঠামো গড়া হয়েছে। এই কাজের জন্য সরকারের কাছে কোনও অনুমতিই নেওয়া হয়নি। যারা এই বেআইনি নির্মাণ কাজ করেছে ভূমি দফতর তাদের চিহ্নিত করেছে। শম্ভু দত্ত, যতন দাস, অর্ণব সাহা ও অরুণ সমাজদার এই বেআইনি নির্মাণ করেছে বলে ভূমি দফতর রিপোর্টে জানিয়েছে জেলা প্রশাসনকে।