বর্ধমানের অভিযুক্ত কাউন্সিলারকে গোপনে শপথবাক্য পাঠ করানোয় মহকুমা শাসককে শাড়ি, চুড়ি দিতে চেয়ে যুব কংগ্রেসের বিক্ষোভ
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: নাবালিকাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেবার অভিযোগে মূল অভিযুক্ত বর্ধমানের ২৭নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার কে নিজের অফিসে গোপনে শপথ বাক্য পাঠ করিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন বর্ধমান সদর উত্তর মহকুমাশাসক তীর্থাঙ্কর বিশ্বাস। আর এরপর থেকেই একের পর এক রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে এই ঘটনার বিরোধিতা করে বিক্ষোভ, আন্দোলন দেখানো হয়েছে শহর জুড়ে। সোমবার পূর্ব বর্ধমান জেলা যুব কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মহকুমাশাসকের অপসারণ দাবি করে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
পাশাপাশি, এই বিষয়ে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দেয় যুব কংগ্রেস নেতৃত্ব। মহকুমা শাসকের অপসারণের দাবি জানান তারা। পাশপাশি, মহকুমা শাসককে শাড়ি ও চুড়ি উপহার দিতে চেয়ে প্রতীকী বিক্ষোভ দেখান তারা। যদিও পুলিশি বাধায় সেই চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় জেলাশাসকের অফিসের বাইরে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে যুব কংগ্রেসের নেতা কর্মীরা। পরে বিক্ষোভকারীদের হটাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এরপর পুলিশ বিক্ষোভরত কংগ্রেস কর্মীদের গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।
এদিন যুব কংগ্রেস কর্মীরা মিছিল করে জেলাশাসক দফতরের উপস্থিত হন। সেখানে এই বিষয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলে স্মারকলিপি জমা দেন তারা। যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি গৌরব সমাদ্দার জানান,” পুর নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর বর্ধমানের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে এক নাবালিকা কলেজ ছাত্রী আত্মঘাতী হন। ওই ওয়ার্ডের নব নির্বাচিত কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে এই ঘটনায় অভিযোগ জানিয়েছেন মৃতার পরিবার। সম্প্রতি কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী মৃতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে আসেন। মৃতার পরিবার শাসকদলের কাউন্সিলারের প্ররোচনায় আত্মহত্যার কথা জানায়। একই সঙ্গে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেছেন তারা।
গৌরব সমাদ্দার জানিয়েছেন, ঘটনায় চারজন মহিলা ও একজন পুরুষ গ্রেফতার হলেও অভিযোগে ১৪জনের মধ্যে ১নম্বরে নাম থাকা কাউন্সিলারকে এখনও গ্রেফতার করেনি পুলিশ। পুলিশের চোখে অভিযুক্ত কাউন্সিলার নাকি পলাতক। এমনকি গত ১৬মার্চ বর্ধমান পুরসভার প্রকাশ্য মঞ্চে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানেও আসেননি কাউন্সিলার বসিরুদ্দিন আহমেদ ওরফে বাদশা। কিন্তু পরেরদিন অর্থাৎ ১৭মার্চ মহকুমাশাসকের দফতরে গোপনে শপথ নিয়েছেন ওই কাউন্সিলর বলে জানা গিয়েছে। এরপরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, একজন প্রশাসনের আধিকারিক হয়ে মহকুমা শাসক কিভাবে এই ধরনের গুরতর বিষয়টি এড়িয়ে গেলেন।
গৌরব সমাদ্দার অভিযোগ করে বলেন, ” মহকুমাশাসক শাসকদলের পক্ষ নিয়ে কাজ করছেন। এই ধরনের একজন অভিযুক্তকে কিভাবে তার দফতরে শপথ গ্রহণ করালেন। তার মতো মহকুমা শাসক থাকলে সাধারণ মানুষের প্রশাসনের উপর আস্থা নষ্ট হবে। তাই আমরা এই মহকুমা শাসকের অপসারণ দাবি জানাচ্ছি। পাশপাশি, প্রশাসনিক পদে থেকেও অভিযুক্তের সম্পর্কে ওয়াকিবহাল না থাকায় তাঁকে আমরা শাড়ি ও চুরি উপহার দিয়ে প্রতীকী প্রতিবাদ জানিয়েছি।” পরে জেলাশাসক দফতর থেকে মাহকুমাশাসকের দফতরে যেতে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় কংগ্রেস কর্মীদের। বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে মুক্তি দিয়ে দেওয়া হয়।