ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইউআইটি কলেজে বৃহস্পতিবার দুপুরে ছাত্র ও শিক্ষকদের মধ্যে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হল। আর কলেজের মধ্যে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও ছাত্রদের মধ্যে এই মারামারির ঘটনায় মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ইউনিয়নের দুজন সদস্য তথা এই কলেজের কর্মীদের বিরুদ্ধে। কলেজের প্রিন্সিপ্যাল অভিজিৎ মিত্র এদিন বলেন, ” ২০২১সালের জানুয়ারি মাস থেকে কলেজেরই একটি গ্রুপ অশান্তি সৃষ্টি করে আসছে কলেজে। কলেজের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত করার পাশাপাশি স্বাভাবিক পঠনপাঠনেও ব্যাঘাত সৃষ্টি করে চলেছে। আর এই কাজে মদত দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ইউনিয়নের এক নেতা ও কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষাকর্মী।
বিজ্ঞাপন
এমনকি আমিও প্রায় একমাস ধরে কলেজে আসতে পারছি না। এই সমস্ত বিষয় বারবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কে জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি। এমনকি বর্ধমান থানায় লিখিত অভিযোগ করার পরেও পুলিশ ঘটনায় যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এর আগেও কলেজে ঢুকে আমাকে ঘেরাও করে আটকে রাখা, কলেজ চত্বরে কলেজের কর্মীকে বহিরাগতদের এনে মারধর করার মত ঘটনাও ঘটেছে।” বৃহস্পতিবার ইউ আই টি কলেজের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্রিন্সিপ্যাল অভিজিৎ মিত্র বলেন, “নির্দিষ্ট সময়ে কলেজের ফি জমা না করায় ফর্ম ফিলাপ করতে পারছিলেন না বহু ছাত্রছাত্রী। ফলে আগামী সোমবার পরীক্ষায় বসা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে অনেকের।
আর এই সমস্যা সমাধানে বৃহস্পতিবার বর্ধমান ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি কলেজের শিক্ষকদের নিয়ে অনলাইনে মিটিং ডেকে আলোচনার ব্যবস্থা করা হয়। সেই মিটিংয়েই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আগামী ৩০দিনের মধ্যে যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপ করেনি তারা ফর্ম ফিলাপ করে ফি জমা করতে পারবেন। সেই মর্মে এদিন নোটিশও টাঙিয়ে দেওয়া হয় কলেজে। আর এরপরই কলেজের কর্মচারীদের একাংশ এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে কয়েকজন শিক্ষক কে শারীরিকভাবে হেনস্থা করে। এই সময় ছাত্রদের একাংশের সঙ্গেও বচসা ও পরে রীতিমত ধুন্ধুমার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় কলেজ চত্বরে। দুজন শিক্ষক এই ঘটনায় আহত হয়েছেন বলে কলেজ সূত্রে জানা গেছে। একজন শিক্ষিকা কেও অশ্লীল ভাষায় গালিগালজ ও তাঁর সঙ্গে অশালীন আচরণ করা হয় বলে অভিযোগ। ধাক্কাধাক্কির ফলে জামা কাপড়ও ছিঁড়ে যায় শিক্ষকদের।”
ঘটনার খবর পেয়ে বর্ধমান থনার বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। অভিজিৎ মিত্র বলেন,” কলেজের দুজন কর্মী যারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত অমিয় ঘোষ ও প্রীতম দে তারা এদিনের অনলাইন মিটিংয়ে উপস্থিত থাকা শিক্ষক তথা প্রাক্তন প্রিন্সিপ্যাল অপূর্ব ঘোষ ও পার্থ প্রতিম সরকার কে রীতিমত শারীরিকভাবে হেনস্থা করেন। এই শিক্ষকরা বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিজেদের চিকিৎসাও করান।” প্রিন্সিপ্যাল বলেন,” প্রত্যেক ছাত্রছাত্রী যাতে পরীক্ষায় বসতে পারে তার জন্যই ভার্চুয়াল মিটিং করে এদিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কলেজের একাংশ শিক্ষককে ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ তুলে প্রথমে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী দের মধ্যে বচসা সৃষ্টি হয়। বচসা থেকে হাতাহাতি ও পরে এই ঘটনায় ছাত্রদের একাংশও জড়িয়ে যায়। আমরা এই ঘটনায় বর্ধমান থানায় দোষী ব্যক্তিদের নামে অভিযোগ দায়ের করেছি।”