ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: বর্ধমান শহরের
তেজগঞ্জ এলাকার বৃদ্ধ খুনের ঘটনার ১৫ দিনের মাথায় খুনি কে গ্রেপ্তার করলো জেলা পুলিশ। শনিবার জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখার্জি সাংবাদিক সম্মেলন করে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার যুবক রণিত দত্ত কে পেশ করেন। পুলিশ সুপার এদিন জানিয়েছেন, গত ২ জুলাই বিকেল সাড়ে ৪ টা নাগাদ বর্ধমানের তেজগঞ্জ স্কুলপাড়ার বাসিন্দা মীরা দত্ত বাড়ি ফিরে এসে দেখেন তার স্বামী গোরাচাঁদ দত্ত (৮৪) ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। তাঁর গলায় ধারালো অস্ত্রের কোপ ছিল। ঘরের আলমারি, টিভি এবং বাড়ির অন্যান্য সামগ্রী বিশৃঙ্খল অবস্থায় ছড়ানো ছিটানো ছিল। খুন করে ঘর থেকে বেরিয়ে যাবার সময় মীরা দেবীর মুখোমুখি হলেও তিনি যুবককে চিনতে পারেননি। যদিও মীরা দেবী পুলিশ কে জানিয়েছিলেন, ওই যুবকের পরনে হলুদ রঙের গেঞ্জি ছিল।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ঘটনার পর খুনি কে জানার জন্য তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। পুলিশ কুকুর নিয়েও তল্লাশি চালানো হয় বিভিন্ন জায়গায়। যদিও প্রথমদিকে কোনো ক্লু না পাওয়ায় তদন্তের স্বার্থে ফিঙ্গার প্রিন্ট এক্সপার্ট এবং পরে ফরেনসিক দপ্তরের সাহায্য নেওয়া হয়। আর এরপরই খুনির সন্ধান মেলে। তিনি জানিয়েছেন, অভিযুক্ত রণিত দত্ত খুনের কথা স্বীকার করেছে। খুনের ঘটনার পর একটি সাইকেল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে খুনে ব্যবহার করা অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে তদন্তে জানা যাচ্ছে অভিযুক্ত মাদকাসক্ত ছিল। চুরির উদ্দেশ্যেই বৃদ্ধের বাড়িতে ঢুকেছিলো। টাকা চেয়ে না পেয়েই বৃদ্ধকে খুন করে।
তিনি এও জানিয়েছেন, অভিযুক্ত রণিত দত্তের বাড়ি গোরাচাঁদ দত্তের বাড়ি থেকে পাঁচশো মিটারের মধ্যে। রণিত দত্তের পরিবারের দুধের ব্যবসা আছে। বৃদ্ধ গোরাচাঁদ বাবু প্রায়ই এদের বাড়ি থেকে দুধ নিতে যেত। ঘটনার দিন বৃদ্ধের কাছে টাকা চেয়েও না পেয়ে ঘরের আলমারি সহ বিভিন্ন আসবাবপত্র তছনছ করে টাকা খোঁজার চেষ্টা করে। যদিও পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, বৃদ্ধের মাথার বালিশের তলা থেকে ৪৫হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এক্ষেত্রে মনে করা হচ্ছে খুনি ঘরের আলমারির চাবি পেয়ে যাওয়ায় বিছানার বা বালিশের তলায় টাকা থাকতে পারে সেটা খেয়াল করেনি। আর টাকা না পেয়েই ধারালো অস্ত্র দিয়ে বৃদ্ধের গলার নলি কেটে দেয়। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল শহর জুড়ে।