বর্ধমানের নবাবহাট বাস স্ট্যাণ্ডের দখলদারী নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ, আহত ১
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান:বর্ধমান শহরের নবাবহাট বাসস্ট্যাণ্ড এলাকা কার দখলে থাকবে তা নিয়ে মঙ্গলবার সকালে তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল। এই ঘটনায় সেখ আজিজুল নামে এক তৃণমূল কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে নবাবহাট এলাকায় তৃণমূলের দলীয় অফিসও। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকা ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
আহত তৃণমূল কর্মী সেখ আজিজুল জানিয়েছেন, তাঁরা বেলকাশ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের অনুগামী। তিনি অভিযোগ করেছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই বর্ধমান ১নং ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি কাকলি গুপ্তের অনুগামীরা নবাবহাট বাসস্ট্যাণ্ড এলাকায় নিজেদের কর্তৃত্ব কায়েম করতে চাইছে। নবাবহাট বাসস্ট্যাণ্ড থেকে মোটা টাকা তোলা আদায় করে চলেছে তারা। আজিজুল জানিয়েছেন, এব্যাপারে তাঁরা প্রতিবাদ করেছেন। আর সেই প্রতিবাদের জন্যই মঙ্গলবার সকালে প্রায় ১৫জন আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি সহ অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে নবাবহাটে তাঁদের পার্টি অফিসে হামলা চালায়।
আজিজুল জানিয়েছেন, সেই সময় পার্টি অফিসে যাঁরা ছিলেন তাঁদের বেধড়ক মারধর করা হয়। তাঁকেও বেধড়ক মারধর করে হামলাকারীরা। এমনকি তাঁকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ভয়ও দেখানো হয়। এদিকে, এই ঘটনার পরই গোটা এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বর্ধমান থানার পুলিশ। যদিও এদিন এই অভিযোগ অস্বীকার করে ব্লক সভাপতি কাকলি গুপ্ত জানিয়েছেন, এটা নিতান্তই দুটি পাড়ার ঘটনা। এর সাথে দলের কোনো যোগ নেয়। ইচ্ছাকৃতভাবেই দল ও তার নাম জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
কাকলি গুপ্ত জানিয়েছেন, দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর যারা করেছেন তাদের চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি এও জানিয়েছেন, যাঁরা আক্রমণ করেছেন তাঁরা তাঁরই অনুগামী বলে তিনি শুনেছেন। এব্যাপারে তাঁদের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, গত কয়েকদিন ধরেই শিবপুর দীঘিরপাড় এবং নবাবহাট এলাকার মধ্যে অশান্তির খবর পাচ্ছিলেন তিনি। তবে তা যে এতবড় আকার নেবে তা তিনি বুঝতে পারেননি। এব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, বিজেপি বর্ধমান সদর সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র জানিয়েছেন, তৃণমূলের তোলাবাজি নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। নবাবহাট বাসস্ট্যান্ডে তৃণমূলের নাম করে তোলা আদায় করা হয় সেই টাকার ভাগ নিয়েই এই দ্বন্দ্ব। যার ফলে এলাকার মানুষ ভিত সন্ত্রস্ত। যা কাম্য নয়। প্রশাসনের অবিলম্বে বিষয়টি দেখা দরকার। এলাকার মানুষ যাতে শান্তিতে থাকতে পারে তার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন। অপরদিকে, এব্যাপার তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা অস্বীকার করে পূর্ববর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস জানিয়েছেন, এর সাথে দল কোনোভাবেই যুক্ত নয়। যে বা যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা নেবার আবেদন জানানো হবে।