বর্ধমানের পালিতপুরে বিজেপি তৃণমূল সংঘর্ষে রণক্ষেত্র এলাকা, রাতে আটক ১২জন, চরম উত্তেজনা

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রথম দিন থেকেই কার্যত উত্তপ্ত হতে শুরু করল পূর্ব বর্ধমান জেলার উত্তর বিধাসভার বর্ধমান ১নং ব্লকের পালিতপুর এলাকা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই পালিতপুর গ্রাম কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিতে শুরু করে। বিজেপি তৃণমূল সংঘর্ষে তৃণমূলের তিনজন কর্মী মারাত্মক জখম হয়। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনার খবর পেয়ে বর্ধমান থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। পরে ডিএসপি হেড কোয়ার্টারের নেতৃত্বে জেলার বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। নামানো হয় রাপিড একশন ফোর্স কে। 

   ঘটনার সূত্রপাত, এদিন পালিতপুর এলাকার একটি হোটেলের সামনে দিয়ে বিজেপির কিছু সমর্থক জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতে দিতে যাবার সময় ওই হোটেল থেকে খেলা হবে স্লোগান দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেই সময় প্রথমে হোটেল মালিক কানাইয়ের সঙ্গে প্রথমে বচসা পরে হোটেল ভাঙচুর চালায় বিজেপি কর্মীরা বলে জানা গেছে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই পালিতপুর গ্রাম থেকে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা দলে দলে জড়ো হতে শুরু করে ওই হোটেল সংলগ্ন এলাকায়। পাল্টা তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরাও ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসে ঘটনাস্থলে। 

আর এরপরই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা। বিজেপি কর্মী সমর্থকরা হোটেলে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। পাল্টা প্রতিরোধ করতে গেলে তৃণমূলের একাধিক কর্মী সমর্থককে বেধড়ক মারধর করে বিজেপির লোকেরা বলে তৃণমূলের অভিযোগ। এই ঘটনায় দিলু খাঁ, জাহাঙ্গীর মন্ডল ও শেখ ডালিম গুরুতর জখম হয়েছেন। অভিযোগ তাদের রড, লাঠি, বাঁশ প্রভৃতি দিয়ে মারধর করা হয়েছে। এদের মধ্যে জাহাঙ্গীর মন্ডল ও শেখ ডালিমের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের বর্ধমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

 ঘটনার পর পুলিশ গোটা এলাকায় দুষ্কৃতীদের সন্ধানে তল্লাশি শুরু করেছে। এদিন রাত পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী পুলিশ এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১২জনকে আটক করেছে। এলাকায় চরম উত্তেজনা রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, গ্রামের অনেকে পুরুষ এলাকা ছাড়া হয়ে গেছে। যদিও পুলিশ এই ঘটনার সাথে যুক্ত সকলকে ধরার প্রক্রিয়া জারি রেখেছে। এদিকে বিজেপির জেলা সম্পাদক শ্যামল রায় জানিয়েছেন, ওই হোটেল থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ভাবে মদ বিক্রি করা হচ্ছিল। এই নিয়ে গ্রামে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। এলাকাবাসী তার প্রতিবাদ করে আসছিল। এদিন সেই ঘটনায় গ্রামবাসীদের সঙ্গে হোটেল মালিকের ঝামেলা হয়। এর সঙ্গে বিজেপির কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি জানিয়েছেন, এই এলাকায় তৃণমূলের পায়ের তলায় মাটি নেই, তাই নিজেদের ক্ষমতা দেখানোর জন্য বিজেপির উপর দোষ চাপাচ্ছে।

 অন্যদিকে বর্ধমান ১নং ব্লকের যুব সভাপতি মানস ভট্টাচার্য্য অভিযোগ করেছেন, শান্ত বর্ধমান কে অশান্ত করতে বিজেপির হার্মাদ রা সমস্ত জায়গায় অশান্তি সৃষ্টি করছে। এদিন সিপিএম থেকে বিজেপিতে আসা শান্তনু তায়ের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়। তিনি অভিযোগ করেছেন,  শান্তনুর নেতৃত্বে বিজেপির দুস্কৃতিদের নিয়ে পালিতপুর গ্রামে একাধিক বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। ভেঙে দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেল। তৃণমূলের কর্মীদের লক্ষ্য করে হামলা চালায় তারা। তাদের মধ্যে জাহাঙ্গীর মন্ডল এবং শেখ ডালিমের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনার প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ তারা রাজনৈতিকভাবেই করবেন।