---Advertisement---

বর্ধমানের ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত গতবছরের টাকাই খরচ করতে পারেনি, ভোটের আগে দুশ্চিন্তায় শাসকদল

Souris Dey

Published

বিজ্ঞাপন
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমান জেলার ২১৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত গতবছরের আর্থিক বরাদ্দের একটি বিশাল অংকের টাকা খরচই করতে পারেনি। এর ফলে সরকারীভাবে ওই ১৫টি পঞ্চায়েতের আগামী বছরের আর্থিক বরাদ্দের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হতে চলেছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এই ১৫টি পঞ্চায়েত তাদের বরাদ্দকৃত অর্থের মোট প্রায় ২০কোটি টাকা এখনও খরচ করতে পারেনি। এদিকে, এব্যাপারে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার ওই ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে জানানো হলেও তাতে এখনও কোনো সুফল মেলেনি। তাই ফের এই ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে নিয়ে আলোচনায় বসার উদ্যোগ নিতে চলেছে জেলা প্রশাসন।
উল্লেখ্য, আগামী ২০২১ সালের গোড়ার দিকেই বিধানসভার ভোট হতে পারে ধরে নিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দলই ঝাঁপিয়ে পড়েছে নিজেদের ঘর গোছাতে। আর তারই মধ্যে রাজ্যের শাসকদলের অনুকুলে থাকা এই ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত কেন কাজ করতে পারছে না বা কেন গতবছরের আর্থিক বরাদ্দ খরচ করতে পারেনি তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা শুরু হয়েছে। শুধু তাইই নয়, এই সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে সরকারী উন্নয়নমূলক কাজ না হওয়ায় রীতিমত কোণঠাসা অবস্থার মুখে এসে দাঁড়িয়েছে রাজ্যের শাসকদল।
স্বাভাবিকভাবেই ওই সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আগামী ভোটের বিন্যাস কি দাঁড়াবে তা নিয়েই শংকিত রাজ্যের শাসকদল। অন্যদিকে, এটাকেই পাল্টা ইস্যু হিসাবে খাড়া করতে চলেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) প্রবীর চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতে পড়ে থাকা টাকার মধ্যে রয়েছে যেমন কেন্দ্রীয় বরাদ্দের টাকা, তেমনি রয়েছে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকাও। তিনি জানিয়েছেন, এই ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে গলসীর শিড়রাই গ্রাম পঞ্চায়েতে পড়ে রয়েছে ১ কোটি ১২ লক্ষ টাকা, গলসীর চাকতেতুঁল পঞ্চায়েতে পড়ে রয়েছে ১ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা, গলসীর সাটিনন্দী পঞ্চায়েতে পড়ে রয়েছে ১ কোটি ১২ লক্ষ টাকা।

ভাতারের ভাতার গ্রাম পঞ্চায়েতে পড়ে রয়েছে ১ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা, আমারুণ ২ তে পড়ে রয়েছে ৭৪ লক্ষ টাকা। মেমারী ১ এর দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ২ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা, নিমো ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে ১ কোটি টাকা এবং জামালপুরের জারগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতে পড়ে রয়েছে ১ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকা। কালনার অকালপৌষ গ্রাম পঞ্চায়েতে পড়ে রয়েছে ৮৯ লক্ষ টাকা, পূর্বস্থলীর নসরতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে পড়ে রয়েছে ৪ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা। পূর্বস্থলীর ঝাউডাঙা পঞ্চায়েতে পড়ে রয়েছে ৩২ লক্ষ টাকা, মুকসিমপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে পড়ে রয়েছে ১ কোটি ৮ লক্ষ টাকা। কেতুগ্রামের সীতাহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতে পড়ে রয়েছে ১ কোটি ৫ লক্ষ টাকা এবং কাটোয়ার লাখুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে পড়ে রয়েছে ১ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা।
কেন গতবছরের উন্নয়নের এই টাকা খরচ করতে পারেনি এই গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি ? এর উত্তরে প্রবীরবাবু জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তথা খোদ জেলাশাসক বারবার নির্দেশ দিয়েছেন কিন্তু এই ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজের সাফল্য ভাল নয়। তিনি জানিয়েছেন, একমাত্র স্থানীয়ভাবেই সাধারণ মানুষ চাপ সৃষ্টি করলে তবেই এই ১৫টি পঞ্চায়েতের হাল ফেরানো সম্ভব। তিনি জানিয়েছেন, এই ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার অঙ্গ হিসাবে আগামী আর্থিক বছরে তাঁদের আর্থিক বরাদ্দের টাকা কমে যাবে। ফলে উন্নয়নও কম হবে।
এদিকে, সামনেই বিধানসভা ভোট। স্বাভাবিকভাবেই সরকারী বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য বরাদ্দ টাকা এই ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত খরচ করতে না পারায় সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সাধারণ মানুষ সররকারী প্রকল্পের সুবিধা থেকে দীর্ঘদিন ধরেই বঞ্চিত হয়ে রয়েছেন। ফলে এর প্রভাব যদি ভোট বাক্সে প্রতিফলিত হয় তাহলে তা রীতিমত কপালে ভাঁজ ফেলে দেবে রাজ্যের শাসকদলকে। কার্যত সেটাকেই কাজে লাগাতে চাইছে বিরোধীরা।
See also  বর্ধমানে গোল্ড লোন সংস্থায় ডাকাতি করে পালাবার সময় প্রকাশ্য দিবালোকে শ্যুট আউট, আতংক
শেয়ার করুন 🤝🏻

Join WhatsApp

Join Now
---Advertisement---