ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: করোনা ভাইরাসের জেরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অবৈধ মজুদের বিষয় নিয়ে জেলায় ডিইবি, স্বাস্থ্য দপ্তর, মেট্রোলজি বিভাগ এবং সংশ্লিষ্ট মহকুমা শাসকের দপ্তরকে নিয়ে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করলো পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। তাঁরা প্রতিনিয়ত বাজারগুলিতে নজরদারী চালাচ্ছেন। তবে এখনও পর্যন্ত জেলায় এরকম কোনো অবৈধ মজুদের খবর মেলেনি বলে শুত্রুবার জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানিয়েছেন।
এদিকে, এরই পাশাপাশি দেশের অন্য রাজ্য এবং বিদেশ থেকে বাড়ি ফিরছেন যাঁরা তাঁদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে জেলার ৪৩৭টি ক্লাব এবং সিভিক ভলেণ্টিয়ারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসক জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার গুরুত্ব অনুযায়ী এখানে একটি অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি তৈরী করা হচ্ছে। ইণ্ডিয়ান কাউন্সিল মেডিক্যাল রিসার্চ -এর অধীনে এই ল্যাবরেটরী তৈরী করা হবে। এদিকে, এরই পাশাপাশি শুক্রবার বর্ধমান জেলা পরিষদের এক অস্থায়ী কর্মী ব্যাঙ্গালোর থেকে ফেরায় তাঁকে আগামী ১৪দিন অফিসে না আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে এদিন থেকেই জেলা পরিষদের আধিকারিকদের নিরাপত্তার জন্য তাঁদের টেবিল লাগোয়া ভিজিটরস চেয়ারগুলিকে টেবিল থেকে বেশ কিছুটা দূরত্বে বসানো হয়েছে। এদিন থেকেই যাঁরা আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করতে আসছেন তাঁদের স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোওয়ার পরই তাঁদের চেম্বারে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। অপরদিকে, আগামী রবিবার বর্ধমান শহরের সমস্ত বাজার বন্ধ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে পূর্ব বর্ধমান জেলা চেম্বার অব ট্রেডার্স।
এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চন্দ্র বিজয় যাদব জানিয়েছেন, করোনা নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এমনিতেই বাজারে খরিদ্দারের সংখ্যা কমে গেছে। ব্যবসাপত্র লাটে উঠেছে। তারই পাশাপাশি সরকারী নির্দেশে তাঁরা রবিবার বর্ধমান শহরের সমস্ত বাজার, মার্কেট কমপ্লেক্স বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তের আওতায় কাঁচা সবজী বাজার, মাছের বাজার সবই রয়েছে। এদিন ব্যবসায়ীদের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন, বর্ধমান পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলার খোকন দাসও।
অপরদিকে, করোনার আতংকে বাজারপত্র বন্ধ হয়ে যাবার গুজবের জেরে অতিরিক্ত পণ্য কেনার হিড়িক অব্যাহতই। বর্ধমানের অভিজাত একটি মুদিখানা দোকানের মালিক সমরনাথ দত্ত জানিয়েছেন, তাঁরা রীতিমত হিমসিম খাচ্ছেন খরিদ্দারের চাহিদা মেটাতে। তিনি জানিয়েছেন, দুদিন আগেই যিনি মাসকাবারি মাল কিনে নিয়ে গেছেন তিনিই ফের একই মাল আরও বেশি পরিমাণে কিনছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই দুদিনে নয়নয় করেও প্রায় ৮ গুণ মাল বিক্রি হয়েছে। তাঁরা খরিদ্দারদের অহেতুক গুজবে কান না দেবার আবেদন জানালেও তাঁরা শুনতে নারাজ। ফলে আগামী কয়েকদিনে পরিস্থিতি কোন দিকে যায় তার দিকেও নজর রাখছেন সমরনাথ বাবুও।
যদিও এব্যাপারেও জেলাশাসক জানিয়েছেন, গোটা রাজ্যে খাদ্যের কোনো ঘাটতি নেই। কোনো অভাবও নেই। কিন্তু তারপরেও যদি কেউ অহেতুক পণ্য মজুত বা কালোবাজারি করেন তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।