বর্ধমানে আদিবাসী সমাজের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে দেবু টুডুর উদ্যোগে শুরু হল সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমান জেলায় আদিবাসীদের মধ্যে আদিবাসীদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক চর্চা ক্রমশই হারিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই এখন আর আদিবাসীদের নিজস্ব বাদ্যযন্ত্র মাদল বাজানো থেকে বাঁশিতে বিভিন্ন আদিবাসী সুর তুলতে চাননা। আর তাই আদিবাসীদের সেই পুরনো ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে এবং টিকিয়ে রাখতে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু।

বিজ্ঞাপন

 বর্ধমান শহরের বাম ৭০মাইল এলাকায় জেলা জাহের থান সংলগ্ন এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে আদিবাসী সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র। আর মঙ্গলবার থেকে সেই চর্চা কেন্দ্রে শুরু হল আদিবাসী বিভিন্ন গান, বাদ্যযন্ত্র শেখানোর ক্লাস। নয়া এই পদক্ষেপে প্রথম ব্যাচে এই গানের ক্লাসে ছাত্র হিসাবে যোগ দিচ্ছেন খোদ দেবু টুডু। এছাড়াও বর্ধমান শহর ও শহর সংলগ্ন বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত আদিবাসী মানুষেরাও সানন্দে এগিয়ে এসেছেন। 

দেবু টুডু জানিয়েছেন, এঁদের মধ্যে প্রায় ৬জন রয়েছেন বর্ধমান মেডিকেল কলেজ সহ অন্যত্র প্র্যাকটিস করা চিকিৎসক। রয়েছেন প্রায় জনা পাঁচেক শিক্ষকও। তিনি জানিয়েছেন, এখনকার ছেলেমেয়েদের মধ্যে আদিবাসী সমাজের এই পুরনো সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার তেমন আগ্রহ দেখা যায় না। তার মূল কারণ যেমন হাতে হাতে মোবাইল ফোন, তেমনি সমানভাবে দায়ী প্রশিক্ষকের অভাব। সঠিক প্রশিক্ষণ না থাকায় এবং তা ধারাবাহিকভাবে রক্ষা করতে না পারার জন্যই এই অবক্ষয় দেখা যাচ্ছে। আর তাই আদিবাসী সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

দেবু টুডু জানিয়েছেন, এই চর্চা কেন্দ্রে মাদল বাজানো, বিভিন্ন ধরণের বাঁশি বাজানো, বেহালা বাজানো প্রভৃতি সমস্ত ধরণের বাদ্যযন্ত্র শেখানো হবে। প্রতিদিন সন্ধ্যে ৬টা থেকে এই ক্লাস শুরু হবে। প্রয়োজনবোধে তা আরও বাড়ানো হবে। উল্লেখ্য, দেবু টুডু অবিভক্ত বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি থাকাকালীন প্রতিটি মহকুমায় একটি করে আদিবাসী সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য উদ্যোগী হয়েছিলেন। একইসঙ্গে প্রতিটি মহকুমাতেই আদিবাসী সমাজের বীর নেতা সিধু ও কানহুর মূর্তি বসানো, মিউজিয়াম গড়ার উদ্যোগ নেন। 

পাশপাশি আদিবাসী সমাজের বিভিন্ন আঞ্চলিক অস্ত্র যেমন তীর ধনুক, মাদল সহ নানান বিষয়কে এই মিউজিয়ামে ঠাঁই দেবার উদ্যোগ নেওয়া হয়। পাশাপাশি নিয়ম করে প্রতিবছর আদিবাসীদের মাদল প্রদান করারও কর্মসূচি নেওয়া হয়। তিনি জানিয়েছেন, প্রথম দফায় জনা পনেরোকে দিয়ে এই ক্লাস শুরু হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, এজন্য আদিবাসী সমাজের যাঁরা দক্ষ শিল্পী তাঁদের নিয়ে আসা হচ্ছে। তাঁরাই এই প্রশিক্ষণ দেবেন।

আরো পড়ুন