বর্ধমানে এখনই আর লকডাউন হচ্ছে না, পাল্টাতে চলেছে বাজার খোলা ও বন্ধের সময়সীমা!

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনই আর নতুন করে কোন এলাকা লকডাউন করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে না। পরিবর্তে দোকান, বাজার, রাস্তায় মানুষের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে একাধিক শর্তাবলী প্রয়োগের বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করতে চলেছেন জেলাশাসক। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিভিন্ন বাজারের খোলা ও বন্ধের সময় পরিবর্তন। বৃহস্পতিবার জেলাশাসক বিজয় ভারতী বর্ধমানের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের পদাধিকারীদের সঙ্গে বৈঠকের পর এমনি ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে বৈঠক শেষে ব্যবসায়ী সংগঠনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। পাশাপাশি, জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, রাজ্য সরকারের পূর্ব ঘোষিত লকডাউনের দিনগুলিতে এই জেলাতেও কঠোরভাবে লকডাউন জারি থাকবে।
জেলাপ্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, এখনো পর্যন্ত জেলার করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে মোট সংক্রমণের প্রায় ৩০শতাংশ বিভিন্ন বাজার কেন্দ্রিক এলাকা থেকেই হয়েছে। এছাড়াও সংক্রমিতের সঙ্গে প্রাথমিক যোগাযোগকারী ব্যক্তিদের সংক্রমণের হারও প্রায় ৩০শতাংশের কাছাকাছি। বাকি ৪০শতাংশ আক্রান্ত ব্যক্তি বেশিরভাগ রাজ্যের এবং রাজ্যের বাইরে থেকে এই জেলায় আসার পর সংক্রমিত হয়েছেন। ফলে এবার লকডাউনের থেকেও বাজারে ভিড় নিয়ন্ত্রণে আরও কড়া হতে চাইছে জেলা প্রশাসন বলে সূত্রের খবর।
এদিন জেলাশাসকের বাংলোয় জেলা ব্যবসায়ী সুরক্ষা সমিতি, পূর্ব বর্ধমান চেম্বার অফ ট্রেডার্স, মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতি, স্বর্ণ শিল্প ব্যবসায়ী সমিতি, সবজি ও মৎস ব্যবসায়ী সমিতি সহ অন্যান্য ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে চলতি করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে লকডাউনের কার্যকারিতা এবং প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়। এই বৈঠকেই ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রস্তাব চাওয়া হয় বিভিন্ন বাজার খোলা রাখার সময়সীমা সম্পর্কে। আর সমস্ত প্রস্তাব লিখিত আকারে জমা পড়ার পর এদিন সন্ধ্যায় জেলাশাসক লকডাউন এবং নতুন নিয়মবিধি চালু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানিয়ে দেন। এরই মধ্যে এখনই যে আর লকডাউন হচ্ছে না সে ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তবে বাজার খোলা বা বন্ধের সময়সীমা ঠিক কি হবে সে ব্যাপারে এদিন রাত পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়নি।
জেলা ব্যবসায়ী সুরক্ষা সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বেশর চৌধুরী জানিয়েছেন, এদিন বৈঠকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সবজি এবং মাছের পাইকারি বাজার সকাল ৮টার মধ্যে বন্ধ করে দেওয়ার। পাশাপাশি, সবজি, মাছ, ফলের খুচরো বাজার বেলা ১১টার মধ্যে বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, মুদিখানা থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দোকান সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টার পর্যন্ত খুলে রাখার ব্যাপারে প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। যদিও বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত এই সমস্ত প্রস্তাব অনুমোদনের বিষয়ে জেলাপ্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি।
এদিকে বৃহস্পতিবার ফের বর্ধমান পৌর এলাকায় নতুন করে ৩০জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। পাশাপাশি জেলায় এদিন মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৭জন। নতুন করে কোন করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়নি। যদিও জেলা প্রশাসনের গত কয়েকদিনের করোনা সংক্রান্ত রিপোর্ট অনুযায়ী কন্টেইনমেন্ট এলাকার তথ্য নিয়ে বিভ্রান্তি শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই জেলার কন্টেইনমেন্ট এলাকা হু হু করে কমতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবারের রিপোর্টে দেখা গেছে যেখানে জেলায় সক্রিয় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩৯জন সেখানে জেলায় মোট কন্টেইনমেন্ট জোন রয়েছে মাত্র ১৩টি। এদিকে প্রশাসনের রিপোর্ট অনুযায়ী করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা প্রতিদিনই জেলায় লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েই চলেছে। এদিন অবধি জেলায় মোট করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১২২৬জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮৬০জন।

Recent Posts