বিজ্ঞাপন
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: এবার মদ চেয়ে লাগাতার ফোন খোদ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে। আর এই ঘটনায় বুধবার সকাল থেকে চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুর থানার কুলিনগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বর্ধমান শহরের কালনাগেট জামতলার বাসিন্দা সোমনাথ সিনহা। সোমনাথ বাবু জানিয়েছেন, এই ধরণের পরিস্থিতির মধ্যেও কোনোদিন তাঁকে পড়তে হতে পারে এমন ধারণা তাঁর ছিলনা।
তিনি জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতির জেরে এখন তিনিও গৃহবন্দি। স্কুলে যেতে হচ্ছে না। কিন্তু বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের খোঁজখবর নেওয়া থেকে মিড ডে মিলের খাদ্য সামগ্রী পৌঁছানো এবং একই সাথে শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের নির্দেশ ফোন মারফৎ আসছে। তিনি এও জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই শিক্ষা দপ্তর থেকে নির্দেশ এসেছে আগামী ১৬ থেকে ২৩ তারিখের মধ্যে বিদ্যালয় পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে অভিভাবকদের খবর দেওয়া এবং ছাত্রছাত্রীদের চাল,ডাল, আলু বিতরণ করতে হবে। সুতরাং সারাদিন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফোন করতে হচ্ছে এবং ধরতে হচ্ছে।
আর এরই মধ্যে বুধবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ তাঁর ফোনে এক ব্যক্তি ফোন করে মদের খোঁজ করেন। এবং তারপর থেকে লাগাতার একের পর এক বিভিন্ন কোম্পানির নানান ব্র্যান্ডের মদ চেয়ে ফোন আসতেই থাকে। তিনি জানিয়েছেন, বর্ধমানের বামচাঁদাইপুর জাতীয় সড়কের ধারে একটি মদের দোকানের নাম করেছেন অনেকেই। কেন মদের খোঁজ করে তাঁকে ফোন করা হচ্ছে জানতে চাওয়া হলে প্রত্যেকেই জানিয়েছেন, এই ফোন নম্বর তারা তাদের হোয়াটস আপ বা এস এম এস – এর মাধ্যমে পেয়েছেন।
সোমনাথ বাবু জানিয়েছেন, তিনি বুঝতে পারেননি হটাৎ কি এমন হলো যে তাঁর ফোনে এত মদ চেয়ে ফোন আসতে শুরু হলো। শেষমেষ এই বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পেতে বর্ধমান সদর থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। বিষয়টি পুলিশের গোচরে আনার জন্য সরাসরি বর্ধমান সদর থানায় চলে আসেন। তিনি জানিয়েছেন, সমস্ত বিষয় পুলিশকে জানানোর সময় থানার মধ্যেই তাঁর ফোনে ফের মদের খোঁজে ফোন আসে। এবার তিনি ফোনে কথা বলার জন্য কর্তব্যরত অফিসার কে ধরিয়ে দেন। পুলিশ ঘটনার বিষয়ে বুঝতে পেরে শক্তিগড় থানার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন সোমনাথ বাবুকে।
কারণ যে মদের দোকানের ফোন নম্বর উল্লেখ করে প্রধান শিক্ষকের নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে সেই দোকানটি শক্তিগড় থানার অধীনে পরে। এরপর তিনি শক্তিগড় থানার ওসি কে সব কিছু জানান। ওসি সব শুনে জেলা আবগারি দপ্তরের অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা জানান। ফোন নম্বর জোগাড় করে সোমনাথ বাবু এরপর সেখানেও ফোন করে ঘটনার বিষয় জানান। সোমনাথ বাবু জানিয়েছেন, পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, বর্ধমান শহর জুড়ে মদের কালোবাজারি অব্যাহত। এরই মধ্যে মদের হোম ডেলিভারী করা হচ্ছে বলে অনেক মদ ব্যবসায়ী ফোন নম্বর দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিচ্ছে। মুহূর্তে সেই নম্বর ভাইরাল হতে সময় নিচ্ছে না। আর অনেক ক্ষেত্রেই ভুল নম্বর দেওয়ায় বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে আসল ফোন নম্বরের মালিককে। যদিও মদের হোম ডেলিভারী শুরু করার বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও কোন নির্দেশিকা জারি করা হয়নি বলেই প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।