বর্ধমানে এবার ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের নজরদারি শুরু, আটক প্রায় ১২ জন

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমান জেলায় এখনও কোনো করোনা পজিটিভ রোগীর খবর নেই। প্রশাসন শনিবারই এই তথ্য সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে। কিন্তু তাই বলে সংক্রমণ ঠেকাতে নিয়মের কোনো শিথিলতা যাতে না ঘটে সেজন্য শুক্রবারই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে সমস্ত জেলাশাসকদের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। আর তারপরেই শনিবার সকাল থেকে একগুচ্ছ নির্দেশিকার পাশাপাশি  পূর্ব বর্ধমান জেলা টাস্ক ফোর্স জোর কদমে কাজ শুরু করে দিল।
এদিনই জেলাপ্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় নয় এমন জিনিসের দোকান খুলে রাখা যাবে না। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় মানুষের ঘুরে বেড়ানো যাবে না। রাস্তায় জটলা করা যাবে না। এমনকি জরুরী প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় গাড়ি বের করা যাবে না। পাশাপাশি, নির্ধারিত সময়ের বাইরে মুদিখানা, মিষ্টির দোকানও খুলে রাখা চলবে না। সবজি বাজারে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে বাধ্যতামূলকভাবে। শুধু তাই নয়, ব্যাঙ্কের পরিষেবার ক্ষেত্রেও এদিন থেকে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেটের একটি দল আরও কঠোরভাবে নজরদারী শুরু করে দিল। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এই এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেটের দলে রয়েছেন সৈকত হাজরা, ফৈয়াজ আহমেদ, দেবদুলাল পাত্র এবং বিপ্লব মণ্ডল।
শনিবার সকাল থেকেই এই এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেটের দল বর্ধমান শহরের বিভিন্ন বাজার এলাকা পরিদর্শন করেন। মাস্ক পরা বা মুখ ঢাকার ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই যে নির্দেশিকা জারী করা হয়েছে তা পালন না করার দায়ে মোট ১২জনকে এদিন বর্ধমান থানার পুলিশ আটকও করেছেন। এই প্রতিনিধি দলে থাকছেন বর্ধমান থানার আইসি পিণ্টু সাহাও। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেটের পাশাপাশি এই দলগুলিতে রয়েছেন পুলিশ ও টাস্ক ফোর্সের  সদস‌্যরাও।
টাস্ক ফোর্সে রয়েছেন কৃষি বিপণন, লিগ্যাল মেটেরোলজি, খাদ্য ও পরিবহণ দপ্তরের আধিকারিক এবং কর্মীরাও। এদিন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট তথা জেলা পরিকল্পনা আধিকারিক সৈকত হাজরা জানিয়েছেন, শনিবার সকাল থেকে তাঁরা ষ্টেশন বাজার, বাজেপ্রতাপপুর বাজার, কালনা গেট বাজার, তেঁতুলতলা বাজার প্রভৃতি বেশ কয়েকটি বাজার এলাকা ঘুরে দেখেছেন। কাঁচা বাজার থেকে মুদির দোকান সর্বত্র তাঁরা ঘুরছেন। কোথাও কোনো দামের হেরফের হচ্ছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হয়েছে। সরকারীভাবে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হওয়া সত্ত্বেও এদিন দুটি বাজার এলাকা  থেকে মাস্ক না পরার জন্য  মোট ১২জনকে আটক করা হয়েছে।
সৈকত বাবু জানিয়েছেন, এদিন তেঁতুলতলা বাজারে সামাজিক দূরত্ব না মেনে বাজার চলায় বাজার কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে। এব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তাঁরা বাজার বন্ধ করে দেবার কথাও জানিয়েছেন। সৈকতবাবু জানিয়েছেন, বাজার এলাকায় যাঁরা দাঁড়িপাল্লা বা ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র ব্যবহার করেন তাঁদের অনেকেরই রিনিউয়াল ঠিক থাকলেও কয়েকজনের তা নেই,কাগজপত্রও ঠিক না থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার পাশাপাশি তাঁদের লকডাউন ওঠার পর তা ঠিক করে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ধারাবাহিকভাবে এই নজরদারী চলবে। কোথাও কোনো কোনো অসংগতি দেখা দিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Recent Posts