ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে গণহত্যার ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় রাজ্য জুড়ে বোমা, বন্দুক ও বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন পুলিশ কে। পাশাপাশি দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করারও নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। আর মুখ্যমন্ত্রীর সেই নির্দেশের পরই জেলায় জেলায় ব্যাপক তল্লাশি অভিযান ও ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। গত তিনদিনে পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমান, জামালপুর, মেমারি, কাটোয়া সহ বেশ কয়েকটি থানা এলাকা থেকে অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র সহ ও বোমা মজুত করার অপরাধে ১২জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের কাছ থেকে ৯টি দেশি পাইপগান, ১৫ রাউন্ড গুলি ও চারটি ক্রুড বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
এরই পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় প্রতিদিন চলছে পুলিশি রুটমার্চ। খোদ পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সহ জেলা পুলিশের আধিকারিকরা বিভিন্ন থানা এলাকায় এই রুট মার্চের নেতৃত্বে থাকছেন। গতকাল মেমারি থানা এলাকার পর শনিবার আউশগ্রামে রুট মার্চ করেন পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন। অন্যদিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহ রায় রুটমার্চের নেতৃত্ব দেন ভাতার থানা এলাকায়। এছাড়াও অন্যান্য জেলার সঙ্গে এই জেলায় আসা যাওয়ার গুরুত্বপূর্ন রাস্তা গুলোতে নিয়মিত চলছে নাকা চেকিং। ফলে এককথায় বলা যেতেই পারে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর কার্যত ঘুম ছুটেছে জেলা পুলিশের। আর পুলিশের এই অতি সক্রিয়তার ফলে গত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই জেলার দুষ্কৃতীদের মধ্যে উঠেছে ত্রাহি ত্রাহি রব।
গতকাল বর্ধমান, জামালপুর, কাটোয়া থানার পুলিশের জালে দুষ্কৃতীরা ধরা পরার পর এদিন আগ্নেয়াস্ত্র সহ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করলো মেমারি থানার পুলিশ। ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ১ টি পাইপ গান ও ১ রাউন্ড গুলি। পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, ধৃতের নাম রাজু দলুই,বাড়ি মেমারি থানার অন্তর্গত দেবীপুর ডিভিসি পাড় এলাকায়। গতকাল রাতে মেমারীর নুদীপুর মোড় এলাকায় সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাঘুরি করার সময় পুলিশ রাজু কে আটক করে। তল্লাশিতে তার কাছ থেকে একটি পাইপগান ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়। ধৃতের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করে শনিবার বর্ধমান আদালতে তোলা হয়েছে। কি কারণে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ধৃত রাজু দলুই ঘোরাঘুরি করছিলো তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে মেমারী থানার পুলিশ।
অন্যদিকে গতকাল গভীর রাতে বর্ধমান শহরের কৃষ্ণপুর পশ্চিম পাড়া এলাকার একটি বাড়ি থেকে বর্ধমান থানার পুলিশ উদ্ধার করেছে ৪টি ক্রুড বোমা। এই বোমা উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সরাইটিক পঞ্চায়েত এলাকায়। বোমা গুলো নিষ্ক্রিয় করার জন্য ডাকা হয় বোম স্কোয়াডের অফিসারদের। এই ঘটনায় বাড়ি মালিক ফিরোজুদ্দিন মল্লিক নামে এক ব্যক্তি কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যদিও ধৃতের স্ত্রী শাকিলা বিবি অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় কিছু জমির দালালরা চক্রান্ত করে ফাঁসিয়েছে ফিরোজউদ্দিন কে। তাদের দাবী ওয়াকাফের কিছু সম্পত্তি রয়েছে এই পরিবারের কাছে, তা দখল করার জন্য স্থানীয় কিছু জমির দালাল ষড়যন্ত্র করেছে।