ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে প্রতিদিনই এই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ফিরছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও ইতিমধ্যে ট্রেন, বাস ও অন্যান্য যানে ফিরেছেন প্রায় ১২হাজারের কাছাকাছি শ্রমিক। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এখনো ৮ থেকে ১০হাজার এই জেলার শ্রমিক ফিরে আসবেন। আর এই সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের সরাসরি বাড়ি না পাঠিয়ে প্রশাসন স্থানীয় ভাবে কোয়ারইন্টাইন সেন্টারে থাকার ব্যবস্থা করেছে। তাদের নমুনা পরীক্ষা সংগ্রহ করা থেকে তাদের রক্ষনাবেক্ষনের বন্দোবস্ত করছে।
কিন্তু এরই মধ্যে কিছু কিছু জায়গায় শাসকদল ও স্থানীয় ক্লাবের উদ্যোগেও পরিযায়ী শ্রমিকদের চার বেলা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পূর্ব বর্ধমান জেলার বৈকুণ্ঠপুর ২ অঞ্চলের শ্রীরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এই মুহূর্তে বাইরের রাজ্য থেকে ফিরে আসা ১৭জন শ্রমিক রয়েছেন। সোমবার থেকে এই কোয়ারইন্টাইন সেন্টারে সকাল, দুপুর, বিকেল ও রাতে খাবার দেওয়ার কর্মসূচি শুরু করলো সর্বমিলন সংঘ। এদিন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধারার উপস্থিতিতে এই কর্মসূচির সূচনা হয়। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সহ সদস্য বৃন্দ। উপস্থিত ছিলেন সর্বমিলন সংঘের সম্পাদক বিশ্বজিৎ মন্ডল।
সভাধিপতি এদিন জানিয়েছেন, প্রশাসন থেকে এই অঞ্চলের প্রায় ৮টি গ্রামের বাসিন্দা যারা বাইরের রাজ্য থেকে ফিরেছেন তাদের শ্রীরামপুর হাই স্কুলে হোম কোয়ারইন্টাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে প্রত্যেকের বাড়ি থেকে খাবার দিয়ে যেতে পারবেন বলেও বলা হয়েছে। তবু স্থানীয় ক্লাব এর উদ্যোগে এই পরিযায়ী শ্রমিকদের চারবেলা খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। ক্লাবের এই সমাজসেবামূলক উদ্যোগ সত্যি প্রশংসনীয়। তিনি জানান, এই শ্রমিকদের দেখাশোনা করা এবং স্কুল কে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখারও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অন্যদিকে, বিশ্বজিৎ মন্ডল জানিয়েছেন, টানা লকডাউনের জেরে পরিযায়ী শ্রমিকরা যেমন একদিকে কাজ হারিয়েছেন, পাশাপাশি তাদের পরিবারও অসহায় অবস্থায় পড়েছেন। ফলে যখন নিজেদেরই অন্নসংস্থান করতে হিমশিম অবস্থা তখন তাদের পরিবারের মানুষটি কে টানা ১৪দিন দুবেলা খাবার পৌঁছে দেওয়া কষ্টসাধ্য। আর তাই সর্বমিলন সংঘের উদ্যোগে আগামী যেকদিন এই স্কুলে পরিযায়ী শ্রমিকরা কোয়ারইন্টাইন থাকবেন তাদের চারবেলা খাবার পৌঁছে দেবার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেওয়া হয়েছে।
বিশ্বজিৎ বাবু জানিয়েছেন, লকডাউনের শুরু থেকেই তাদের ক্লাব গোটা অঞ্চল জুড়ে দুঃস্থ, অসহায় মানুষদের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী, শাক সবজি সহ রান্না করা খাবার প্রতিদিন সরবরাহ করেছে। এমনকি বিধ্বংসী আমফুনের আগেও তাঁরা একইভাবে মানুষের কাছে সাহায্য পৌঁছে দিয়েছেন।