বর্ধমানে তৃণমূলের ভাঙন শুরু, কাজ থেকে অব্যাহতি চেয়ে দলের এক প্রবীণ নেতা চিঠি পাঠালেন রাজ্য নেতৃত্বকে, জোর চাঞ্চল্য

Souris  Dey

Souris Dey

বিজ্ঞাপন

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই পূর্ব বর্ধমান জেলায় শাসকদলের অভ্যন্তরে দলেরই একাংশের অসন্তোষ ক্রমশ চিন্তার ভাঁজ ফেলতে শুরু করেছে। দিকে দিকে প্রার্থী নিয়ে একদিকে যেমন অসন্তোষ ক্রমশই চওড়া হচ্ছে তেমনি তৃণমূল বিরোধী প্রার্থীদের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে দলের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ফলে দলের ঘোষিত প্রার্থীরা প্রচারের কাজ সারার ফাঁকেই রীতিমত দলের এই অন্তর্ঘাতের প্রশ্নে ক্রমশই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন।

এবার দলীয় প্রার্থীকে পছন্দ নয় – এই বার্তা দিয়ে শুরু হয়ে গেল তৃণমূল থেকেই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত। আর পূর্ব বর্ধমান জেলার রীতিমত হট সিট বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্র থেকেই শুরু হয়ে গেল এই ক্ষোভের বর্হিপ্রকাশ। মঙ্গলবারই পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবীণ এক জেলা সহ সভাপতির দায়িত্বে থাকা নেতা দলের উর্ধতন নেতৃত্বের কাছে তাঁর দল থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত লিখিত আকারে পাঠিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। 

যদিও বিষয়টি অস্বীকার না করেও এব্যাপারে এখনই মুখ খুলতে চাননি ওই প্রবীণ পোড় খাওয়া তৃণমূল নেতা। দলীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, ওই প্রবীণ নেতাই কার্যত রাস্তা দেখিয়ে দিলেন গোটা জেলায়। দলের নেতা-কর্মীদের ভাবাবেগকে পাত্তা না দিয়ে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করার ঘটনায় জেলার ১৬টি বিধানসভা থেকেই কমবেশী ক্ষোভের আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। চলতি সপ্তাহেই কেবলমাত্র বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা কমিটির একাধিক নেতা এই একই পথ অনুসরণ করতে চলেছেন বলে দলের একাংশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা মঙ্গলবার জানিয়েছেন, দলের প্রার্থী নির্বাচন ঠিক হয়নি। আর এই অবস্থায় শুধু শুধু দলের পদ আঁকড়ে থেকে লাভ নেই। তাই তাঁরা সরে দাঁড়াতে চান। যদিও মঙ্গলবার কেবলমাত্র একজনই এই লিখিত পত্র তৃণমূলের উর্ধতন নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়েছেন। কিন্তু ক্রমশই এবার সেই পত্রের সংখ্যা বাড়বে বলেই দাবী ওই নেতার। 

উল্লেখ্য বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে বর্ধমান পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলার লড়াকু নেতা খোকন দাসকে প্রার্থী করার পর থেকেই দলের একাংশের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। যদিও দক্ষিণপন্থী দলে এটাই স্বাভাবিক বলেই দাবী করা হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার শহরের গুরুত্বপূর্ণ ওই প্রবীণ নেতার এই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তকে ঘিরে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে শহর তথা বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা জুড়ে। উল্লেখ্য, প্রার্থী ঘোষণার পর মুহূর্ত থেকেই খোকন দাস একদিকে যেমন প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে প্রচার করছেন। তেমনি দলের এই কোঁদল মেটাতে প্রতিদিনই তিনি কোনো না কোনো বিক্ষুব্ধ নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কথা বলে চলেছেন।

সম্প্রতি জেলার যুব সভাপতি রাসবিহারী হালদার, জেলার সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্ত, বর্ধমান পৌরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকর মহ: শাহিদুল্লাহ সহ মঙ্গলবারও তিনি বর্ধমান শহরের ৬নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলার মহম্মদ সেলিমের সঙ্গেও দেখা করেন। এরই মাঝে শহর সভাপতি অরূপ দাসের সঙ্গে দেখা করার জন্য ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি খোকনের পাশেই আছে বলে জানিয়েছেন। এদিকে মঙ্গলবার সেলিম ও খোকনের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনাও হয়। এরপরই সেলিম কে নিয়ে ভিক্ট্রি চিহ্ন দেখিয়ে ছবি পোষ্ট করা হয়। সোমবারও আর এক প্রাক্তন কাউন্সিলার সনত বক্সীকে নিয়ে মিছিলও করেন খোকন দাস। খোকন দাসের অনুগামীরা জানিয়েছেন, যতদিন যাবে ততই এই সমস্ত বিক্ষুব্ধরা একে একে খোকন দাসের প্রচারে অংশ নেবেন। আর বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে বিপুল ভোটে জয়ী হবেন খোকন দাসই – দাবী তাঁর অনুগামীদের।

আরো পড়ুন