ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: রাতের অন্ধকারে সমাজবিরোধীদের আখড়ায় পরিণত হচ্ছে প্রাথমিক স্কুল চত্বর। প্রতিদিন সকালে স্কুলের যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরে থাকছে মদের বোতল, প্লাস্টিক থেকে নোংরা কাপড়। এমনকি দুষ্কৃতীরা স্কুলের মধ্যেই থুতু ফেলে, মলত্যাগ করে অপরিচ্ছন্ন করে দিচ্ছে শিশুদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে। বিরোধিতা করে ইতিমধ্যেই স্থানীয় এক বয়স্ক ব্যক্তি বেধড়ক মার খেয়েছেন এই সমস্ত দুষ্কৃতীদের হাতে। তাঁর চশমাও ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। স্কুলের শিক্ষিকাদের অভিযোগ, প্রশাসন থেকে পুলিশ সকলকে এই বিষয়ে জানানো হয়েছিল। বেশ কয়েকমাস আগে সকালের দিকে পুলিশ স্কুলে এসে দেখেও গিয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি। আর এখন এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে যে অভিভাবকরা শিশুদের জন্য বরাদ্দ সরকারি মিড ডে মিলের খাদ্য সামগ্রী সংগ্রহ করতে এসে স্কুল চত্বরে দাঁড়াবার জায়গা পাচ্ছেন না। এতটাই অপরিস্কার ও অপরিচ্ছন্ন করে রাখছে এই সমস্ত সমাজবিরোধীরা। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় ক্ষোভ বাড়ছে এলাকায়।
বর্ধমান শহরের ৪নং ওয়ার্ডের ট্রাফিক কলোনি এলাকার রেলওয়ে মহিলা সমিতি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এই ধরণের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে এই স্কুলের ২৯১জন ছাত্রছাত্রীদের বেশিরভাগ অভিভাবকের মধ্যেই। এঁদেরই মধ্যে এক অভিভাবক মমতাজ বিবি অভিযোগ করেছেন, এখানে ছোট ছোট বাচ্চারা পড়াশুনা করতে আসে। শিশুদের লেখাপড়ার জন্য সুষ্ঠ পরিবেশকে নষ্ট করে দিচ্ছে কিছু অসামাজিক লোকজন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও এই অসামাজিক কাজকর্ম বন্ধে সদর্থক ভূমিকা পালন করছেন না। অবিলম্বে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে দিতে সকলের এগিয়ে আসা উচিত। পাশপাশি প্রশাসনেরও উচিত এই অসামাজিক কাজকর্ম বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি ইফতিকার আহমেদ (পাপ্পু ) এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, এই স্কুলের সমস্যা সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল। এর আগে যখন স্কুল চালু ছিল তখন বেশকয়েকবার এইসমস্ত বাজে কাজ রুখতে রাতে অভিযান চালিয়েছেন। বন্ধও হয়েছিল। তার অভিযোগ ওই স্কুলের সামনে একটি এনজিও রয়েছে। যাদের কাজ সমাজসেবা করা। কিন্তু তার কাছে এই সংস্থার বিরুদ্ধেই স্থানীয়রা অভিযোগ জানাচ্ছেন। তাদের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই প্রশাসনকে এব্যাপারে জানিয়ে ব্যবস্থা গ্রহনের আর্জি জানানো হবে।
পাশাপাশি ৪নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলার মহ: আলী জানিয়েছেন, রাতের অন্ধকারে কারা এই সমস্ত অসামাজিক কাজ করছে প্রতিদিন তা নজরদারি করা সম্ভব নয়। তবে রাতে পুলিশি টহল বাড়লে এই ধরণের কাজকর্ম বন্ধ হতে পারে। তিনি জানিয়েছেন, এই ধরণের ঘটনার কথা তিনি শুনেছেন, এই ব্যাপারে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।