বর্ধমানে বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয়ে আচমকা পুলিশী হানা, প্রতিবাদে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ, উত্তেজনা

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয়ে আচমকাই পুলিশী হানাকে ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠল বর্ধমানের কালনা রোডের বনমসজিদ এলাকা। বিনা নোটিশে পুলিশী এই হানার প্রতিবাদে প্রায় ঘণ্টাখানেক রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি কর্মীরা। গোটা ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের কাছে পুলিশী জুলুমের প্রতিবাদে অভিযোগ জানিয়েছে বিজেপি। এদিন বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক প্রবাল রায় জানিয়েছেন, বর্ধমান উত্তর বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী রাধাকান্ত রায়ের নির্বাচনী কার্য্যালয় করা হয়েছে বনমসজিদ এলাকার সুভাষ দে-র বাড়িতে। এদিন বর্ধমান উত্তর বিধানসভার ৫টি মণ্ডলের কার্যকর্তাদের নিয়ে নির্বাচনী বৈঠক ডাকা হয়েছিল। 

প্রবালবাবু জানিয়েছেন, যথারীতি এদিন সকাল থেকেই সেই বৈঠক চলাকালীন দুপুর প্রায় ১টা নাগাদ আচমকাই এই বাড়িটিকে ঘিরে ফেলে বিশাল পুলিশ বাহিনী। এমনকি তাঁরা জোর করে ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে। আচমকা পুলিশী এই হানায় হকচকিয়ে যান বিজেপি কর্মীরা। প্রবাল রায় জানিয়েছেন, বারবার পুলিশী হানার কারণ জানতে চাইলেও পুলিশ কোনো কিছুই জানাতে চায়নি। এমনকি তাঁদের কাছে ছিল না কোনো সার্চ ওয়ারেণ্ট বা এরেষ্ট ওয়ারেণ্ট। এদিন বাড়ির মালিক সুভাষ দে জানিয়েছেন, দু মাসের জন্য বিজেপিকে এই বাড়ির একাংশ ভাড়া দেওয়া হয়েছে নির্বাচনী কার্যালয় করার জন্য। এদিন যখন বৈঠক চলছিল সেই সময় তিনিও বৈঠকে হাজির ছিলেন। কিন্তু পুলিশ কোনো বৈধ কারণ বা বৈধ কাগজ দেখাতে পারেনি। এমনকি আদপেই তাঁরা পুলিশ কর্মী নাকি পুলিশের পোশাক পরা তৃণমূলী গুণ্ডা তাও এদিন তাঁরা বুঝে উঠতে পারেননি।

 তিনি অভিযোগ করেছেন, এদিন যে পুলিশ কর্মীরা এই হানাদারীতে আসেন তাঁদের অনেকেরই ছিল না নেমপ্লেট। যা সম্পূর্ণ অবৈধ। স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের সন্দেহ তৃণমূলের অঙ্গুলি হেলনেই এদিন পুলিশ এই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হানাদারী চালাতে এসেছিল। এদিকে, পুলিশের এই অভিযানের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিজেপির কর্মীরা বর্ধমান কালনা রোড অবরোধ করে। টায়ার জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। এদিন পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, সম্প্রতি উত্তর বিধানসভার অন্তর্গত পালিতপুর গ্রামে বিজেপি তৃণমূল সংঘর্ষের ঘটনায় পলাতক দুই মূল অভিযুক্তকে ধরতে এদিন অভিযান চালানো হয়।

 এব‌্যাপারে বিজেপির সদর জেলা সম্পাদক শ্যামল রায় জানিয়েছেন, তৃণমূলের কথায় পুলিশ ভোটের আগে বিজেপির গায়ে কাদা ছেটানোর চেষ্টা করছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, পুলিশকে কাজে লাগিয়ে ভোটের আগে শাসকদল তৃণমূলের নেতারা অশান্তি সৃষ্টি করার পরিকল্পনা করেছে। বিজেপি শক্ত হাতে এই ঘটনার মোকাবিলা করবে। শ্যামল রায় অভিযোগ করেছেন, এদিন যে বৈঠক চলছিল তাতে অংশগ্রহণকারী কোনো কার্যকর্তাদের নামেই কোনো অভিযোগ নেই। স্বাভাবিকভাবেই পুলিশ এদিন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই এই কাজ করেছে। 

শ্যামলবাবু জানিয়েছেন, সম্প্রতি রসিকপুরে বোমা বিস্ফোরণে এক শিশুর মৃত্যু হয়, একজন শিশু গুরুতর জখম হয়। এই ঘটনায় পুলিশ একজনকে দায়সারা গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু গোটা শহরের জায়গায় জায়গায় বোমা মজুদ করে রেখেছে তৃণমূল। সেখানে কোনো হানাদারি চলছে না। পুলিশের এই তৃণমূল ভজনার বিরুদ্ধে তাঁরা নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছেন।