বিজ্ঞাপন
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: তিনিই উদ্ধারকর্তা। তিনিই সব। কলিতে কৃষ্ণই সার। এসব তত্ত্ব কথা হলেও, বার্ধক্যে প্রবেশ করতেই এটাই হয়ে ওঠে একমাত্র ভরসার জায়গা। কমবেশী প্রায় সকলেরই জীবনের শেষ বয়সে এসে মানুষের মন চঞ্চল হয়ে ওঠে জীবনের বাকি কটা দিন তাঁরই পায়ে সমর্পণ করতে। ঠিক তেমনই কাঞ্চননগরের নবনীড় বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের আকুতিও ছিল ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ এর একটি পুর্ণাবয়ব মুর্তির।
এই বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের এখন পরিবার বলতে প্রায় সমবয়সী অচেনা কয়েকজন ষাট কিম্বা সত্তোরোর্দ্ধ বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। চারদেওয়ালের মধ্যে সময় কাটানোর জন্য রয়েছে ঠাকুর, দেবতার ছবি। গাছ,গাছালি ঘেরা ছোট একটা বাগান। সামনে খোলা বিরাট মাঠ আর প্রাচীন ঐতিহাসিক কালি মন্দির। বৃদ্ধাশ্রম কতৃপক্ষের কাছে তাই আবাসিকদের আবদার ছিল – যদি একটা শ্রী শ্রী ঠাকুর পরমহংস রামকৃষ্ণ দেবের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে দেওয়া হয়। আর সেই পিতৃ মাতৃ তুল্য মানুষগুলোর আবদার শিরোধার্য করে তৈরি করে দেওয়া হল ঠাকুর রামকৃষ্ণ দেবের পূর্ণায়ব মূর্তি।
সম্প্রতি পুণ্য রথযাত্রা উপলক্ষে বর্ধমানের কাঞ্চননগরের কঙ্কালেশ্বরী কালীবাড়ির পাশে নবনীড় বৃদ্ধাশ্রমে মূর্তিটি স্থাপন করেছেন এই বৃদ্ধাশ্রমের রূপকার তথা সমাজসেবী খোকন দাস। বর্ধমানের বাজেপ্রতাপপুর রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী অজ্ঞেয়ানন্দ মহারাজের হাত দিয়ে এই মূর্তিটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। প্লাস্টার অফ প্যারিস এর এই মূর্তিটি তৈরি করেছেন নীলপুরের মৃৎশিল্পী মঙ্গল পাল।
খোকন দাস জানিয়েছেন, এই আশ্রমের আবাসিকদের অনুরোধে এই মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই রথতলা এলাকায় বাংলা চলচ্চিত্রের প্রবাদ প্রতিম শিল্পী উত্তম কুমারের একটি পূর্ণায়ব মূর্তি স্থাপন করা হবে। তিনি জানিয়েছেন, একশ শয্যা বিশিষ্ট নবনীড় বৃদ্ধাশ্রমে এই মুহূর্তে আবাসিকদের সংখ্যা ৪৪জন।
ইতিমধ্যে ১৫জন নতুন বয়স্ক মানুষ এখানে থাকার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। খোকন দাস জানিয়েছেন, নিজের পরিবার ছেড়ে এসে যাঁরা এখানে থাকছেন তাঁদের যাতে কোনো অসুবিধা না হয় তার জন্য সর্বক্ষণ নজরদারি রাখা হয়। খাওয়া দাওয়া থেকে চিকিৎসা পরিষেবা সমস্ত কিছু খেয়াল রাখার জন্য সর্বক্ষণের দুজন কর্মী এই আশ্রমে কর্মরত আছেন।