ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: বেহাল গ্রামের রাস্তা মেরামতের দাবি দীর্ঘদিনের। প্রশাসনের সমস্ত স্তরে জানিয়েও কোনো সুরাহা পায়নি গ্রামবাসীরা। এবার বর্ষা আসার আগেই ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙলো গ্রামবাসীদের। মঙ্গলবার রীতিমত রাস্তা তৈরীর দাবিতে কয়েকশো আদিবাসি তীরধনুক, লাঠি, দা নিয়ে বর্ধমান ১ব্লকের বন্ডুল ১ গ্রাম পঞ্চায়েত ঘেরাও করেন। পঞ্চায়েতে থাকা সমস্ত কর্মীদের বের করে দিয়ে অফিসে তালা দিয়ে দেন গ্রামবাসীরা। তাদের দাবি প্রশাসন কে নির্দিষ্ট করে লিখিতভাবে জানাতে হবে কবে এই রাস্তার কাজ শুরু করা হবে। যে পঞ্চায়েতে মানুষের জন্য কাজ হয়না সেই পঞ্চায়েত অফিস ঘটা করে খুলে রাখারও দরকার নেই। এদিন সকাল সাড়ে দশটা থেকে গ্রামবাসীরা এই বিক্ষোভ শুরু করে অফিসের সব কাজ বন্ধ করে দিয়ে।
বিজ্ঞাপন
গ্রামবাসীরা এদিন অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরেই বর্ধমান ১ ব্লকের বন্ডুল আদিবাসি পাড়ার বাসিন্দারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে পঞ্চায়েত, বিডিও অফিস এমনকি জেলা পরিষদেও তাদের বেহাল রাস্তা সারাইয়ের দাবিতে একাধিকবার দরবার করেছেন। কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারনে এই এলাকার রাস্তার কাজ কোনভাবেই করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ কয়েকশো আদিবাসী এলাকাবাসীর। তাদের দাবি, প্রশাসন কে নির্দিষ্ট করে লিখিতভাবে জানাতে হবে কবে এই রাস্তার কাজ শুরু করা হবে। যে পঞ্চায়েতে মানুষের জন্য কাজ হয়না সেই পঞ্চায়েত খুলে রাখারও দরকার নেই। আর তাই এদিন বেলা সাড়ে দশটা থেকে এই বিক্ষোভ শুরু হয় অফিস বন্ধ রেখে।
বিক্ষোভের খবর পেয়ে দেওয়ানদীঘি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষোভকারী গ্রামবাসীদের বোঝবার চেষ্টা করেও বিফল হয়ে। পঞ্চায়েত অফিসের তালা খোলেননি বিক্ষোভকারীরা। এলাকার আদিবাসি যুবক রবিলাল হাঁসদা বলেন, ‘আমরা আদিবাসি বলে কি মানুষ নই। সামান্য বৃষ্টি নামলেই রাস্তা দিয়ে হাঁটাচলা বন্ধ হয়ে যায়। ছ’বছরেরও বেশী সময় ধরে আমরা প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে এই আবেদন জানিয়ে আসছি। আশ্বাস দেওয়া ছাড়া কিছুই করেনি তারা। পঞ্চায়েতও কোন দায়িত্ব নেয়নি। যে অফিসে আমাদের মতন গরিবদের জন্য কোন কাজ হয়না, সে অফিস খুলে রেখেই বা কি লাভ। নির্দিষ্ট করে লিখিত প্রতিশ্রুতি না দিলে আমরা কোনভাবেই এই বিক্ষোভ তুলব না।’
প্রায় সাড়ে তিনঘন্টা বিক্ষোভ দেখানোর পরে বর্ধমান ১ ব্লকের বিডিও মৃণালকান্তি বিশ্বাস ও দেওয়ানদীঘি থানার ওসি উত্তাল সামন্ত এসে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। বিডিও আশ্বাস দেবার পরে শর্তসাপেক্ষে পঞ্চায়েত অফিসের তালা খুলে দেন আদিবাসি গ্রামবাসীরা। বর্ধমান ১ ব্লকের বিডিও মৃণালকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘আদিবাসি পাড়ার যে রাস্তা নিয়ে সমস্যা তৈরী হয়েছে সে বিষয়ে আমরা এর আগে অনেকটাই এগিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, ‘একশো দিনের কাজে প্রকল্পে অনেকটা রাস্তার কাজ হয়েও গিয়েছে। যে অংশের কাজ আটকে রয়েছে তার কারন জমি জট। যেখান দিয়ে রাস্তা তৈরীর কথা গ্রামবাসীরা বলছেন সেটা ব্যাক্তিগত মালিকাধীন। কারুর ব্যক্তিগত সম্পত্তির উপরে তার অনুমতি ছাড়া রাস্তা আমরা তৈরী করতে পারিনা। আগামী ৬ তারিখে গ্রামবাসী ও জমির মালিকদের নিয়ে গ্রামেই একটা মিটিংয়ে বসার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তারপরেও কোন সমাধান সূত্র না বের হলে জেলাশাসকের দারস্থ হবো। তিনি যা নির্দেশ দেবেন, সেই মতন কাজ হবে পরবর্তী পর্যায়ে।’