ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: ভোটের মুখে ফের বিস্ফোরক বর্ধমান জেলা পরিষদের অন্যতম সদস্য নুরুল হাসান। শুক্রবার তিনি সোস্যাল মিডিয়ায় একটি লম্বা পোষ্ট করে তাঁর ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। আর সেই পোষ্টকে ঘিরেই শুরু হয়েছে ভোটের মুখে ব্যাপক আলোড়ন। দলের দীর্ঘদিনের ছাত্র যুব নেতার এহেন ক্ষোভের অভিমুখ খোদ দলেরই একাংশ দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতার বিরুদ্ধে। পাশপাশি বর্ধমান উত্তর বিধানসভার দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নুরুল হাসান।
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, বর্ধমান উত্তর বিধানসভার অন্তর্গত জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য নুরুল হাসান। সম্প্রতি তিনি জানান, তাঁকে এবারের বর্ধমান উত্তরের তৃণমূল প্রার্থী নিশীথ মালিক ডাকেন নি। তাঁকে প্রচার কমিটিতেও রাখা হয়নি। সোস্যাল মিডিয়ায় করা পোষ্টে তিনি জানিয়েছেন, সিপিএম আমলে তিনি বহুবার নানাভাবে অত্যাচারিত হয়েছেন। প্রচুর রক্ত ঝরিয়ে ছাত্র পরিষদকে সংগঠিত করেছিলেন। এসএফআই-এর বিরুদ্ধে তিনি কঠিন লড়াই করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে কলেজে কলেজে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার জন্য তাকে লাগাতার খেসারত দিতে হয়েছে। অত্যাচারিত হতে হয়েছে, তবুও তিনি তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়ার কথা ভাবেন নি। কিন্তু তারপর গত ১০ বছরে লাগাতার তাঁর ওপর মানষিক নির্যাতন চালানো হয়েছে।
সোস্যাল মিডিয়ায় নুরুল হাসান লিখেছেন গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্লক সভাপতি ৪ থেকে ৬ লক্ষ টাকা করে নিয়ে টিকিট দিয়েছেন। তার সব প্রমাণ রাজ্য থেকে জেলা নেতাদের দিয়েছেন তিনি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। নুরুল লিখেছেন, তিনি জেলা পরিষদ আসনে টিকিট পাবার পর যাতে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে না পারেন সেজন্য পুলিশ লেলিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে বলা হয়েছিল তৃণমূলের এক নেতার নির্দেশে। কোনোরকমে তিনি পালিয়ে যান। তাঁকে একটি খুনের ঘটনায় এক নম্বর আসামী করা হয় তাঁকে ফাঁসানোর জন্য। এমনকি তিনি জেলা পরিষদ আসনে জয়ী হবার পর রাজ্যের এক নেতার নির্দেশে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগের কোনো সারবত্তা না থাকায় তিনি পার পান।
নুরুল লিখেছেন বর্ধমান উত্তর বিধানসভার ১নং ব্লকে ৩০ শতাংশ মুসলিম। অথচ নির্বাচনের ব্লক কমিটিতে একজন মুসলিমকেও রাখা হয়নি। দলের নির্দেশানুসারে সমস্ত জেলাপরিষদ সদস্যকে এই কমিটিতে রাখা বাধ্যতামূলক, কিন্তু কেবলমাত্র তাঁকেই রাখা হয়নি। নুরুল লিখেছেন – এরপরে যদি তিনি এই তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে দেন তাহলে তাঁকে কি বলা হবে? গদ্দার না মির্জাফর ? যদিও নুরুল সাফ জানিয়েছেন, তিনি তৃণমূল ছাড়ছেন না। তৃণমূলে থেকেই লড়াই করবেন।
এদিকে, নরুল হাসানের এই সোস্যাল মিডিয়ার পোষ্টকে ঘিরে গোটা জেলা জুড়েই শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোড়ন। অন্যদিকে, বিজেপি এখন নুরুলের এই পোষ্টকেই নির্বাচনী প্রচারের হাতিয়ার করার পরিকল্পনা করতে শুরু করেছে। মোটকথা, দুয়ারে ভোট, আর ঠিক তার মুখেই খোদ দলের দায়িত্বপূর্ণ এক নেতার সোশ্যাল মিডিয়াতে দলবিরোধী লিখিত বক্তব্যকে ঘিরে চরম বিড়ম্বনায় জেলা তৃণমূল বলে দলেরই একাংশের মত।