বর্ধমানে রমনা বাগান ফরেস্ট থেকে চিতা বাঘের সদ্যজাত শাবক উধাও! চাঞ্চল্য

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: জন্মের পর ৮দিন পেরোতে না পেরোতেই উধাও হয়ে গেলো বর্ধমান রমনা বাগান জুলজিক্যাল পার্ক থেকে চিতা বাঘের শাবক। আর এই রহস্যময় ঘটনাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে তীব্র আলোড়ন। যদিও জেলা বনাধিকারিক দেবাশীষ শর্মা জানিয়েছেন, আচমকাই মা চিতা বাঘের কাছে সদ্যজাত শাবক কে দেখতে না পেয়ে প্রাথমিকভাবে খোঁজাখুঁজির পর সন্দেহ করা হয়েছিল কোনোভাবে শাবকটিকে খাঁচা থেকে নিয়ে পালিয়েছে কিনা। কিন্তু বাঘের এনক্লোজারের বাইরে থেকে রমনা বাগানের বিভিন্ন জায়গার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে বোঝা গেছে শাবকটিকে অন্তত কেউ ভিতর থেকে বের করে নিয়ে যায়নি। তবে ফরেস্টের পশু চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনার পর মা চিতা বাঘের মলের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে মলের মধ্যে বেশ কিছু লোম এবং ছোট হাড় রয়েছে। এর থেকে সন্দেহ করা হচ্ছে মা চিতাই তার শাবককে খেয়ে নিয়েছে।

 যদিও দেবাশীষ বাবু জানিয়েছেন, এরপরও শাবকের উধাও হয়ে যাওয়ার কারণ সঠিক ভাবে জানার জন্য মা চিতার মল ডিএনএ টেস্টের জন্য কলকাতা পাঠানো হচ্ছে। আর সেই রিপোর্ট আসলেই জানা যাবে সদ্য জন্ম নেওয়া মাত্র ৮ দিন বয়সের চিতা শাবক কোথায় গেল। তবে তিনি জানিয়েছেন, পারিপার্শ্বিক সব দিক খতিয়ে দেখে প্রথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে মা চিতাই তার শাবককে খেয়ে ফেলেছে। উল্লেখ্য গত ১২সেপ্টেম্বর রমনা বাগানের মুখ্য আকর্ষণ চিতা বাঘ কালী একটি শাবকের জন্ম দেয়। পুরুষ চিতা ধ্রুবকে এরপর সরিয়ে দেওয়া হয় অন্য খাঁচায়। বনদপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছিল, মা চিতা কালী ও তার শাবক দুজনেই সুস্থ আছে। ব্যাঘ্র শাবক জন্ম হওয়ায় আপামর পশুপ্রেমীদের মধ্যেও দেখা গিয়েছিল খুশির হওয়া। কিন্তু জন্মের মাত্র ৮ দিন পর আচমকাই বাঘের বাচ্চা খোদ এনক্লোজারের মধ্যে থেকে গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনায় রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। 

অভিযোগ উঠেছে, ব্যাঘ্র শাবককে মোটা টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। আবার খোদ রমনা বাগান ফরেস্টের কর্মীদের একাংশ সূত্রে জানা গেছে, বাচ্চাটিকে নাকি মা চিতাই খেয়ে নিয়েছে। ফলে বাঘের বাচ্চা উধাও হয়ে যাওয়া নিয়ে রহস্য আরও দানা বেঁধেছে। অন্যদিকে চিতা শাবক উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনার পিছনে বনদপ্তরেরই কিছু কর্মী যুক্ত থাকতে পারে বলেও খোদ কর্মীদের একাংশ মনে করছেন।

কারণ বেশ কয়েকবছর আগেও এই রমনা বাগান ফরেস্ট থেকেই একটি বিরল প্রজাতির পেঁচা উধাও হয়ে গিয়েছিল। সেই সময় অভিযোগ উঠেছিল কয়েক লক্ষ টাকার বিনিময়ে চুরি করে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল পেঁচাটিকে। পরে বনদপ্তরের তৎপরতায় উদ্ধারও করা হয়েছিল পেঁচা টিকে। তবে চিতা শাবক কে তার মা আদৌ খেয়ে নিয়েছে নাকি শাবক টিকে চুরি করে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে সে ব্যাপারে খোদ জেলা বনবিভাগ তদন্ত শুরু করেছে।

Recent Posts