---Advertisement---

বর্ধমানে সবুজ মাটি সরিয়ে তলায় চাপা পড়া লাল মাটি খুঁড়ে বার করার মরিয়া চেষ্টা বামপ্রার্থী পৃথার

Souris Dey

Published

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: ‘আমি আপনাদের কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে পারব না। এটা করে দেবো, ওটা করে দেবো বলতেও পারব না। প্রতিশ্রুতি কেবল একটাই দিতে পারি, যতদিন বাঁচব ততদিন আমার হাতে ধরা এই লালঝাণ্ডা হাত আর কাঁধেই থাকবে। কোনোদিন নামবে না। জয়ী হলে আপনাদের সমস্যা নিজের সমস্যা মনে করে যতদূর যেতে হয় যাবো।’ বক্তা বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী পৃথা তা। শনিবার সকালে বর্ধমান শহরের ১৩নং ওয়ার্ডে নির্বাচনে প্রচারে গিয়ে এভাবেই ভোটারদের কাছে নিজের অবস্থান তুলে ধরলেন এই তরুণী। কোনো পোশাকী কথা নয়, নয় মিথ্যা প্রতিশ্রুতির ফানুস তুলে ধরার তাগিদ। বরং একেবারে ঘরোয়া কথাবার্তার মতই নিজের বক্তব্য তুলে ধরে চষে বেড়াচ্ছেন বর্ধমান দক্ষিণ কেন্দ্রের মাটি। 

বিজ্ঞাপন

প্রায় ১০ বছর আগে বর্ধমানের এই মাটিতে চাপা পড়ে গেছে লাল মাটি। লালমাটির বদলে তার ওপরে চেপেছে সবুজ মাটি। পৃথা চষে বেড়াচ্ছেন এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে। খুঁড়ে বের করার চেষ্টা করছেন সেই লাল মাটিকে। কতটা সফল হলেন তা ২ মে বলবে। তবুও হাল ফেরাতে বদ্ধপরিকর পৃথা। এদিন সঙ্গী ছিলেন দুঁদে বামনেতা, প্রাক্তন জেলা সম্পাদক অমল হালদারও। পৃথার ঝকঝকে উপস্থাপনায় তাঁর মুখেও চওড়া হাসি। শনিবাসরীয় প্রচারে বেড়িয়ে পৃথা ভোটারদের বলেছেন, কাকে ভোট দেবেন সেটা আপনার অধিকার। কিন্তু মনে রাখবেন ইভিএমের বোতামটা তৃণমূলের কোনো দাদা যেন টিপে না দেন। সেটা টেপার দায়িত্ব এবং অধিকার আপনাদেরই। পৃথা বলেছেন, একটা বালি কারবারী এই কেন্দ্রে দাঁড়িয়েছেন। তিনি ভোটারদের হাতে ৫০০ টাকার নোট গুঁজে দিচ্ছেন। কিন্তু মনে রাখবেন, তিনি এই ৫০০ টাকার বদলে অনেক টাকা কামিয়েছেন। তাই ওই টাকা নেবেন না। ভোট কাকে দেবেন সেটা আপনাদের বিষয়। কিন্তু মনে রাখবেন, কোনো তোলাবাজ, সারদা, নারদার চিটিংবাজদের হাতে বর্ধমানকে তুলে দেবেন না। 

উল্লেখ্য, কদিন আগেই বর্ধমানের রসিকপুরে বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে এক সরল নিষ্পাপ শিশুর। তার দায় কার। কারা রেখেছিল বোমা – এখনও সেই তদন্ত শেষ করতে পারেনি পুলিশ। প্রকাশ্যে আসেনি কার দায় এই ঘটনার। এই ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করলেও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তেমন কিছু উদ্ধার করতে পারেনি বর্ধমান পুলিশ। কার্যত গোটা ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগও উঠেছে বিরোধীদের পক্ষ থেকে। বাঁচানোর চেষ্টা চলছে তৃণমূল নেতাদের – এমনটাই অভিযোগ করেছে বিজেপি। বিজেপি নেতা শ্যামল রায় দাবী করেছেন, তাঁরা প্রয়োজনে পুলিশকে সাহায্য করবেন বর্ধমানের কোথায় কোথায় বোমা রাখা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ তৃণমূলের তাঁবেদার হয়ে কাজ করছে। 

শনিবার ১৩নং ওয়ার্ডে প্রচারে গিয়ে এই বোমা বিস্ফোরণের দগদগে স্মৃতিকেও উসকে দিয়েছেন পৃথা। জানিয়েছেন, কাদের হাতে বর্ধমান? বস্তুত, দিন যত এগিয়ে আসছে ততই ক্ষুরধার হচ্ছে বামপ্রার্থীর প্রচার। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। তিনি পেয়েছিলেন ৯১ হাজার ৮৮২টি ভোট। আর সিপিএম প্রার্থী আইনুল হক (বর্তমানে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে) পেয়েছিলেন ৬২ হাজার ৪৪৪ ভোট। বিজেপি প্রার্থী প্রবাল রায় পেয়েছিলেন ১৬ হাজার ১৯২টি ভোট। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী পেয়েছিলেন ৮৫ হাজার ৩০১টি ভোট। সিপিএম প্রার্থী পেয়েছিলেন ১৮ হাজার ৮৪৮টি ভোট এবং বিজেপি প্রার্থী পেয়েছিলেন ৮৩ হাজার ৯৬৩টি ভোট। ২০১৯ সালের নির্বাচনে আশাতীতভাবে বিজেপি উঠে আসে দ্বিতীয় স্থানে। এবারে এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী খোকন দাস এবং বিজেপি প্রার্থী সন্দীপ নন্দী। এখন দেখার ২ মে কি উত্তর দেয় এই কেন্দ্রের ভোটাররা।

See also  পূর্ব বর্ধমান জেলার ভোটের হাল হকিকত
শেয়ার করুন 🤝🏻

Join WhatsApp

Join Now
---Advertisement---