বর্ধমানে সোমবার খুলেছিল সব মদের দোকান, বুধবার আচমকাই বন্ধ হয়ে গেলো, আশংকা ও বিভ্রান্তি

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: প্রায় একমাস দশ দিন টানা বন্ধ থাকার পর গত ৪মে সোমবার একাধিক শর্তসাপেক্ষে মদের দোকান খোলার নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকার। রেড জোন এলাকা বাদে অরেঞ্জ ও গ্রীন জোন এলাকায় দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মদের দোকান খুলে রাখা যাবে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। পূর্ব বর্ধমানেও অনুমোদনপ্রাপ্ত ১৭১টি মদের দোকান খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলাশাসক। বুধবারই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনানোও হয়েছে গত দুদিনে পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রায় দেড় কোটি টাকার মদ বিক্রি হয়েছে।
কিন্তু বুধবার হঠাৎ করেই শহর জুড়ে বন্ধ হয়ে গেল সব মদের দোকান। তা দেখে রীতিমত হতাশ ও বিভ্রান্ত সুরাপ্রেমীদের অনেকেই। দীর্ঘদিন পর অনেকে মদ হস্তগত করে রীতিমত উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন। কোথাও আবার মদের দোকানের মালিককে প্রণাম করেছেন সুরাপ্রেমীরা। আবার কোথাও দোকান খোলার আগে ভগবান কে পুজো দিয়েছেন ভাল লাভের আশায়। আর তার মাঝেই তাল কাটলো। বন্ধ হয়ে গেল দোকান থেকে মদ বিক্রি। কিন্তু কি এমন হলো যে হটাৎ ৪৮ঘন্টা যেতে না যেতেই বন্ধ হয়ে গেল মদের দোকান!
উল্লেখ্য, সোমবার রাতে খোদ বর্ধমান শহরের সুভাসপল্লী এলাকায় এক মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীর নমুনা পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ ধরা পরায় প্রশাসনিক তৎপরতা তুঙ্গে ওঠে। ওইদিন রাতেই ওই এলাকাকে সম্পুর্ন সিল করে দেয় প্রশাসন। মঙ্গলবার সকাল থেকে এলাকা ঘিরে ফেলে জেলা পুলিশ। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুভাসপল্লী এলাকাকে কন্টেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি এই এলাকার তিন কিলোমিটার পরিধির মধ্যে সমস্ত দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। ড্রোনের সাহায্যে নজরদারি চালায় জেলা পুলিশের একাধিক আধিকারিক।
যদিও এদিন মদের দোকান বন্ধ থাকার কারণ হিসেবে ভিন্ন ভিন্ন মত উঠে এসেছে। কয়েকজন বিক্রেতা জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার ওয়েব সাইট এর মাধ্যমে মদ বিক্রির জন্য অন লাইন পরিষেবা চালু করেছে। ই-রিটেল নামে সেই ওয়েব সাইটে আপাতত ফর্ম ফিলাপ করে মদ সংগ্রহ করা যাবে। আবার কেউ কেউ বলছেন, বর্ধমান শহরের মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় করোনা আক্রান্তের হদিশ মেলায় এবং মদের দোকানগুলোতে অত্যাধিক ভিড় হয়ে যাওয়ায় এই শহর রেড জোনের তালিকাভুক্ত হতে পারে! তাই মদ বিক্রি বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত জেলা শাসক রজত নন্দা জানান, কেবলমাত্র কন্টেইনমেন্ট এলাকার মধ্যে থাকা মদের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার বাইরে মদের দোকান বন্ধের কোনও নির্দেশ নেই। তবে বারংবার মোবাইল ফোনে চেষ্টা করেও আবগারি সুপারেনটেনডেন্ট তপনকুমার মাইতির সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকেও মদের দোকান বন্ধের কোনো নির্দেশিকা নেই বলেই জানা গেছে।

Recent Posts