ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: বর্ধমানের খোসবাগানের মেডভিউ নার্সিংহোমে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের প্রতারণা চক্রের হদিস পাওয়ার ঘটনায় এবার কার্যত কেঁচো খুঁজতে কেউটে বেরিয়ে পরার অবস্থা তৈরি হয়েছে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এই ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তদন্তের স্বার্থে এই চক্রের হদিস পেতে ইতিমধ্যে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরেও চিঠি পাঠিয়েছে জেলা পুলিশ। সূত্রের খবর পুলিশ একটা বিষয়ে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত একশ্রেণীর অসাধু চিকিৎসকদের মদতেই দীর্ঘদিন ধরেই জেলার বহু নার্সিংহোম থেকেই এই ধরণের প্রতারণা চক্রের কাজ চলছে। সরকারের সঙ্গে প্রতারণা করে নিজেদের আখের গোছানোর ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
তদন্ত যত এগোবে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে জেলা জুড়ে দুর্নীতির পর্দা ফাঁস হবে। তদন্তকারী অফিসারদের সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে মেডভিউ নার্সিংহোমের তিনটি কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। রোগীর চিকিৎসা না করিয়েই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ব্যবহার করে অবৈধভাবে সরকারের যে টাকা আত্মসাৎ করার চক্র চলছিল সেইসব টাকা কোন কোন অ্যাকাউন্টে জমা করা হতো তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এমনকি এই চক্রের সঙ্গে আর কোন নার্সিংহোম জড়িত আছে কিনা তাও তদন্তের মধ্যেই রয়েছে বলে জানা গেছে।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে জালিয়াতির ঘটনা সামনে আসতেই জেলা পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার কাটোয়া আদালতে ধৃতদের পেশ করে ৮দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরো তথ্য পাওয়া যাবে বলেই আশা করা যাচ্ছে। সবদিক খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অন্যদিকে গতকালের পর এদিনও খোসবাগানের মেডভিউ নার্সিংহোমের সামনে ছিল বিশেষ নজরদারি। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ ভিতরে ঢুকতে চাইলে রীতিমত জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয়েছে তাকে। অভিযুক্ত নার্সিংহোম মেডভিউ এর অন্যতম কর্ণধার ডা: আবির গুহ অবশ্য জানিয়েছেন, পুলিশ পুলিশের কাজ করছে। কিছু স্বাস্থ্যসাথী কার্ড বাজেয়াপ্ত করেছে। কে বা কারা এই ঘটনায় যুক্ত তদন্তের পরই বেরিয়ে আসবে। তদন্তে পর যদি তার নার্সিংহোমের কেউ যুক্ত প্রমাণিত হয়, পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।
এদিকে ছেলের গ্রেপ্তারে কিছুটা হলেও ভেঙে পড়েছেন মুন্সী নুরুল হাসানের মা আলেয়া বেগম। এদিন তিনি জানিয়েছেন, তার ছেলে নির্দোষ। সে কোন অপরাধ করেনি বলেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। খোসবাগানের নার্সিংহোমে কাজ করত বলেই তারা জানতেন। তবে সেখানে আর কি করত জানিনা। কি হয়েছে তাও জানেননা। তবে তার ছেলে ও তার শাশুরির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে সেটা ঠিক নয়। অপরাধ অন্য কেউ করত। অন্যদের বাঁচানোর জন্য তার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে।