বর্ধমানে ১৩ দিন আগে দুর্ঘটনায় পাঁচ জনের মৃত্যুর পরেও সরকারি ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় বাড়ছে ক্ষোভ
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: বর্ধমানের ২বি জাতীয় সড়কের ঝিঙ্গুটি এলাকায় টোটোয় করে খুব ভোরে মাছ ধরতে যাবার পথে ডাম্পারের ধাক্কায় একই পরিবারের চারজন ও টোটো চালকের মৃত্যুর তেরো দিন পরেও জোটেনি কোনো সরকারি অর্থ সাহায্য। স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষোভ বাড়ছে মৃতদের পরিবারে। মৃতদের পরিবারের গ্রাম পালিতপুরের বাসিন্দা শান্তি সাঁতরা জানিয়েছেন, এর আগেও এই জেলায় একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার পরেরদিনই জেলাশাসকের অফিস থেকে মৃতদের পরিবারের হাতে সরকারি অর্থ সাহায্য তুলে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি উল্লাস মোড়ের কাছে মাঠে কাজ করতে যাবার সময়ে লরির ধাক্কায় একই পরিবারের তিনজন মারা যাওয়ার পরেরদিনই মৃতদের পরিবারের হাতে জেলাশাসকের উপস্থিতিতে সরকারি সাহায্য তুলে দিয়েছিলেন মন্ত্রী।
সেখানে এই অসহায় পরিবার ১৩দিন পরেও কোন সরকারি সাহায্য পেল না। পালিতপুর লাগোয়া সিজেপাড়ার বাসিন্দা মইনুদ্দিন মিদ্দা দুর্ঘটনার দিন তাঁরই টোটো করে বাকি চার জনকে মাছ ধরার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন। বেপরোয়া ডাম্পারের ধাক্কায় তিনিও মারা যান সেদিন। টোটো টিও দুমড়ে মুচড়ে নষ্ট হয়ে যায়। তার পরিবারের হাতেও কেউ কোন সাহায্য তুলে দেয়নি বলে অভিযোগ। যদিও বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস এই ঘটনার পর পালিতপুরে মৃতদের বাড়িতে এসে ব্যাক্তিগত ভাবে এক লক্ষ টাকা সাহায্য করে গেছেন। এছাড়া এখনও অবধি আর কোন সাহায্য না পাওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে মৃতদের পরিবারের লোকেদের মধ্যে।
এদিকে সাঁতরা পরিবারের এই ঘটনার পরেও জাতীয় সড়ক ২বি ধরে এখনও অবাধেই চলছে টোটো। ফের কোনো মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থেকে পরিবহন দপ্তর বা পুলিশের পক্ষ থেকেও এখনও কোন সতর্কতা নেওয়া হয়নি বলেই স্থানীয়দের অভিযোগ। দুর্ঘটনায় মৃত মামনি সাঁতরার স্বামী কচি সাঁতরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় তাঁর স্ত্রী মারা যাবার পরে কেউ সেভাবে কোন খোঁজ নেয়নি। একবারই তৃণমূলের বিধায়ক খোকন দাস এসেছিলেন। তারপর থেকে সরকারিভাবে আর কেউ খোঁজ নেয়নি। কোন টাকাও পায়নি। আদৌ পাবে কিনা তাও জানেননা। কোনরকমে চলছে সংসার। শেষমেশ কি হবে জানেননা। একই দুর্ঘটনায় মৃত সীমা সাঁতরার স্বামী রাখাল সাঁতরাও জানিয়েছেন, এই ধরনের ঘটনার পর অনেকেই সরকারি সাহায্য পান শুনেছেন, কেউ কোন খবর না নিলে তাঁরা কি করবে! সবইতো শেষ হয়ে গিয়েছে তাদের। এখন কোনভাবে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছেন তাঁরা। গরিবের কি কেউ থাকে!
বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ মালিক বলেন, ‘কেউ খোঁজ নিচ্ছেনা এই অভিযোগ ঠিক নয়। আমি নিজে জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলেছি। খুব শীঘ্রই নিহতের পরিবারের হাতে সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণের টাকা চলে যাবে। ঘটনার পরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে সরকারি প্রক্রিয়ায় টাকা পাবার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই জেলা পরিবহণ দপ্তরের কাছে ক্ষতিপূরণের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাঠিয়ে দিয়েছেন জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা।