ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: গলসী ও বর্ধমান শহরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ, বোমাবাজি প্রভৃতির ঘটনায় মোট ১৩জনকে গ্রেপ্তার করেছে বর্ধমান ও গলসি থানার পুলিশ। এর মধ্যে গলসীর সিংপুর গ্রামে বোমাবাজি, গুলি চালানোর ঘটনায় পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ১১জনকে। অন্যদিকে, বর্ধমান শহরের রসিকপুরের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজির ঘটনায় ২জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।শনিবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে তোলা হলে বিচারক জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গলসীর সিংপুর গ্রামে রাইস মিলের বোনাসের দাবীতে দুটি শ্রমিক গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের সময় কেবল বোমাবাজিই করা হয়নি। একইসঙ্গে কয়েকরাউণ্ড গুলিও চালানো হয়েছে। যদিও এই ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর মেলেনি। গলসী থানার পুলিশ তদন্তে নেমে ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোলও উদ্ধার করেছে। উদ্ধার করেছে তলোয়ারও। অন্যদিকে, বর্ধমান শহরের ৩নং ওয়ার্ডের রসিকপুর এলাকার ঘটনায় পুলিশ ৪টি তাজা বোমা এবং বেশ কিছু বোমার মশলাও উদ্ধার করেছে।
স্বাভাবিকভাবেই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে খোদ শাসকদলের নেতা-কর্মীদের হাতে বোমা সহ আগ্নেয়াস্ত্রের সম্ভারকে ঘিরে রাজনৈতিক চর্চা তুঙ্গে উঠেছে। গলসীর ঘটনায় দুই শ্রমিক সংগঠনের সংঘর্ষে ইন্ধন জোগানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলেরই দুই জেলা নেতার বিরুদ্ধে। এলাকার শ্রমিকদের একাংশ জানিয়েছেন, ওই রাইস মিলের বোনাস সংক্রান্ত বিষয়ে দুটি শ্রমিক গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের ঘটনায় রাইস মিল মালিক গলসী থানায় অভিযোগ করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে গলসী থানার পুলিশ আগামী ৩ নভেম্বর সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসে সমস্যার সমাধানের নির্দেশ দেয়।
শ্রমিকদের একাংশ জানিয়েছেন, চলতি করোনা পরিস্থিতিতে ওই রাইস মিলের বিপুল আয় না হওয়ায় আলোচনা সাপেক্ষে রাইস মিল কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট একটি বোনাস দেবার কথা জানান। শ্রমিকদের একাংশ তা মেনেও নেন। কার্যত পরিস্থিতি যখন শান্ত হয়ে উঠছিল সেই সময় জেলার দুই নেতা এসে গলসীতে শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক করায় পরিস্থিতি ঘোরালো হয় ওঠে বলে দাবী করেছেন শ্রমিকদের একাংশ। আর তারপরেই বোমাবাজি, গুলি, সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সিংপুর এলাকা।
এদিকে, এই ঘটনার জেরে গোটা সিংপুর গ্রাম এখন কার্যত পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। পুলিশ দফায় দফায় হানাদারি চালিয়ে ১১জনকে গ্রেপ্তারও করেছে। গোটা এলাকা এই ঘটনায় রীতিমত থমথমে চেহারা নিয়েছে। অন্যদিকে, বর্ধমানের রসিকপুরের সংঘর্ষের ঘটনায় চাপা উত্তেজনা চলছে। পরিস্থিতির ওপর কড়া নজরদারী চালাচ্ছে পুলিশও। শনিবারও এলাকায় পুলিশের বিশাল বাহিনী অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চালিয়েছে।