ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: বর্ধমান শহরের পুরসভার ২নং ওয়ার্ড তথা সুভাষপল্লী এলাকায় এক মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীর করোনা পজিটিভ মেলার পর সোমবার রাত থেকেই সুভাষপল্লী এলাকাকে কন্টেনমেণ্ট জোন করা হয়েছিল। আর বুধবার আরও একধাপ এগিয়ে সমগ্র ২নং ওয়ার্ডকেই কন্টেনমেন্ট জোন ঘোষণা করল জেলা প্রশাসন।
জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানিয়েছেন, সুভাষপল্লী সহ আশপাশের ঘনজনবসতি পূর্ণ এলাকাকে কন্টেনমেণ্ট জোনে আনা হয়েছে। এই এলাকার সমস্ত ঢোকা ও বেরনোর পথ সিল করা হয়েছে। কোনোরকম যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই এলাকায় থাকা ডাক্তারখান, সব্জিবাজার, মদের দোকান সহ সমস্ত দোকান বন্ধ করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, করোনা সংক্রান্ত কন্টেনমেণ্ট জোনের নির্দেশিকা অনুসারে ঘটনাস্থলের ৩ কিমি পর্যন্ত এই কন্টেনমেণ্ট জোনের অধীনে নিয়ে আসার কথা। সেই নির্দেশ অনুসারেই সুভাষপল্লীর ১কিমির মধ্যে রয়েছে বর্ধমানের ডাক্তারপাড়া খোসবাগান।
জেলাশাসক জানিয়েছেন, সোমবার থেকেই খোসবাগানের ডাক্তারবাবুদের চেম্বার খোলা হয়েছিল। সেখানে ভিড়ও হচ্ছিল। তাই এই পরিস্থিতিতে আইএমএকে জানানো হয়েছে খোসবাগানের ডাক্তারবাবুদের চেম্বার বন্ধ করে তা অন্যত্র সরিয়ে ফেলার জন্য। আইএমএ না পারলে পুলিশকে ব্যবস্থা নেবার কথা বলা হয়েছে।
এরই পাশাপাশি এই তিন কিমি এলাকার মধ্যে থাকা একই ধরণের দোকানগুলিকে একসঙ্গে না খুলে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দিনে খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে সন্ধ্যে ৬টার পর এবং সকাল১০টার আগে কোনো দোকান খোলা চলবে না। উল্লেখ্য, আক্রান্ত ওই স্বাস্থ্যকর্মীর পরিবারের লোকজনদের সোয়াব টেষ্ট বৃহস্পতিবার করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। পাশাপাশি জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে লাগাতার চলছে ড্রোন দিয়ে এলাকায় নজরদারীও। চলছে মাইক নিয়ে প্রচার। নাগরিকদের চাহিদা মেটাতে পুলিশ সবরকমের সহায়তা করছে। জেলাশাসক জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকালে তিনি নিজে শহরে ঘুরে দেখবেন পরিস্থিতি।
এদিকে, এই লকডাউনের মাঝেই বুধবার সকালে মধ্যপ্রদেশের ভূপাল থেকে একটি বাসে ৪০জন বর্ধমানের আউশগ্রামে এসে পৌঁছালে আউশগ্রাম থানার পুলিশ তাদের আটকে দিয়েছে। তাদের যেখান থেকে এসেছে সেখানে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরই পাশাপাশি উড়িষ্যা থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর হয়ে ৫০ জনের একটি দল বাসে আসলে মাধবডিহি থানার পুলিশ তাদের আটকে দেয়। তাদের মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ২০জনকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার এই জেলায় ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
জেলাশাসক জানিয়েছেন, বাকিদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জেলাশাসক এদিন জানিয়েছেন, আন্তঃরাজ্য বর্ডার সিল রয়েছে। একইসঙ্গে অন্য জেলা থেকে আসা যাওয়ার ক্ষেত্রেই বিধিনিষেধ বলবত রয়েছে। তাই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁরা আবেদন জানাচ্ছেন, এই লকডাউন ভেঙে কেউ যাতায়াত করবেন না।
এদিকে, গোটা রাজ্য জুড়ে মদের দোকান নিয়ে হৈ চৈ -এর মাঝেই গত ২ দিনে পূর্ব বর্ধমান জেলায় মদ বিক্রি হল ১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকার। পূর্ব বর্ধমান জেলা আবগারী দপ্তরের সুপার তপন মাইতি জানিয়েছেন, প্রথম দিন জেলায় ১৭১টি দোকানে মোট ৫৭৩৭ লিটার বিদেশী মদ বিক্রি হয়েছে। যার অর্থমূল্য প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা। দ্বিতীয় দিনে দেশী মদ বিক্রি হয়েছে ১৭ হাজার লিটার এবং বিদেশী মদ বিক্রি হয়েছে ৯৫০০ লিটার। যার অর্থমূল্য মোট ১ কোটি টাকা। দুদিনে ১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকার মদ বিক্রি হয়েছে।