ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: পৌর নির্বাচন এগিয়ে আসতেই শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দল ফের প্রকাশ্যে এল বর্ধমানে। তৃণমূলেরই গোষ্ঠী কোন্দলে আক্রান্ত হলেন ১৫ ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর ডা. শঙ্খশুভ্র ঘোষ। কয়েকদিন আগে ৩১ নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলার রত্না রায়কেও একইভাবে হেনস্থা করা হয়। পরপর বেছে বেছে প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলারদের হেনস্থা করা, মারধর করার ঘটনায় গোটা শহর জুড়েই পৌর নির্বাচনে উত্তাপ তুঙ্গে উঠেছে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ ফেব্রুয়ারী তৃণমূল কংগ্রেসের পূর্ব বর্ধমান জেলার পর্যবেক্ষক ফিরহাদ হাকিম বর্ধমানে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। বৈঠকে দলীয় পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভুলে এক সঙ্গে পৌর নির্বাচনে লড়াই করতে নির্দেশ দেন। ওইদিনই তিনি দলীয় নেতাদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে সাধারণ মানুষকে এনআরসি ও সিএএ – র বিরুদ্ধে বোঝানোর জন্য নির্দেশ দেন। এদিকে, দলীয় পর্যবেক্ষকের এই নির্দেশ পেয়েই বর্ধমান পুরসভার কাউন্সিলাররা কর্মসূচী গ্রহণ করেন।
সেই নির্দেশ অনুসারেই সোমবার সন্ধ্যায় দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশেই বর্ধমানের ১৫ ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর শঙ্খশুভ্র ঘোষ তাঁর অনুগামীদের নিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচারাভিযান চালান। অভিযোগ বাড়ি বাড়ি ঘোরার সময় অতর্কিতে দলেরই মন্টু মজুমদারের গোষ্ঠীর লোকজন তাঁর ওপর হামলা চালায় বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
ব্যাপক মারধর করা হয় তাঁকে। জখম প্রাক্তন কাউন্সিলরকে স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শঙ্খশুভ্র ঘোষ। যদিও এব্যাপারে মন্টু মজুমদারের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। সোমবার রাতেই পুলিশ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দূর্গাপদ দাস ও অপু সাহা নামে দুই তৃণমূলকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে, বারবার এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রীতিমত আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে শহর জুড়ে। এপ্রিল মাসেই বর্ধমান পুরসভার ভোট। আর তার আগেই বেছে বেছে প্রাক্তন কয়েকজন কাউন্সিলারকে নানাভাবে ভয় দেখানো, মারধর করা, হেনস্থা করার ঘটনায় দলের আভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। এদিকে, এব্যাপারে বর্ধমান শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অরূপ দাস জানিয়েছেন, পরপর এই ঘটনার বিষয়টি জানানো হয়েছে দলের ওপরতলার নেতৃত্বকে। তাঁদের নির্দেশ পেলেই তাঁরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।
এরই পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, পরপর এই ঘটনায় আক্রান্ত প্রাক্তন কাউন্সিলাররা বর্ধমান থানায় অভিযোগ করেছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। আইন আইনের পথেই চলবে।