ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: বৃহস্পতিবার রাতে বর্ধমান শহরের ২৭নং ওয়ার্ডের বাবুরবাগের লিচুতলা এলাকায় যখন দুষ্কৃতীরা তৃণমূলের পার্টি অফিসে ভাঙচুর চালাচ্ছে, সেই সময় অন্যদিকে বর্ধমান পৌরসভার কোনো অনুমোদন ছাড়াই ২নং ওয়ার্ডের নার্স কোয়ার্টার মোড় থেকে বাবুরবাগ কালিতলার মাঝে অবৈধভাবে রাস্তার ফুটপাতে রীতিমত পাকাপোক্ত ভিত করে দোকান তৈরী হওয়া নিয়ে নতুন করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
অভিযোগ উঠেছে, তৃণমূলের দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতার পরই এভাবে পুরসভাকে না জানিয়েই অবৈধ নির্মাণ করা হচ্ছে দ্রুততার সঙ্গে। যদিও এব্যাপারে নবনিযুক্ত বর্ধমান পুরসভার পৌর প্রশাসক প্রণব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ঘটনার কথা তিনি শুনেছেন। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও বর্ধমান থানার পুলিশ শুত্রুবার এই অবৈধভাবে দোকান তৈরি করার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পরই এলাকায় পৌঁছে গোটা ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে আসে।
এদিকে ২নং ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা কানাই মির্জা কে এই বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, বর্ধমান পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে অবৈধ ভাবে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার পাশে, ড্রেনের উপর এমনকি জায়গা দখল করে দোকান ঘর তৈরি হয়ে যাচ্ছে। অন্য ওয়ার্ডের বাসিন্দা আরেক ওয়ার্ডের এসে ব্যবসা করছে। প্রভাবশালী নেতারা এব্যাপারে মদতও দিচ্ছে। সেসব নিয়ে কারোর কোনো মাথাব্যাথা নেই, নেই কোনো প্রশাসনিক পদক্ষেপ। আর ২নং ওয়ার্ডের দু একটা বেকার ছেলে করে কম্মে খাবে বলে কিছু করতে গেলেই সবাই রে রে করে উঠছে।
যদিও কানাই মির্জা জানিয়েছেন, এব্যাপারে তাঁর কোনো মদত নেই। এমনকি এব্যাপারে তিনি সঠিক ভাবে কিছু জানেনও না। তবে নিয়ম সকলের জন্য সমান হওয়া উচিত। তিনি এও জানিয়েছেন, খোদ ২নং ওয়ার্ডের পাওয়ায় হাউস পাড়া থেকে রাজ কলেজের দিকে যাবার রাস্তার বাঁকে যে আবর্জনা ফেলার জায়গা ছিল সেটা বন্ধ করে দিয়ে সেখানে পরপর পাকা দোকানঘর তৈরির কাজ চলছে। এব্যাপারে কারোর কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। এমনকি যারা এই দোকান তৈরী করেছে তারাও অন্য ওয়ার্ডের বাসিন্দা। এদিকে এলাকায় এলাকায় শাসকদলের নেতাদের মদতে শহর জুড়ে বেআইনি ভাবে যত্রতত্র দোকান ঘর গজিয়ে ওঠার ব্যাপারে রীতিমত চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে শহর জুড়ে। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারাও সোচ্চার হচ্ছেন এই বিষয়ে প্রতিবাদ জানাতে।
২ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা সেখ সামাদ জানিয়েছেন, পাওয়ার হাউস পাড়া থেকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে হাসপাতাল যাবার রাস্তায় একসময় যে আবর্জনা ফেলার জায়গা ছিল সেটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারণসরূপ তিনি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই এক,দুই ও তিন নম্বর ওয়ার্ডের আবর্জনা সংগ্রহ করে সেই অবর্জনাকে রিসাইকেলিং করার মেশিন ডেন্টাল কলেজের মাঠের সামনে বসানো হয়েছে। আর তার জন্যই এলাকার বেশ কয়েকটি ভ্যাট কে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দৃশ্যদূষণের সমস্যাও ছিল।
তিনি জানিয়েছেন, এছাড়াও বাড়ি বাড়ি বর্জ্য পদার্থ সংগ্রহ করার জন্য পুরসভা অনেক দিন ধরেই প্রকল্প চালু করেছে। ফলে এলাকাকে পরিচ্ছন্ন রাখতে এই ভ্যাট বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরিবর্তে এলাকার কিছু বেকার যুবক কে রোজগারের সুযোগ করে দেওয়ার জন্যই দোকান ঘর তৈরি করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও তিনিও জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে পৌর এলাকার উন্নয়নে এই সমস্ত দোকানঘর ভেঙে দেওয়াও হতে পারে।আর এই পাড়ায় পাড়ায় তৃণমূল নেতাদের নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ঘটনায় শহর জুড়ে আলোড়ন ছড়িয়েছে।