বর্ধমান ষ্টেশনের পুরনো রেলব্রীজ ভাঙার নির্দেশকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: বর্ধমান ষ্টেশনের ওপর পুরনো রেলব্রীজকে ভেঙে ফেলার বিজ্ঞপ্তিকে কেন্দ্র করে এবার নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়ালো। একইসঙ্গে পুরনো রেলব্রীজ সংলগ্ন হকারদের পক্ষ থেকে এই ঘটনায় তীব্র আপত্তিও জানানো হল জেলাশাসকের কাছে। উল্লেখ্য গত ১৯ সেপ্টেম্বর রেল দপ্তর একটি নির্দেশিকা জারী করেছেন। ওই বিজ্ঞপ্তি অনুসারে পুরনো রেলব্রীজ অত্যন্ত বিপদজনক অবস্থায় থাকায় আগামী ২৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রেলব্রীজের সমস্ত জবরদখল হঠিয়ে দেবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের কাছেও। আর এরপরই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। 

উল্লেখ্য, গতবছর ২৪ সেপ্টেম্বর নতুন রেলব্রীজের উদ্বোধন করা হয়। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত রেলওয়ে পুরনো ব্রীজটির অবস্থা বিপদজনক হয়ে পড়ায় দ্রুতই নতুন ব্রীজ তৈরীর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এরপর গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে নতুন ঝুলন্ত চতুর্মুখী ব্রীজটি উদ্বোধন হওয়ার পর পুরনো ব্রীজ দিয়ে কেবলমাত্র ছোট হালকা গাড়ি, দুচাকা ও তিনচাকার গাড়ি এবং হাঁটা পথ হিসাবে ব্যবহার করা শুরু হয়। কারণ নতুন ব্রীজ দিয়ে যাতায়াতের ক্ষেত্রে এখনও সমস্ত দিকে হেঁটে চলাচল করা যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে পুরনো ব্রীজকে ভেঙে দিলে টোটো সহ সাইকেল কিংবা হেঁটে যাতায়াত কিভাবে হবে তানিয়েই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

উল্লেখ্য, পুরনো এই ব্রীজের ভগ্নাবস্থার জন্য তা ভেঙে দিয়ে ফুট ওভারব্রীজ সেখানে নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যেই জেলাশাসক বিজয় ভারতী রেলের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু তা না করে ২৯ সেপ্টেম্বরের পর তা ভেঙে দেওয়া হলে সমস্যায় পড়বেন অসংখ্য মানুষ। এদিকে, রেলের এই বিজ্ঞপ্তির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বর্ধমান শহর জনপ্রিয় হকার্স ইউনিয়ন। মঙ্গলবারই ইউনিয়নের পক্ষ থেকে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ১৯৮৬ সাল থেকে এই রেল ব্রীজের এ্যাপ্রোচ রোডের দুধারে হকাররা ব্যবসা করে আসছেন। তাঁদের দাবী, এই হকারদের ব্যবসার জন্যই একসময় রেলব্রীজের এ্যাপ্রোচ রোডের ওপর চলতে থাকা অসামাজিক কাজ বন্ধ হয়।

সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি পুরনো ব্রীজের পরিবর্তে নতুন ব্রীজ করার সময় তাঁদের উঠে যেতে বলা হয় নতুন ব্রীজ তৈরীর পর ব্রীজের নিচে হকারদের পুনর্বাসন দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি মোতাবেক এখনও তাঁদের পুনর্বাসন দেওয়া হয়নি। তা সত্ত্বেও পুরনো রেলব্রীজকে ভেঙে দেওয়া হলে তাতে চরম ক্ষতি হবে। এদিন জেলাশাসকের কাছে চলাচলের বিকল্প ব্যবস্থা না করে রেলের পুরনো সেতু তড়িঘড়ি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত বাতিল করা, বিজ্ঞানসম্মতভাবে পুরনো সেতু মেরামত করা, নতুন উড়ালপুলের নিচে উচ্ছেদ হওয়া হকার পুর্নবাসন দেওয়া সহ হকার আইন ২০১৪ লাগু করার আবেদন জানানো হয়েছে।

Recent Posts