বর্ধমান সাইবার ক্রাইম পুলিশের বড়সড় সাফল্য, প্রায় সাড়ে ৮লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে ঝাড়খন্ড থেকে ধৃত ২
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: বর্ধমান শহরের বাসিন্দা এক ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণা করে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ডিটেল নিয়ে কয়েক দফায় ৮ লক্ষ ৫৮ হাজার ৯০০ টাকা তুলে নিয়েছিল প্রতারকরা। বর্ধমানের গোলাপবাগ এলাকার ওই বাসিন্দা সুভাষ চন্দ্র নন্দী ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের ৩ তারিখে এই ঘটনার কথা জানিয়ে বর্ধমান সাইবার ক্রাইম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। আর সেই অভিযোগের তদন্তে নেমে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম থানা রীতিমত চাঞ্চল্যকর সাফল্য পেল।
ধারাবাহিকভাবে ট্র্যাকিং চালিয়ে ঝাড়খন্ডের দেওঘর এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার রাতে সামসের আনসারি ও অরুন মাহাতো নামে দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। ধৃতদের শুক্রবার বর্ধমান সিজেএম আদালতে তুলে পুলিশ হেফাজতে চাইলে বিচারক ধৃতদের জেল হেফাজতে পাঠিয়ে আগামী ২৪তারিখ ফের আদালতে পেশের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে এই চক্রের কারবারিরা সুভাষচন্দ্র নন্দীকে প্রথমে ফোন করে তার ফোনে রিচার্জ করায়। পরে ফের যোগাযোগ করে জানায়, মোবাইলে ১০ টাকা রিচার্জ না করলে বন্ধ হয়ে যাবে সিম।
এইভাবে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে সুভাষবাবুর ফোন ক্লোন করে সেখান থেকে সমস্ত তথ্য বের করে নিয়ে তাঁর অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে কয়েক ধাপে ৮ লক্ষ ৫৮ হাজার ৯০০ টাকা তুলে নেয় প্রতারকরা। নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা উঠে যাওয়ার বিষয়টি সুভাষ চন্দ্র বাবুর নজরে আসতেই তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন। পুলিশের পরামর্শে ঘটনার বিষয় জানিয়ে সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। ঘটনার তদন্তে নামে সাইবার ক্রাইম পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সুভাষ চন্দ্র নন্দীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ডিটেল ও বেশ কয়েকটি ফোন নম্বরের সূত্র ধরে তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে ধৃতদের মধ্যে একজনের অ্যাকাউন্টে ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ ট্রান্সফার করা হয়েছে। আর এরপরই ফোন নম্বর ট্র্যাক করে পুলিশ দুষ্কৃতীদের লোকেশন এর সন্ধান পায়। বৃহস্পতিবার দেওঘর থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করে বর্ধমান পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে আরও তথ্য উদ্ধার করা হবে। জানা গেছে, ধৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে এখনই সমস্ত কিছু প্রকাশ্যে আনছে না পুলিশ। তবে এই ঘটনার তদন্তে নেমে সাইবার ক্রাইম চক্রের এক বড়সড় গ্যাংয়ের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন।