বিকল্প রাস্তা না করে রেলের পুরনো সেতু ভাঙা চলবে না, এই দাবীতে বর্ধমানে শুরু হল অরাজনৈতিক আন্দোলন

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন রেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন বর্ধমান ষ্টেশনের ওপর পুরনো রেল সেতুকে সংস্কার করে সেখানে ছোট যানবাহন চলাচল এবং পায়ে হেঁটে যাতায়াতের জন্য ফুটব্রীজ নির্মাণ করে দেবার। কিন্তু প্রশাসনের সেই দাবীকে না মেনেই গত ১৯ সেপ্টেম্বর রেলের ব্রিটিশ আমলে নির্মিত পুরনো সেতুটিকে ভেঙে ফেলার বিজ্ঞপ্তি জারী করার ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছিল। আর বুধবার সেই ক্ষোভ আছড়ে পড়ল ষ্টেশন এলাকায়। 

উল্লেখ্য, বর্ধমান ষ্টেশনের ওপরে থাকা রেলের ওই পুরনো সেতুটির ভগ্নাবস্থার জন্য তার পাশেই অত্যাধুনিক নতুন ঝুলন্ত সেতু নির্মিত হয়। বর্তমানে ওই সেতু দিয়ে ২ চাকা ও চারচাকা সহ সমস্ত গাড়ি যাতায়াত করলেও টোটো, সাইকেল যাতায়াত করতে পারছে না। একইভাবে নতুন সেতু এতটাই দীর্ঘ ও উঁচু যে তা দিয়ে হেঁটে যাতায়াত করাও প্রায় দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই অসুবিধাকে মাথায় রেখেই জেলাশাসক বিজয় ভারতী রেলের কাছে পুরনো ভগ্নপ্রায় সেতুটির সংস্কার করে সেখানে ছোট যানবাহন এবং পায়ে হেঁটে চলার উপযোগী সেতু বানানোর জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন।

 

কিন্তু রেল তার কোনো উত্তর না দিয়েই পুরনো সেতুকে ভেঙে ফেলার বিজ্ঞপ্তি দেওয়ায় বুধবার সাধারণ মানুষ, টোটো চালক থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও প্রতিবাদে সরব হন। কার্যত এদিন থেকেই বিকল্প রাস্তার দাবিতে আন্দোলনে নামলেন বর্ধমান রেল স্টেশন এলাকার বাসিন্দারা। বিকল্প রাস্তা না করে পুরনো রেল ওভারব্রিজ ভাঙা যাবে না – এই দাবিতে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হল। রেলের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের অফিসের সামনে মঞ্চ বেঁধে চলে বিক্ষোভ। তার আগে পুরনো রেল সেতু অবরোধ করেন টোটো চালক ও এলাকার বাসিন্দারা।

বিজ্ঞপ্তি অনুসারে শুধু সেতু ভেঙে ফেলাই নয়, সেতুর অ্যাপ্রোচ রোডের জবর দখলও উচ্ছেদ করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে রেল। বিকল্প পথ না হওয়া পর্যন্ত সেতু ভাঙা যাবে না বলে দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে শাসক দল তৃণমূল ও এসইউসিআই। এব্যাপার এ্যাসিস্ট্যাণ্ট ইঞ্জিনিয়ার জয়প্রকাশ নারায়ণ জানিয়েছেন, ব্রীজের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হয়ে গেছে। এটাকে ভাঙতেই হবে। কিন্তু বিকল্প রাস্তার কোনো ব্যবস্থা তাঁদের করার কথা নয়। পাশাপাশি জানিয়েছেন, রেলের জবর দখল জায়গায় সৌন্দর্য্যায়নের কাজ করা হবে। জয়প্রকাশবাবু জানিয়েছেন, এক বছর আগেই পুরনো সেতুটিকে ভেঙে দেবার কথা ছিল। এতদিন তাঁরা সেই সময় দিয়েছেন। ব্রীজের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হওয়ায় তা ভেঙে দিতেই হবে। যদিও তিনি জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষের এই আন্দোলনের বিষয়টি তিনি তাঁর উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন।

Recent Posts