বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে জোর প্রতিযোগিতা শুরু, পরিষেবা দিতে এবারে আসরে ডিভিসি

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: কেন্দ্রীয় সরকার বিদ্যুৎ বণ্টন ও পরিষেবার ক্ষেত্রে বহুজাতিক বিভিন্ন সংস্থাকে ছাড়পত্র দিয়েছে। আর সেই ছাড়পত্র অনুসারে ইতিমধ্যেই বিদ্যুতক্ষেত্রে বিভিন্ন সংস্থা ছোট, মাঝারি এবং বৃহৎশিল্প প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা শুরু করেছে। কার্যত রান্নার গ্যাসের সংযোগের মতই বিভিন্ন শিল্প সংস্থাগুলিও এখন বিভিন্ন বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে পারছেন। যার যে কোম্পানির পরিষেবা পছন্দ তার কাছ থেকেই বিদ্যুত পরিষেবা গ্রহণ করতে পারছেন শিল্প সংস্থাগুলি। যদিও কেন্দ্রীয় সরকার গৃহস্থ ক্ষেত্রেও রান্নার গ্যাসের মতই বিদ্যুত বণ্টন সংস্থাগুলিকেও বিদ্যুত পরিষেবা দেবার জন্য ছাড়পত্র দিয়েছে, কিন্তু এখনও বাংলায় রাজ্য সরকার এই ব্যবস্থা লাগু করতে দেয়নি। ফলে বাংলার বুকে এখন বিভিন্ন পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলির মধ্যে চলছে জোরকদমে প্রতিযোগিতা। 

কোন সংস্থা কত ভাল এবং কত কম দরে বিদ্যুৎ পরিষেবা দিতে পারবে চলছে তারই প্রতিযোগিতা। আর সেই প্রতিযোগিতা এবার পিছিয়ে রইল না দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনও। শুক্রবার বর্ধমানে অনুষ্ঠিত হল বিদ্যুত সরবরাহ সংযোগ মেলা। এদিন এই মেলায় উপস্থিত ছিলেন ডিভিসির চীফ ইঞ্জিনিয়ার মৃণাল কান্তি ভট্টাচার্য, এমসি রক্ষিত, অরূপ সরকার, সঞ্জয় কুমার, দেবীপ্রসাদ পুইতুণ্ডি প্রমুখ উচ্চপদস্থ অফিসাররা। এদিন তাঁরা জানিয়েছেন, ছোট, মাঝারি এবং বৃহৎ শিল্প সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে এদিন এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অংশ নিয়েছেন প্রায় ৪০টি শিল্প সংস্থার প্রতিনিধিরা।

 এদিন এমসি রক্ষিত জানিয়েছেন, সরকার চাইছেন বিদ্যুতের ক্ষেত্রেও একটি প্রতিযোগিতা হোক। যাঁরা ভাল পরিষেবা দিতে পারবেন তাঁরাই ভাল ব্যবসা করবেন। মানুষও ভাল পরিষেবা পাক সেটাই লক্ষ্য। ফলে সেই নিরিখে অন্যান্য সংস্থাগুলিও এগিয়ে এসেছে। পিছিয়ে নেই ডিভিসিও। তিনি জানিয়েছেন, তাঁরা আশাবাদী ডিভিসি সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপালে অন্য কোনো সংস্থাই টিকতে পারবেনা। কারণ ডিভিসিই পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে একচেটিয়া কারবার করছে। 

তিনি জানিয়েছেন, ডিভিসির বর্তমান বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা গড়ে ৬৮০০ মেগাওয়াট। কিন্তু রাজ্যের ৩০০টি শিল্প সংস্থায় মাত্র খরচ ৩০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত। ফলে বাকিটা অন্যান্য রাজ্যে তাঁরা বিক্রি করেন। এদিন দেবীপ্রসাদ পুইতুণ্ডি জানিয়েছেন, ডিভিসি কেবলমাত্র বর্ধমান জেলাতেই ৪০০ কোটি টাকা বিদ্যুত সরবরাহ খাতে এখনও পর্যন্ত ব্যয় করেছে। আগামীদিনে ১০০০ কোটি টাকা ব্যয় করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ডিভিসি শিল্প সংস্থায় বর্তমানে আরও বিদ্যুত সরবরাহ বাড়াতে চাইছে। তাই এই ধরণের মেলা করা হচ্ছে। মেলায় বিভিন্ন শিল্প সংস্থার বক্তব্য গুরুত্ব দিয়ে শোনা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় সরকার ছাড়পত্র দেবার পর ইতিমধ্যেই পশ্চিম বর্ধমান জেলায় একদা দিসেরগড় পাওয়ার সাপ্লাই কর্পোরেশন এবং অধুনা ইণ্ডিয়া পাওয়ার একচেটিয়া শিল্প সংস্থায় বিদ্যুত সরবরাহ শুরু করেছে। ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত দিসেরগড় পাওয়ার সাপ্লাই কর্পোরেশন বর্তমানে ইণ্ডিয়া পাওয়ার নামে চিহ্নিত। পশ্চিম বর্ধমান ছাড়িয়ে পূর্ব বর্ধমানেও থাবা বসাতে চলেছে তাঁরা। বস্তুত, বিদ্যুত ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংস্থার অনুপ্রবেশই এবার চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে যাঁরা একচেটিয়া এতকাল ব্যবসা করেছেন তাঁদের।

Recent Posts