বিয়ের ৪ মাস পর রূপশ্রী প্রকল্পের আবেদন, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানালেন মেমারীর বিডিও

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,মেমারি: বিয়ের ৪ মাস পর সরকারী রূপশ্রী প্রকল্পে টাকা পাওয়ার জন্য দরখাস্ত করে বেজায় ফেঁসে গেলেন মেমারী ১নং ব্লকের দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের আলিপুর গ্রামের বাসিন্দা সুমনা সোম। গোটা বিষয়টি নজরে আসতেই বিডিও উদ্যোগে শুরু হয়েছে তদন্ত। রূপশ্রী প্রকল্পের ফর্ম বাতিল করা ছাড়াও মিথ্যা স্বঘোষণাপত্র দেওয়ার অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবার কথা জানিয়েছেন মেমারী ১-এর বিডিও ড. আলি মহম্মদ ওয়ালিউল্লাহ। 

জানা গেছে, আলিপুর গ্রামের বাসিন্দা সুমনা সোমের সঙ্গে হুগলীর পাণ্ডুয়ার দান্তেসার গ্রামের বাসিন্দা সুপ্রিয় ঘোষের বিয়ে হয় চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল। সেই বিয়েতে যথারীতি আলিপুর গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যা অনিতা মজুমদারও নিমন্ত্রিত ছিলেন। তিনিও জানিয়েছেন, উভয়েরই সামাজিক মতে বিয়ে হয় এবং তাদের রেজিষ্ট্রি বিয়েও হয়। এদিকে, হঠাত করেই দেখা যাচ্ছে ১৫ জুলাই সুমনা সোম রূপশ্রী প্রকল্পে টাকা পাবার জন্য আবেদন জানান পঞ্চায়েত দপ্তরে। যথারীতি পঞ্চায়েত প্রধান সেই আবেদনে স্বাক্ষরও করে তা পাঠিয়ে দেন বিডিও অফিসে।

কিন্তু এরই মাঝে বিডিও অফিসে খবর পৌঁছায় ওই আবেদনটি সম্পূর্ণ অবৈধ। গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন বিডিও। বৃহস্পতিবারই বিডিও অফিস থেকে সুমনা সোমের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ খবর নেন বিডিও অফিসের কর্মীরা। তাঁরাও জানতে পারেন ২৬ এপ্রিল বিয়ে হয়ে গেছে সুমনার সঙ্গে সুপ্রিয়ের। এদিকে, এরই পাশাপাশি জানা গেছে, যেদিন সুমনা রূপশ্রী প্রকল্পের ফর্ম তুলতে আসেন, সেদিন তিনি যথারীতি মাথার সিঁদুর এবং হাতের শাখা, পলা খুলে আসেন, যাতে কেউ বুঝতে না পারে। তা নিয়েও শুরু হয়েছে তদন্ত। এমনকি ১২আগস্ট সুমনা সুপ্রিয়ের বিয়ের দিন ধার্য করে কার্ড ছাপিয়ে তা বিলিও করা হয়। পঞ্চায়েত অফিসেও সেই কার্ডের প্রতিলিপি জমা করা হয়।

এদিকে, এব্যাপারে নিজেদের সাফাই দিতে গিয়ে রীতিমত অসংলগ্ন কথা বলেছেন সুপ্রিয় ঘোষ। প্রথমে তিনি বলেছেন তাঁদের বিয়ে ১২ আগষ্ট অর্থাৎ বৃহস্পতিবার হয়েছে। কিন্তু ম্যারেজ সার্টিফিকেটের কথা বলার পরই তিনি জানান, আসলে সেই সময় করোনার জন্য তাঁরা ফর্ম তুলতে পারেননি। অফিসেও ঠিকমত কাজ হচ্ছিল না। কিন্তু বিয়ের পরও কিভাবে তা চেপে গিয়ে রূপশ্রী প্রকল্পে টাকা পাবার জন্য আবেদন করলেন – তার উত্তর তিনি দেননি। অন্যদিকে, মেমারী ১-এর বিডিও জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি নিয়ে তাঁরা খোঁজখবর করেছেন। ওই পাত্রপাত্রীর ফর্ম বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু যেহেতু তাঁরা প্রতারণা করেছেন তাই তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Recent Posts