ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। তবুও বিভিন্ন স্থানে পরিলক্ষিত হচ্ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার চুড়ান্ত অভাব। করোনা বিধি না মানার প্রবণতা সংক্রমণকে আরও বাড়িয়ে তুলছে পূর্ব বর্ধমান জেলায়।বৃহস্পতিবার জেলায় নতুন করে ৫৫৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে বর্ধমান শহরে সংক্রমিতের সংখ্যা ১৭৯জন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এখনও পর্যন্ত গোটা জেলায় ১৪জনের মৃত্যুও হয়েছে। হাসপাতাল, নার্সিংহোমে বেড পেতে কালঘাম ছুটছে রোগীর আত্মীয়দের। এরই মধ্যে করোনা সংক্রমণ দ্রুতহারে বাড়তে থাকায় সরকারকে সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়ে দিল বর্ধমানের পশুপ্রেমী সংস্থা ভয়েস ফর দ্য ভয়েসলেস।
সংস্থার সভাপতি অভিজিত মুখার্জ্জী বৃহস্পতিবার জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিলেন, তাঁদের নির্মীয়মাণ পশু হাসপাতালকে তাঁরা কোভিড হাসপাতাল হিসাবে ব্যবহার করতে দিতে চান। যেহেতু এখনও পরিপূর্ণভাবে পশু হাসপাতাল তৈরী এবং চালুই হয়নি তাই তাঁরা এই হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতাল হিসাবে ব্যবহার করতে দিতে চান মানবিক কারণে। উল্লেখ্য, বুধবারই রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তি জারী করে জানানো হয়েছে করোনা মোকাবিলায় জেলাস্তরে মেডিকেল কলেজ প্রিন্সিপ্যাল এবং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্যাধিকারিকরা নিজের জেলায় নতুন করে কোভিড হাসপাতাল তৈরী করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। প্রয়োজনে তাঁরা নতুন কোভিড হাসপাতাল, বেড বাড়ানো, কোভিড ওয়ার্ড, সেফ হোম প্রভৃতি চালু করতে পারবেন। ভয়েস ফর ভয়েসলেস সংস্থার সভাপতি অভিজিত মুখার্জ্জী জানিয়েছেন, তাঁরা এই আবেদন জেলার সমস্ত আধিকারিকদের পাশাপাশি মানেকা গান্ধীর কাছেও পাঠিয়েছেন।
অভিজিতবাবু জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই বর্ধমানের ভাতার থানার ওড়গ্রামে তাঁদের পশু হাসপাতাল ভবনের প্রথম পর্যায়ের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এখনও বিদ্যুতের সংযোগ পাওয়া না গেলেও ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই জেলা প্রশাসন মনে করলে তাঁদের এই হাসপাতালকে কোভিড চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রায় ৩৫০০ স্কয়ার ফুট এলাকা রয়েছে এখানে। ৩০ থেকে ৭০টা পর্যন্ত বেড রাখা যেতে পারে এখানে। রয়েছে পানীয় জল থেকে সবরকমের সুবিধাও। বর্ধমান শহর থেকে ২৬ কিমি এবং গুসকরা থেকে ৬ কিমি দূরে এর অবস্থান। অভিজিতবাবু জানিয়েছেন, তাঁদের এই পশু হাসপাতালের ৫০০ মিটারের মধ্যে কোনো জনবসতিও নেই। ফলে সবদিক থেকেই এটা আদর্শ হতে পারে করোনা চিকিৎসাকেন্দ্র হিসাবে।
একইসঙ্গে যখন চতুর্দিকে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য বেড পাওয়া যাচ্ছে না, করোনা চিকিৎসাকেন্দ্রের অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে সেই সময় ভয়েস ফর দ্য ভয়েসলেস এইভাবে এগিয়ে আসায় অনেকেই আশার আলো দেখছেন। যদিও অভিজিতবাবু জানিয়েছেন, তাঁদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এখনও জেলাপ্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কিছু তাঁদের জানানো হয়নি।