ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: করোনাতঙ্ক কে দূরে সরিয়ে রেখে শেষমেষ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে আম বাঙালী। গত প্রায় ৬ মাসের বেশি সময় ধরে একটানা করোনার আক্রমণ সইতে সইতে এবার দেওয়ালে পিঠ ঠেকা বাঙালি তাঁর সেরা উৎসব সারদোৎসব নিয়ে আর সমঝোতা করতে রাজি নয়। তাই করোনাকে জয় করার জন্য এবার মা দুর্গার কাছেই মানত করতে চলেছেন বর্ধমানের বড়শুল জাগরণী। আসন্ন দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে দোলাচল কাটিয়ে অবশেষে কম বাজেটের মধ্যেই পুজোর আয়োজন করতে চলেছেন তাঁরা। এবছরের
জাগরণীর থিমের নাম তাই ‘মানত’।
প্রসঙ্গত, বড়শুল জাগরণী থিম পুজোয় গত কয়েক বছর ধরেই শিরোনামে উঠে এসেছে। রাজ্য সরকারের শ্রেষ্ঠ সন্মানও টানা বেশ কয়েকবার পেয়ে গেছে এই পুজো কমিটি। চলতি করোনা আবহের পরিস্থিতিতে আদপেই এবার পূজোর আয়োজন করা যাবে কিনা তা নিয়ে রীতিমত চিন্তিত ছিলেন পুজো উদ্যোক্তারা। তবুও সব বাধা বিঘ্ন পিছনে ফেলে জাগরণীর সদস্যরা নিজেদের বৈঠকে পুজো করার সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দেন। আর তারপরেই প্রতি বছরের স্বাভাবিক বাজেট কমিয়ে প্রায় ৮ লাখ টাকা বাজেটকে মাথায় নিয়ে পুজোর আয়োজনে নেমেছেন তাঁরা।
এবারে জাগরণীর থিম তৈরী করেছেন পুলক ঘোষাল। থিমের নাম ‘মানত’। প্রতিমা তৈরী করছেন সিদ্ধার্থ পাল। পুলকবাবু এবছরের পুজোর ভাবনা বা থিম প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, একসময় মানুষ প্রকৃতির হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে প্রকৃতি পুজো শুরু করেছিলেন। মানুষের স্থির বিশ্বাস – সর্বশক্তিমান ঈশ্বরই পারেন সমস্ত দুর্যোগ থেকে বাঁচাতে। আর এই বিশ্বাসেই এখনও বহু জায়গায় দেবতার স্থানে মানুষের মানত করার ভিড় উপচে পড়ে। পুলকবাবু জানিয়েছেন, মানুষ মানত করে কিছু আকাঙখা থেকে। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে তাঁরা কিছু চান আর তা চাওয়ার জন্যই তাঁরা নানাভাবে মানত করেন। ইচ্ছাপূরণের জন্য তাঁরা মানতপূরণও করেন।
পুলকবাবু জানিয়েছেন, করোনার জেরে গত কয়েকমাস ধরে সাধারণ মানুষের জনজীবন প্রায় বিপর্যস্ত হয়েছে। এখনও মানুষ করোনাতংকে ভুগছেন। আর তাই তাঁরা এই থিমের মাধ্যমে মা দুর্গার কাছে মানত করছেন, মা রক্ষা করো পৃথিবীকে। পরাস্ত করো করোনাসুরকে। তিনি জানিয়েছেন, এই মানত আত্মবোধ জাগরণের। মানব কল্যাণ বোধ জাগরণের। বিশ্ব কল্যাণ বোধ জাগরণের। বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব বোধ জাগরণের। বিশ্ব মানবতা বোধ জাগরণের। এই মানত আত্মবোধে মানব সেবা জাগরণের প্রত্যেক মানুষই দেশ কাল, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে আমাদের একান্ত আপন, পরমাত্মীয়। এই মানত বিশ্ব শান্তির জন্য।