ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক, পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমান জেলায় দূরন্ত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা সংক্রমণ। গত কয়েকদিন ধরেই বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চের এ্যানেক্স ভবন লাগোয়া অংশে একটানা চলছে ফ্লু ক্লিনিক। এখানেই প্রতিদিন ১০০জনের সোয়াব সংগ্রহ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে এখানেই জেলা প্রশাসনের সমস্ত কর্মী, আধিকারিকদেরও সোয়াব সংগ্রহ করা হচ্ছে। আর এবার ধাপে ধাপে তার রিপোর্ট আসতে শুরু করতেই আতংক মাত্রাতিরিক্ত হয়ে উঠেছে। স্বাভাবিকভাবেই করোনা শৃংখল ভাঙার জন্য লকডাউনের যৌক্তিকতা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
প্রশ্ন উঠতে শুরু করল যেভাবে সরকারী দপ্তরের কর্মী, আধিকারিকদের আক্রান্ত হবার ঘটনা সামনে এসেছে তাতে আগামী দিনে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা বহু হতেই বাধ্য। এদিকে, জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বর্ধমান জেলাশাসকের কালেক্টরেট ভবনের জেনারেল সেকশনের ৫জন কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। পাশাপাশি সমাজকল্যাণ দপ্তরের ২জন কর্মীও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর আগে জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডুও দেহরক্ষী এবং তারপরে খোদ দেবু টুডু করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে সবমিলিয়ে ভয়াবহভাবে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় আতংক এই জেলায় তীব্রতর হয়ে উঠতে শুরু করেছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, শনিবারই জেলায় ১২১জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট এলেও রাতেই তা আরও বেড়ে গেছে। কারণ একই দিনে তথা শনিবারই খোদ জামালপুরে ৩৯জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আর এর জেরে জেলার প্রথম কোনো হাসপাতালের জরুরী পরিষেবা ছাড়া সমস্ত কিছুই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় ব্যাপক আতংক ছড়িয়ে পড়েছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লক হাসপাতালে। জামালপুর হাসপাতালের ৯জন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে গোটা ব্লক জুড়েই তীব্র আতংক ছড়িয়েছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে জামালপুরের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার গোটা জামালপুর ব্লক জুড়েই লকডাউন লাগু করার জন্য জেলাশাসকের কাছে লিখিত আবেদনও জানিয়েছেন।
এছাড়াও ভাতার ব্লকেও ৫২জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে এদিনই জানা গেছে। তা আরও বাড়ার সম্ভাবনা। জেলা প্রশাসনের রিপোর্ট অনুসারে শনিবার পর্যন্ত গোটা জেলায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২০জনের। এদিকে, শনিবার পবিত্র ইদুজ্জোহা উপলক্ষে গোটা জেলা জুড়েই মসজিদে মসজিদে কাতারে কাতারে মানুষ নামাজ পড়েছেন। উল্লেখ্য কোনো কোনো জায়গায় নামাজ পড়ুয়াদের মুখে মাস্ক থাকলেও বহু মসজিদেই এদিন নামাজ পড়ুয়াদের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। এমনকি সামাজিক দূরত্ব বিধিকেও এদিন রীতিমত লঙ্ঘন করা হয়েছে। একদিকে যখন ম্যারাথন গতিতেই গোটা জেলায় করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলেছে, প্রশাসনিকভাবে করোনা সংক্রান্ত বিধি মেনে চলার জন্য লাগাতার প্রচার চালানো হলেও বাস্তবে এই সংক্রমণ নতুন করে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে প্রশাসনের কাছে।