মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে রাস্তার হাল বেহাল, ভয়াবহ পরিস্থিতি কৃষক সেতু সংলগ্ন রাস্তার

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: বর্ষা নামার আগেই পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলার সমস্ত রাস্তাঘাট মেরামতির আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতির মধ্যেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জেলা প্রশাসনগুলিকে করোনা বিধি মেনেই বিবিধ উন্নয়ন মূলক কাজ দ্রুত চালু করার নির্দেশও দিয়েছিলেন। একইসঙ্গে প্রতিটি জেলার রাস্তাঘাটের অবস্থা, সেগুলি মেরামত এবং প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায় একটি করে নতুন রাস্তা তৈরীরও নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে খোদ রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ জেলা পরিষদে রাস্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বৈঠকও করেন। ইতিমধ্যে বর্ষাও শুরু হয়ে যায়।
ফলে জেলার মূল সড়কগুলির বেহাল দশা একটু একটু করে ফুটে উঠতে শুরু করে। কার্যত রাস্তাগুলি চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে বর্ধমান কাটোয়া রোডের বেহাল অবস্থা নিয়ে সম্প্রতি জেলা যুব কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিক্ষোভও দেখানো হয়। অপরদিকে, প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার চলছে বর্ধমান আরামবাগ রোডের দামোদর নদের ওপর কৃষক সেতু দিয়ে। খোদ কৃষক সেতুর উপর রাস্তার দুদিকে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯৭৮ সালে তৎকালীন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশংকর রায়ের আমলে ভূমি রাজস্ব মন্ত্রী বিনয় চৌধুরী এই সেতুর উদ্বোধন করেন।
উল্লেখ্য, এই সেতুই বর্ধমানের সঙ্গে বাঁকুড়া, হুগলী, মেদিনীপুর, পুরুলিয়া প্রভৃতি জেলার পাশাপাশি ভিন রাজ্যের সঙ্গেও যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা। ফলে প্রতিনিয়তই যানবাহন চলাচলের একটা প্রবল চাপ রয়েছে। ইতিমধ্যেই এই সেতুর বদলে অন্য একটি সেতু তৈরীর জন্য পরিকল্পনাও তৈরী হচ্ছে। কিন্তু তারই মাঝে চলতি সময়ে বর্ধমানের তেলিপুকুর থেকে পোলেমপুর পর্যন্ত রাস্তার বেহাল অবস্থা নিয়ে আতংকে পড়েছেন যাত্রীরা। প্রতিদিনই এই রাস্তায় ছোটবড় দুর্ঘটনাও লেগে রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আসিরুদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, প্রতিদিন হাজার হাজার ভারী পণ্যবোঝাই গাড়ি যাতায়াত করছে এই রাস্তার ওপর দিয়ে। চলে বর্ধমান থেকে প্রায় ২৫০ যাত্রীবাহী বাস ছাড়াও ছোটবড় গাড়ি। এদিকে, চলতি সময়ে নিম্নচাপের ফলে লাগাতার বৃষ্টিতে রাস্তার পিচ উঠে জায়গায় বড় বড় গর্ত তৈরী হয়েছে। বিশেষ করে রাতের দিকে এই গর্তে পড়ে দুর্ঘটনাও ঘটছে। অথচ এই রাস্তার ওপর দিয়েই কার্যত প্রতিদিন বিধায়ক থেকে জেলার সভাধিপতি শম্পা ধাড়াও যাতায়াত করছেন। সাধারণ মানুষ চাইছেন দ্রুত রাস্তা মেরামত করা হোক। নাহলে যে কোনোদিন ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটার আশংকা দেখা দিয়েছে।
এদিকে, এব্যাপারে খোদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার জেলার ২৩টি ব্লকেই ৩০ লক্ষ টাকা করে রাস্তার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। তিনিও জানিয়েছেন, বর্ধমান আরামবাগ রোডের এই রাস্তা খারাপের বিষয়টি নিয়ে পূর্ত দপ্তরকে জানানো হয়েছে। রাস্তাগুলিকে দ্রুত মেরামত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, তেলিপুকুর থেকে পোলেমপুর পর্যন্ত রাস্তাকে বৃহস্পতিবার থেকেই মেরামতের কাজ শুরু করার জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তিও জারী করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই রাস্তা মেরামতের জন্য বৃহস্পতিবার থেকেই যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

Recent Posts