বিজ্ঞাপন
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,মেমারি: ত্রাণ বিলি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ পেলে কড়া ব্যবস্থা নেবার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। কোনোভাবেই ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না বলেও হুঁশিয়ারী দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই রাজ্যের প্রায় ৬০জন তৃণমূল নেতাকে দুর্নীতি ও অনৈতিক কাজের দায়ে শোকজও করা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪পরগণা সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভও চলছে। আর তারই মাঝে পূর্ব বর্ধমানের মেমারী থানার দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শিখা রায়ের বিরুদ্ধে ত্রাণ সহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন খোদ পঞ্চায়েতেরই নির্বাচিত সদস্যরা।
একইসঙ্গে জেলাশাসকের কাছে তাঁরা প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। জেলাশাসক কে লেখা আবেদনে সরাসরি তাঁরা জানিয়েছেন, যদি প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হয় তাহলে তাঁরা পদত্যাগ করবেন। এমনকি জেলাশাসককে লেখা আবেদনে খোদ উপপ্রধান সহ ১৪জন স্বাক্ষর করেছেন। অভিযোগে পঞ্চায়েত সদস্যরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তাঁদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই নিজের ইচ্ছামত কাজ করে চলেছেন। এমনকি পঞ্চায়েত সদস্যদের ন্যূনতম সম্মানও দেওয়া হয়না। কোনোরকম আলোচনা ছাড়াই গুরুত্বপূর্ণ একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে কার্যত একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছেন প্রধান।
শুধু তাইই নয়, অভিযোগকারী পঞ্চায়েত সদস্যরা জানিয়েছেন, তাঁদের বাদ দিয়ে বিরোধী মানুষকে নিয়ে প্রধান শিখা রায় কাজ করায় তাঁরা কার্যত অপদস্থ হচ্ছেন প্রতি পদে পদে। আমফানে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থদের বঞ্চিত করে অন্যদের ত্রাণ বিলি করা হয়েছে। এমনকি প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থদের নামের তালিকা বাদ দিয়ে ভূয়ো তালিকা পাঠানো হয়েছে বিডিও অফিসে। এছাড়াও মেমারীর বিধায়ক নার্গিস বেগম আমফান ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য যে ত্রিপল দিয়েছিলেন সেই ত্রিপল প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থদের না দিয়ে চরম দুর্নীতি করা হয়েছে।
এছাড়াও পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ফুড কুপন নিয়েও চরম দুর্নীতি করেছেন প্রধান। সরকারী নির্দেশে এলইডি লাইট এবং ঘাট নির্মাণ নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হলেও জোর করে সেই কাজ করছেন প্রধান। এমনকি ঠিকাদারদের নিয়েও দুর্নীতি করছেন তিনি। একাধিক এই ধরণের কাজ করায় পঞ্চায়েতের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। একইসঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্য হওয়ায় তাঁরাও নানান ধরণের প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছেন। এমতবস্থায় অবিলম্বে ওই প্রধানের বিরুদ্ধে হয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক অথবা তাঁদের পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করা হোক। এদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
যদিও এব্যাপারে দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শিখা রায় সমস্ত অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত ও প্রধান কে অপদস্ত করে সরকারের নাম বদনাম করার সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র করছেন দলেরই কিছু নেতা। এসবের বিরুদ্ধে নেতৃত্বের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে।