মেমারীর সরডাঙা রেলগেট বন্ধ হচ্ছে না, বন্ধ হবে মোহনপুর রেলগেট – সুনীল মণ্ডল

Souris  Dey

Souris Dey

বিজ্ঞাপন
ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,মেমারি: পূর্ব বর্ধমানের মেমারী ১নং ব্লকের সরডাঙা রেলগেট বন্ধ করে দেবার রেলের নির্দেশ নিয়ে গ্রামবাসীদের আন্দোলনের সফলতা কি মিলতে চলেছে ? খোদ রেলের স্ট্যাণ্ডিং কমিটির সদস্য বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডল তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন। 
উল্লেখ্য, বর্ধমানের মেমারী ১ ব্লকের চাঁচাই রেল ষ্টেশন সংলগ্ন সরডাঙা রেলগেটকে (৬৩ – সি -ই -২) রেল দপ্তরের পক্ষ থেকে পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় গোটা এলাকায়। রেল দপ্তরের এই ঘোষণায় সরডাঙা, চাঁচাই প্রভৃতি গ্রামের মানুষজন ধারাবাহিক বিক্ষোভ শুরু করেন রেলগেট এলাকায়। 
চাঁচাই গ্রামের বাসিন্দা মান্না মিত্র জানিয়েছেন, হঠাতই তাঁরা দেখেন রেল দপ্তর থেকে নোটিশ দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয় ১৩ ফেব্রুয়ারী থেকে এই রেলগেট বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এই নোটিশ দেখার পরই গ্রামবাসীরা প্রতিবাদ জানান। রেল দপ্তরের এই নির্দেশিকাকে তুলে নেবার জন্য ইতিমধ্যেই পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সহ সমস্ত স্তরে লিখিতভাবে আবেদন জানিয়েছেন। গোটা ঘটনা জানানো হয়েছে জেলাশাসকের কাছেও। কিন্তু এরই মাঝে হঠাতই গত ২০ ফেব্রুয়ারী রেলদপ্তর এই রেলগেটকে পাকাপাকিভাবে বন্ধ করার জন্য কাজ শুরু করে। 
বিষয়টি গ্রামবাসীদের নজরে আসার পরই শুরু হয় ২৪ঘণ্টা ব্যাপী ধর্ণা। রেলগেটের পাশেই এখনও চলছে এই ধর্ণা মঞ্চ। এদিকে, গ্রামবাসীদের এই বিক্ষোভের জেরে রেলের লোকজন যাঁরা মেশিনপত্র নিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারী পাকাপাকিভাবে রেলগেট বন্ধ করার জন্য এসেছিলেন তাঁরা গ্রামবাসীদের বাধায় পিছু হটেন। ফলে গ্রামবাসীরা আন্দোলনে বাড়তি অক্সিজেন পেয়ে যান। এদিকে, গ্রামবাসীদের এই বিক্ষোভের খবর পেয়ে সরডাঙা রেলগেট পরিদর্শনে যান বর্ধমান পূর্ব লোকসভা আসনের তৃণমূল সাংসদ তথা রেল স্ট্যাণ্ডিং কমিটির সদস্য সুনীল মণ্ডল। 
গ্রামবাসীরা রেল দপ্তরের এই নির্দেশকে তুলে নেবার জন্য তাঁর কাছে আবেদনও রাখেন। পাশাপাশি তাঁরা যতক্ষণ রেল এই নির্দেশ তুলবেন ততক্ষণ তাঁরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অন্যদিকে, গ্রামবাসীদের এই আন্দোলনের বিষয়ে সুনীল মণ্ডল জানিয়েছেন, গ্রামবাসীদের এই আন্দোলনের বিযষয়টি তিনি রেল দপ্তরকে জানিয়েছেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সরডাঙা রেলগেটকে আপাতত বন্ধ করা হচ্ছে না। যেহেতু এই রেলগেটের ওপর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনার রাস্তা গেছে তাই আপাতত এই রেলগেট বন্ধ করা হচ্ছে না। পরিবর্তে ৬২নং রেলগেট তথা মোহনপুর রেলগেটটিকে বন্ধ করা হবে। 
সুনীলবাবু জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই হাওড়া – দিল্লী দ্রুতগামী রেল পরিষেবা চালু হচ্ছে। তার আগে প্রহরীবিহীন রেলগেটগুলিকে বন্ধ করা হচ্ছে। যাতে রেল ও যাত্রী পরিষেবায় কোনো সমস্যা না হয়। মেমারীর পাল্লা পল্লীমঙ্গল সমিতির সম্পাদক সন্দীপন সরকার জানিয়েছেন, সরডাঙা রেলগেট বন্ধ করে রেল লাইনের পাশ দিয়ে একটি রাস্তা রেল দপ্তর করে দিয়েছে মশাগ্রাম রেলগেট পর্যন্ত। কিন্তু সেই রাস্তাও সুরক্ষিত নয়। ওই রাস্তাটি সরু এবং জলে ডুবে যায়। ফলে গ্রামবাসীদের কাছে তা সুবিধার জায়গায় অসুবিধাই বেশি হবে। গ্রামবাসীদের প্রায় ৫ কিমি রাস্তা ঘুরে যেতে হবে। 
এদিকে, আন্দালনরত গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, কোনো মৌখিক প্রতিশ্রুতি নয়, তাঁরা লিখিতভাবেই রেল দপ্তরের কাছ থেকে এই রেলগেট বন্ধ না করার বিষয়টি পেতে চান। আর যতদিন না তা পাচ্ছেন ততদিন তাঁদের আন্দোলন চলতেই থাকবে। মান্নাবাবু জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই তাঁরা গ্রামবাসীদের নিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে এব্যাপারে তাঁদের অসুবিধার কথা তুলে ধরতে যাবেন। তার প্রস্তুতি চলছে।

আরো পড়ুন