মেয়াদ উত্তীর্ণ কাগজ নিয়েই বছরের পর বছর চলছে সরকারি বাস, হেলদোল নেই পরিবহন সংস্থার, উদ্বেগে যাত্রীরা

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: কলকাতা থেকে আসানসোল যাবার পথে সোমবার সকালে পালশিটে ২নং জাতীয় সড়কে কানাইডাঙ্গা ব্রিজের গার্ডওয়াল ভেঙে যাত্রী সহ দক্ষিণবঙ্গ পরিবহন সংস্থার একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার নিচে খালে পড়ে যায়। অভিযোগ চালকের অসতর্কতায় এই দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনায় কমবেশি সাতজন যাত্রী গুরুতর জখম হয়। জখম যাত্রীদের উদ্ধার করে প্রথমে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে অনাময় সুপার স্পেশালিটি হসপিটালে স্থানান্তর করা হয়। ভয়াবহ এই বাস দুর্ঘটনায় সৌভাগ্যক্রমে কোনো প্রাণহানির মতো ঘটনা না ঘটলেও দক্ষিণবঙ্গ পরিবহন সংস্থার বিরুদ্ধে একাধিক গাফিলতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠে এসেছে। 

বিজ্ঞাপন

দুর্ঘটনার পর সরকারি এম পরিবহন অ্যাপস-এ দেখা গেছে যে ডব্লিউ বি ৩৯-বি ৪৫৯০ নম্বরের বাসটির ইন্সুরেন্স ফেল হয়ে গেছে প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে। ফিটনেস সার্টিফিকেটের মেয়াদ শেষ হয়েছে প্রায় আড়াই বছর আগে। কোনোটির ২০১৮ সালে আবার কোনোটির ২০১৯সালে শেষ হয়ে গেছে। তারপরেও দিব্যি বছরের পর বছর ধরে হাজার হাজার যাত্রী নিয়ে ঝুঁকির পরিবহন করে যাচ্ছে বাস টি। হুঁশ নেই কর্তৃপক্ষের। এদিকে খোদ রাজ্য সরকার যখন রাজ্য জুড়ে সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে বছর ভর সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে তখন খোদ সরকারি বাসের কাগজপত্রই আপ টু ডেট না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রশ্ন উঠছে খোদ সরকারি বাসের কাগজপত্রের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাবার পরও এই ধরনের কত বাস এই মুহূর্তে রাজ্য জুড়ে যাত্রী পরিবহণ করেই চলেছে। 

অভিযোগ, দক্ষিণবঙ্গ পরিবহন সংস্থার উদাসীনতাতেই দিনের পর দিন মেয়াদ উত্তীর্ণ কাগজে চলছে বাস পরিষেবা। এই সরকারি বাস গুলিতে প্রত্যেকদিন শয়ে শয়ে মানুষ গাঁটের কড়ি খরচ করে জীবনের ঝুকি নিয়ে যাতায়াত করছে। তারা জানেনই না একাধিক বাসের আদপেই কোন ইন্সুরেন্স ও ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই, এর ফলে বাস গুলি দূর্ঘটনাগ্রস্থ হলে যাত্রীরা কার্যত জীবন বিমার সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হবেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পরিবহন দপ্তর ও দক্ষিণবঙ্গ পরিবহন সংস্থার উদাসীনতায় শয়ে শয়ে চলা সরকারি বাসের কোন রকম ফিটনেস পরীক্ষা হয় না, দেখা হয় না কোন কাগজপত্রও।

সাধারণ মানুষ মোটা টাকা খরচ করে সরকারি বাসে যাতায়াত করলেও তারা জানেনই না সরকারি বাসে তাদের জীবন কতটা সুরক্ষিত। তার হাতেনাতে প্রমান হল এদিনের ভয়াবহ বাস দূর্ঘটনা। প্রসঙ্গত, সোমবার ২নং জাতীয় সড়কের পালশিটে দূর্ঘটনাগ্রস্থ হয়েছে দক্ষিনবঙ্গ পরিবহন সংস্থার একটি বাস। এই দূর্ঘটনায় আহত হয়েছেন প্রায় সাতজন। তার মধ্যে বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের প্রথমে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে তাদের স্থানান্তরিত করা হয় অনাময় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। বর্তমানে তাদের চিকিৎসা চলছে। 

এদিকে এই দুর্ঘটনা ও সরকারি বসের বিভিন্ন সার্টিফিকেটের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও কিভাবে যাতায়াত করছে সেই প্রসঙ্গে দক্ষিনবঙ্গ পরিবহন সংস্থার চেয়ারম্যান সুভাষ মন্ডল কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ” সরকারি বসের ইন্সিউরেন্স ফেল হয়না, আর ফিটনেস সার্টিফিকেট তাঁরা অন্যভাবে করিয়ে নেয়। তবে এদিন দুর্ঘটনার পর অতি দ্রুততার সঙ্গে আহত যাত্রীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। একজন যাত্রীর চোট গুরুতর ছিল। তাঁকে অনাময় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আরো পড়ুন