মেশিন দিয়ে বরো ধান ঝাড়ার পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ বিপর্যয় নেমে আসছে গ্রামে, সচেতন করতে মাঠে নামছে প্রশাসন

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: ইতিমধ্যেই জেলা জুড়ে বরোর ধান ওঠার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে পুরোদমেই। অশনি-র জেরে কিছুটা হলেও তাড়াতাড়ি ধান কেটে মাঠ থেকেই ঝেড়ে বস্তা বন্দী করে নিচ্ছেন কৃষকরা। আয়লা, ফনি-র মতন ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হবার সম্ভাবনা থেকেই কৃষি দপ্তরের নির্দেশেই আরও সচেতন হয়েই এই কাজ করছেন চাষীরা। যাতে মাঠের ফসল নষ্ট হবার আগেই ঘরে তুলতে পারেন। কিন্তু এই তাড়াতাড়ি ধান কেটে সেই ধান বস্তা বন্দী করতে গিয়ে সমস্যাও ডেকে আনছেন তারা। হপার যন্ত্রের সাহায্য ধান কেটে সেই ধান ঝাড়ার পরে খড়ের অংশ মেশিন থেকে বেড়িয়ে ছিটকে গিয়ে আটকে যাচ্ছে ইলেকট্রিকের তারে। এতে সমস্যা হচ্ছে বৃষ্টিতে ভিজে সেই খড়ের অংশ দুটি তারের মধ্যে দুরত্ব কমিয়ে দিচ্ছে। ফলে অনেক সময়েই শর্টসার্টিক হয়ে এলাকার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে ট্রান্সফরমারও পুড়ে যাচ্ছে। 

বিজ্ঞাপন
সেহারাবাজারের বিদ্যুৎ দপ্তরের স্টেশন ম্যানেজার জগন্নাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘ওই মেশিন দিয়ে মাঠের মধ্যেই ধান ঝাড়ছেন কৃষকরা। এতে সমস্যা হচ্ছে দ্রুত গতিতে খড়ের অংশ তারে জড়িয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টিতে ভিজে গেলে এগুলো শক্ত হয়ে যাচ্ছে আরও। এতে দুটো তারের মধ্যে যে দূরত্ব সেটা কমে যাচ্ছে অনেকটা। ফলে তারে তারে ঘষা লেগে শর্ট সার্কিট হয়ে কখনও এলাকার বিদ্যুৎ বিপর্যয় হচ্ছে কখনও ট্রান্সফরমারেও সমস্যা হচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যেই এলাকার জনপ্রতিনিধি থেকে বিডিও অফিসেও জানিয়েছি। বিদ্যুৎ দপ্তরের পক্ষ থেকেও সচেতনার প্রচার চালানো হবে।’ 
খন্ডঘোষ ব্লকের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অপার্থিব ইসলাম বলেন, ‘কিছু মানুষের ভুলের জন্য বিদ্যুৎ দপ্তরের লোকেরা অকারণে গালমন্দ খাচ্ছে গ্রামের মানুষের কাছে। মাঠে ধান ঝাড়ার কারনে খড় তারে লেগে থাকছে। সেখান থেকে শর্ট সার্কিট হয়ে বিদ্যুৎ বিপর্যয় হচ্ছে। আমরাও প্রচার করছি। বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীদের সঙ্গেও এলাকায় গিয়ে তাঁদের সহযোগিতায় করছি।’ খন্ডঘোষ এলাকার  জেলা পরিষদের সদস্য বিশ্বনাথ রায় বলেন, ‘চাষিরা দুর্যোগের আশঙ্কায় তাড়াতাড়ি ফসল ঘরে তুলতে চাইছেন সেটা ভালো। আমরা চাষিদের অনুরোধ করছি ধান ঝাড়ার জন্য হপার মেশিন যেখানে দাঁড় করানো হচ্ছে তার পিছনের দিকে যাতে কোন তার না থাকে সেটা দেখতে। কারন এতে যে বাস্তব সমস্যা হচ্ছে তাতে সাধারণ অনেক মানুষ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছেন। মাঠের যেখান দিয়ে তার গিয়েছে সেটা ছেড়ে অন্য কোন জায়গায় ধান ঝাড়তেই পারেন তারা।’
খন্ডঘোষ ব্লকের বিডিও সত্যজিৎ কুমার বলেন, ‘আমরাও পঞ্চায়েত গুলোকে বলেছি। তারা যাতে স্থানীয়ভাবে এই সমস্যার বিষয়টি দেখে মানুষকে সচেতন করেন।’ রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘রাজ্যে বিদ্যুতের কোন সমস্যা। চাষিদের এই ভুলে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিপর্যয় হচ্ছে ঠিকই, তবে সেখানেও দ্রুত আমাদের কর্মীরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনছেন। এ সমস্যা নিয়ে সচেতনার প্রচারে নামবো আমরা। আমাদের কর্মীরা সব সময়ই মানুষক কে সঠিক পরিষেবা দিচ্ছেন।’

আরো পড়ুন