মোদি বেইমান প্রধানমন্ত্রী, ওঁকে বিশ্বাস করবেন না – মেমারীর জনসভায় অনুব্রত মণ্ডল

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,মেমারী: ‘কে এনকাউণ্টার করবে আর কে করবে না- সেটা ইতিহাস বলবে। আমি এনকাউণ্টারকে ভয় পাই না। দেখা যাবে ২ তারিখের পর। খেলা হবে। বীরভূমে কেউ খেলার লোক আছে নাকি?’ সোমবার দুপুরে বর্ধমানের মেমারীতে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এভাবেই নিজের মত ব্যক্ত করে গেলেন তৃণমূলের বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। দুদফার নির্বাচনে বিজেপি জয়লাভের স্বপ্ন দেখছে – এই প্রশ্নে অনুব্রতের সাফ জবাব – ‘পাগলে কি না বলে, ছাগলে কিনা খায়।’

সোমবার মেমারীর আমোদপুরে মেমারীর তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী মধুসূদন ভট্টাচার্যের সমর্থনে জনসভায় বক্তব্য রাখতে এসে অনুব্রত মন্ডল বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট না দিলে রাজ্যটা শেষ হয়ে যাবে, মনে রাখবেন। তাই মধুদাকে ভোট দিতে ভুলবেন না। এদিন এই জনসভায় বক্তব্য রাখতে এসে তিনি জোড় হাত করে ভোটারদের কাছে আবেদন করে বলেন, নিজেদের মধ্যে কোনো বিবাদ থাকলে তারজন্য দলের কেউ ক্ষতি করবেন না।’ এদিন শুরু থেকে বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদিকে একচেটিয়া আক্রমণ করেন অনুব্রত মণ্ডল। এদিন এই জনসভায় মেমারীর তৃণমূল প্রার্থী মধুসূদন ভট্টাচার্য ছাড়াও হাজির ছিলেন তৃণমূল যুব জেলা সভাপতি রাসবিহারী হালদার সহ জেলা নেতৃত্বরা।

এদিন অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘অনেকে মমতা বন্দোপাধ্যায়কে নিয়ে কটুকথা বলছেন। বাংলার মানুষ এসব মানবে না। মমতা বন্দোপাধ্যায় আন্দোলনের প্রতীক। বাংলার মানুষের জন্য তাঁর লড়াই সংগ্রাম সবাই মনে রেখেছেন। যাঁরা তাঁর সম্পর্কে কটুকথা বলছেন তাঁদের লজ্জা করে না। মোদি তুমি রাখাল বাগালের থেকেও খারাপ। দিদির নামে টোন কাটছো – লজ্জা করে না। প্রধানমন্ত্রীর মুখের ভাষণ এটা? তিনি বলেন, কি করেছে মোদি বাংলার জন্য। যারা ৩৪ বছর রাজত্ব করেছে – তারাই বা কি করেছে? সমালোচনা করতে লজ্জা করে না। গোটা বাংলাকে সাজিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী চাল, ডাল, তেল, ছোলা, আটা সব দিয়েছেন। আর মোদি তুমি কি দিয়েছো – বাবার মাথা। মানুষকে মিথ্যা বলে ভোট চাইছে লজ্জা করে না। ভারতবর্ষে পেট্রোলের দাম ১০০ টাকা আর গোটা বিশ্বে ২৮টাকা। পদত্যাগ করা উচিত মোদির। কিন্তু ওরা লোভী। পদত্যাগ করবে না। ২০১৪ সালে যা কথা দিয়েছিলে একটাও পালন করো নি। তুমি বেইমান প্রধানমন্ত্রী।’

এদিন অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘কেউ যদি বলেন, মমতা বন্দোপাধ্যায় বাংলার জন্য কিছু করেনি তাহলে তৃণমূল ছেড়ে দেবো আমি। আজ ত্রিপুরায় ১০ হাজার শিক্ষকের চাকরি খেয়েছো, ডি গ্রুপ আর সি গ্রুপের চাকরিকে ঠিকাদারের হাতে তুলে দিয়েছো। তোমরা করবে সোনার বাংলা ? আমফানে বললে ১ হাজার কোটি টাকা দিয়েছো। তোমার বাবার জমিদারের টাকা ? প্রতিবছর ৭৫ হাজার কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছো তোমরা। বাংলা ৮২ হাজার কোটি টাকা পায়। তা তো দিচ্ছ না। তুমি বেইমান প্রধানমন্ত্রী। তুমি এনআরসি করবে আর আমরা আঙুল চুষবো। আমরা আন্দোলন করতে ভয় পাই না। পিছিয়ে যাই না। কার বাড়িতে ৭১-৭২ সালের দলিল আছে? কোথায় পাবে গরীব মানুষরা সেই দলিল?’

অনুব্রত মন্ডল এদিন বলেন, ‘পাঁচ বছরে ইউপি, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, আসাম, উত্তরাখন্ড কে সোনার বানাতে পারোনি, আর এখন বাংলাকে সোনার বাংলা বানিয়ে দেবো বলে ভোট চাইতে এসেছো। এই সব ভাওতাবাজি এই বাংলার মানুষ শুনবে না।’ তিনি বলেন, ‘মোদি

ভয়ংকর জিনিস। মোদিকে বিশ্বাস করবেন না। ভুল হয়ে যাবে। ওর দাড়ি যত বাড়ছে ততই পেট্রোল ডিজেলের দাম বাড়ছে। ও একটা ভয়ংকর সাধু। সিপিএম আমলে কোনো বাড়িতে সুন্দরী মহিলা থাকলে তাদের জিভ দিয়ে লালা পড়ত। সেই অত্যাচারের দিন মনে আছে?’ অনুব্রত বলেন, সেদিন তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সিপিএমকে হঠাবেন বীরভূম থেকে। এদিন তিনি বলেন, তিনি একজন কর্মী। আর তিনি কর্মী হিসাবেই থাকতে চান।