যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে কঠিন প্রতিকূলতা অতিক্রম করে বর্ধমানে ফিরল আয়ুষী, খুশির হাওয়া

Souris  Dey

Souris Dey

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,বর্ধমান: যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে এখনও আটকে ভারত সহ বিশ্বের বহু দেশ থেকে পড়াশোনা করতে যাওয়া ছাত্রছাত্রীরা। স্বাভাবিকভাবেই ঘরের ছেলে মেয়েদের সুস্থ অবস্থায় ঘরে ফিরে আসার অধীর অপেক্ষায় প্রতিমুহূর্ত কাটছে তাদের পরিবারের আপনজনদের। এরই মাঝে বেশ কিছু পড়ুয়া নানান প্রতিকূলতা পার করে দেশে ফিরে গিয়েছে। নিজের নিজের দেশে ফিরে আসার চেষ্টায় রয়েছে আরো বহু পড়ুয়া। ২মার্চ ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ড, ইস্তাম্বুল, দিল্লি হয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে ফিরে এসেছে বর্ধমানের উল্লাস উপনগরীর বাসিন্দা আয়ুষী আগরওয়াল। 

বিজ্ঞাপন

 কলকাতা বিমানবন্দরে আয়ুষী কে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে স্বাগত জানান হয়। জেলাশাসক, পূর্ব বর্ধমানের পক্ষ থেকে জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা আধিকারিক ও পরিবারের তরফে আয়ুষীর বাবা সুশীল কুমার আগরওয়াল ও মা সুইটি আগরওয়াল আয়ুষীকে বিমান বন্দরে স্বাগত জানান। আয়ুষীকে এরপর বর্ধমানের উল্লাসের তার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সেখানেও পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্বর্ধনা জানানো হয়।

 ইউক্রেনের টার্নোপিল মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির প্রথম বর্ষের ছাত্রী বর্ধমানের উল্লাস উপনগরির বাড়িতে বসে আয়ুষী এদিন জানিয়েছে, গত সাতদিনে তাকেও প্রতি মুহূর্তে নিজের সঙ্গে রীতিমত যুদ্ধ করে যেতে হয়েছে। শারীরিক আর মানষিকভাবে সে কার্যত বিপর্যস্ত। আয়ুষী জানিয়েছে, যুদ্ধবিদ্ধস্ত ইউক্রেন থেকে নিজের দেশে ফেরার পথ রীতিমত আশঙ্কাবহুল ছিল। গত ২৫ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের টার্নোপিল শহর থেকে তাদের এজেন্ট গাড়ি করে বর্ডারে নিয়ে আসার মাঝপথে তাদের ছেড়ে দেয়। সেখান থেকে অন্যান্য দেশের বহু পড়ুয়া এমনকি ইউক্রেনের বহু বাসিন্দারা প্রায় ৫০কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে ইউক্রেনের সীমান্তে পৌঁছতে সক্ষম হয়। 

যদিও সেখান থেকে ভারতীয় দূতাবাসের সহায়তায় গাড়িতে পোল্যান্ডের ভারতীয় দূতাবাসের অধীনে তাদের সমর্পণ করা হয়। আয়ুষী জানিয়েছে, পোল্যান্ডে ভারতীয় দূতাবাস তাদের খুবই সাহায্য করেছে। ২৭তারিখ ভারতে ফেরার বিমানে ওঠে আয়ুষী। মাঝে ইস্তামবুলে বিমান অবতরণ করলেও তাদের নামতে হয়নি। ২মার্চ সকালে সে দিল্লি বিমানবন্দরে নামে। ওইদিনই রাতে দিল্লী থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা নাগাদ অবশেষে কলকাতা বিমানবন্দরে নেমে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। 

যদিও এদিন বর্ধমানে নিজের বাড়িতে বসে আয়ুষী বলেন, তার শরীরে, পায়ে এখনও যন্ত্রণা হচ্ছে। তবে সব বাধা অতিক্রম করে অবশেষে মা বাবার কোলে ফিরতে পেরে সব কিছু ভুলতে চাইছে সে। এদিকে সদ্য শুরু হওয়া জীবনের উচ্চ শিক্ষার গতিপথ কি হবে – এই প্রশ্নে আয়ুষীর মা সুইটি আগরওয়াল কিন্তু মেয়েকে ফিরে পাওয়াকেই ভগবানের আশীর্বাদ বলে জানিয়েছেন। বাকি আগামিদিনে ভাবনাচিন্তা করে ঠিক করবেন বলেই মত প্রকাশ করেছেন।

আরো পড়ুন