ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,জামালপুর: পূর্ব বর্ধমান জেলায় ফের ওভারলোডেড বালির গাড়ি উল্টে বালি চাপা পড়ে একই পরিবারের তিনজনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় রণক্ষেত্রের চেহারা নিল জামালপুরের মুদিপুর গ্রাম। আশংকাজনক অবস্থায় আরো একজনকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। মৃতের সংখ্যা নিয়ে অবশ্য বিভ্রান্তি রয়েছে। এই ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা বেশ কয়েকটি বালির গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার খবর পেয়ে জামালপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে উত্তেজিত জনতা পুলিশ কেই আক্রমণ করে। রীতিমতো পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় গ্রামবাসীদের। এরপর পুলিশের গাড়িও ভাঙচুর করে উত্তেজিত গ্রামবাসীরা। এমনকি কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের একপ্রকার বন্দি করে রাখে তারা বলেও অভিযোগ। গ্রামবাসীদের ছোঁড়া ইটের আঘাতে কয়েকজন পুলিশ কর্মী আহত হয়ে জামালপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি।
এই ঘটনার খবর পেয়ে জেলা পুলিশের বিশাল বাহিনী মুদিপুর গ্রামের দিকে রওনা দেয়। যদিও বিশেষ সূত্রে জানতে পারা গেছে, গ্রামে ঢোকার সবদিকের রাস্তা কেটে দেওয়ায় পুলিশের গ্রামে ঢুকতে সমস্যা তৈরি হয়েছে। এদিকে এই ঘটনায় গোটা এলাকা জুড়ে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের প্রথম রাতেই গলসির শিকারপুর এলাকায় ওভারলোডেড বালির গাড়ি রাস্তার পাশে ঝুপড়ি বাড়ির উপর উল্টে যাওয়ায় একই পরিবারের পাঁচ জন মারা গিয়েছিল। সেই ঘটনার পর শিকারপুর সহ আশপাশের বেশ কয়েকটি বালি খাদানে উত্তেজিত গ্রামবাসীরা তান্ডব চালিয়ে প্রচুর মেশিনে আগুন ধরিয়ে দেয়। কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছিল সেই ঘটনায় বলে বালি ঘাট মালিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরে মৃতদের পরিবারবর্গের হাতে আর্থিক ক্ষতিপূরণও তুলে দেওয়া হয়।
পাশপাশি, জেলা প্রশাসন থেকে রাতারাতি ওই এলাকার ৮টি বালি খাদান কে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধও করে দেওয়া হয়েছিল। তবে বৃহস্পতিবার জামালপুরের মুদিপুরে ফের সেই প্রায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ার পর স্থানীয় বালি খাদানের মালিক থেকে শ্রমিকরা ফের ঘোরতর সংকটের মুখোমুখি হওয়ার আতংকে ভুগতে শুরু করেছে বলে তাদের একাংশ জানিয়েছেন। এদিন রাত পর্যন্ত গ্রামবাসী সূত্রে জানতে পারা গেছে, তাদের দাবি অবৈধ ভাবে বালি নিয়ে লরি এবং ট্রাক যেভাবে প্রতিদিন গ্রামের ভিতর দিয়ে যাতায়াত করে তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। অবৈধ বালি খাদানের কারবার বন্ধ করাতে হবে। মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।