ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: উৎপাদন স্বাভাবিক। যোগানও পর্যাপ্ত, কিন্তু চাহিদা নেই। ফলে হু হু করে কমতে শুরু করেছে সবজির দাম। আর এই পরিস্থিতিতে ঘোর বিপাকে পড়েছে পাইকারি সবজি ব্যবসায়ীরা। অবিক্রিত সবজি গুদামে পচতে শুরু করেছে। আর এই পরিস্থিতিতে আশঙ্কার কথা শুনিয়েছেন পূর্ব বর্ধমান চেম্বার অফ ট্রেডার্স এর সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রবিজয় যাদব। তিনি জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে খুব শীঘ্রই সবজির দাম লাগামছাড়া হয়ে যেতে পারে। তবে কালোবাজারি রুখতে সংগঠন সক্রিয় রয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
তিনি জানিয়েছেন, লকডাউনের নিয়ম মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার বিভিন্ন বড় হোলসেল সবজি বাজার গুলোকে নয় বন্ধ রাখা হয়েছে, নয়তো সপ্তাহে একদিন করে খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বর্ধমান শহরের বিভিন্ন বাজারকে ইতিমধ্যে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে বেশিরভাগ সাধারণ মানুষ বাজারমুখো হচ্ছেন না। ফলে যে সমস্ত সবজি বিক্রেতারা একল্পতে ৪০ কেজি সবজি কিনতেন, তাঁরাই মাত্র ৫ কেজি কিনে বাজারে বসছেন।
অন্যদিকে, আগে যেখানে ৫০থেকে ১০০জন খুচরো সবজি বিক্রেতা সবজি কিনে এলাকায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করতেন, এখন লকডাউনের ফলে অন্যান্য পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষের একাংশ প্রায় বেকার হয়ে পড়ায় তাঁরাও দু চার কিলো করে সবজি কিনে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করতে শুরু করেছেন। ফলে খুচরো সবজি বিক্রেতার সংখ্যাও একধাক্কায় তিন গুণ বেড়ে গেছে।
চন্দ্রবিজয় যাদব জানিয়েছেন, বাড়ির দরজার সামনেই সবজি বিক্রেতাকে পেয়ে যাওয়ায় এবং বাজারের দামেই সবজি কিনতে পারায় বেশিরভাগ গৃহস্থই আর বাজারের দিকে আসছেন না। পাশাপাশি, সবজি নষ্ট হয়ে যাবার ভয়ে বেশিরভাগ সবজি ব্যবসায়ীই একসঙ্গে প্রচুর মাল তুলছেন না। কিন্তু সবজির যোগান স্বাভাবিক রাখতে পাইকারি সবজি ব্যবসায়ীরা আগের মতোই মাল মজুত করতে বাধ্য হচ্ছেন। আর এখানেই দেখা দিয়েছে বিপত্তি। মাল বিক্রি না হওয়ার ফলে গুদামের জমতে শুরু করেছে। স্বাভাবিকভাবেই কাঁচা সবজি নির্দিষ্ট সময়ের পর খারাপ হয়ে যাচ্ছে। ব্যাপক লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন পাইকারি সবজি ব্যবসায়ীরা।
চন্দ্রোবিজয় জানিয়েছেন, ১০ দিন আগেও ঝিঙের কেজি প্রতি দাম ছিল ২০টাকা, সেখানে শুত্রুবার সেটাই ৬ টাকা কিলো বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি, আলু প্রতি কিলো ১৮/১৯ টাকা থেকে নেমে এসেছে ১৫ টাকায়। পিঁয়াজ প্রায় একই। পটল ৩০ টাকা থেকে নেমে হয়েছে ১৬ টাকা প্রতি কিলো। ঢেঁড়শ ২৫ টাকা ছিল কিছুদিন আগেই, শুত্রুবার সেটাই বিক্রি হয়েছে ১২ টাকায়। টমেটো ২০টাকা থেকে হয়েছে ১২/১৪ টাকা। বেগুন বিক্রি হয়েছে ১৫ টাকা প্রতি কিলো, ছিল ২০ টাকা। অন্যদিকে আদা,রসুন,লংকার দাম মোটামুটি একই আছে।