লকডাউনের মধ্যেই বর্ধমানে পুকুর থেকে প্রাচীন বিষ্ণু মূর্তি উদ্ধারের ঘটনায় আলোড়ন

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: লকডাউনের মধ্যে পুকুর থেকে প্রাচীন বিষ্ণু মূর্তি উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ালো পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারি ১ ব্লকের দুর্গাপুর অঞ্চলের চোটখন্ড গ্রামে। রবিবার সকালে গ্রামের কিছু কচিকাঁচা ওই পুকুরের মধ্যে খেলতে খেলতে হঠাৎ মাটির মধ্যে থাকা একটি পাথরের টুকরো দেখতে পায়।কৌতূহলবশত তারাই মাটি খোঁড়াখুঁড়ি করতেই বেরিয়ে আসে একটি প্রাচীন মূর্তি।
এরপর তারা এলাকার অনান্যদের খবর দেয়। গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মূর্তিটি উদ্ধার করে নিয়ে আসেন গ্রামে। এদিকে মূর্তি উদ্ধারের ঘটনার কথা মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে আশপাশ এলাকায়। প্রাচীন ওই মূর্তিটি কে দেখতে বহু মানুষ লকডাউন অমান্য করেই জড়ো হতে শুরু করেন গ্রামে। খবর দেওয়া হয় মেমারী থানায়। পুলিশ এসে পাথরের মূর্তিটি উদ্ধার করে নিয়ে থানায় নিয়ে যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লকডাউনের আগে এই জায়গায় ১০০ দিনের কাজে পুকুর খনন করা হচ্ছিল। কিন্তু লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তবে তাঁরা জানিয়েছেন,  মূর্তিটির আনুমানিক বয়স কত তা পরীক্ষার পরেই জানা যাবে। অন্যদিকে, বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ সর্বজিত যশ জানিয়েছেন, এই এলাকায় পাথরের বিষ্ণু মূর্তি উদ্ধারের ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি জানিয়েছেন, মূর্তিটি আনুমানিক একাদশ থেকে দ্বাদশ শতকের হতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। সর্বজিত বাবু জানিয়েছেন, আজ থেকে প্রায় ১০০০ বছর আগে এই অঞ্চলে কৌম প্রজাতির মানুষের বসবাস ছিল। গবেষণায় দেখা গেছে এই সমাজের মানুষেরা অপেক্ষাকৃত নিম্নবর্গের ছিল। পাশাপাশি এঁদের আরাধ্য দেবদেবী ছিলেন মনসা, শনি প্রভৃতি।
সর্বজিত বাবু জানিয়েছেন, স্বাভাবিকভাবে এই অঞ্চলে বিষ্ণু মূর্তি উদ্ধার হওয়ায় মনে করা যেতেই পারে এখানেও সমাজের উচ্চবর্গের মানুষের বসবাস ছিল। যা আজ পর্যন্ত অজানা ছিল। কারণ উচ্চর্বগের মানুষ বিষ্ণু দেবের পূজা করতেন। ফলে মূর্তি উদ্ধারের পর এখন এই  বিষয়টি গবেষণার নতুন দিক উন্মোচিত করবে বলেই জানিয়েছেন সর্বজিত যশ।  তবে গ্রামের মানুষের কথায় একটা বিষয় উঠে এসেছে যে, এই পুকুর সরকারি তত্ত্বাবধানে খননকার্য করলে হয়তো আরো কিছু অজানা তথ্য বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

Recent Posts