লরী হাইজ্যাক করে চালককে খুনের ঘটনায় দুই খুনীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিল বর্ধমান আদালত

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: লোহা ভর্তি লরী হাইজ্যাক করতে গিয়ে লরীর চালককে নৃশংস্যভাবে খুন করার ঘটনার প্রায় ৩ বছর পর অপরাধীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করলেন বর্ধমান আদালতের ফাষ্ট ট্রাক ফাষ্ট কোর্টের বিচারক দীপ্ত ঘোষ। এই মামলার সরকারী আইনজীবী শিবরাম ঘোষাল জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর দুর্গাপুরের একটি কারখানা থেকে লোহা ভর্তি করে কলকাতা যাচ্ছিলেন লরীর চালক পিণ্টু যাদব এবং তাঁর ভাই বিশ্বকর্মা যাদব। এই সময় মিল গেটের বাইরে প্রথমে একজন এবং পরে রাস্তায় আরও ২জন নিজেদের চালক পরিচয় দিয়ে কলকাতা যাবার জন্য ওই গাড়িতেই ওঠে।

 এরপর ওইদিন রাত্রে ২নং জাতীয় সড়কে মশাগ্রামের কাছে গাড়ি দাঁড় করিয়ে বিশ্বকর্মা যাদবকে সঙ্গে নিয়ে একটি হোটেলে যান। সেই সময় গাড়িতে ছিলেন গাড়ির চালক পিণ্টু যাদব এবং আরও ২জন। এদিকে, হোটেলে কিছুক্ষণ সময় কাটালেও তারা কোনো কিছু না কিনেই ফিরে আসেন। কিন্তু বিশ্বকর্মা যাদব যখন গাড়িতে উঠতে যায় আচমকাই তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে গাড়ি নিয়ে চম্পট দেয় অপরাধী ৩জন। আর সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পরই গাড়ির ভেতর পিণ্টু যাদবকে মাথায় লোহার রড দিয়ে মেরে রাস্তার ধারে নয়ানজলিতে তার দেহ ফেলে দিয়ে গাড়ি নিয়ে পালায় তারা।

কিন্তু জামালপুর থেকে তারা ২নং জাতীয় সড়ককে এড়িয়ে জামালপুর গ্রামের মধ্যে দিয়ে যাবার সময় গ্রামীণ রাস্তার একটি বাঁকে গিয়ে গাড়ি আটকে যায়। গ্রামবাসীরা সেখানে আসার আগেই অপরাধীরা পালিয়ে যায়। এরপরই পুলিশ তদন্তে নামে। উদ্ধার হয় পিণ্টু যাদবের মৃতদেহ এবং হাইজ্যাক করা লোহার অ্যাঙ্গেল বোঝাই লরীটি। তদন্তে নেমে ভাই বিশ্বকর্মা যাদবের বয়ান অনুযায়ী অপরাধীদের স্কেচ এঁকে পুলিশ তল্লাশি শুরু করে। ৩ জনের মধ্যে ২জন ছবি রায় ওরফে উপেন্দর এবং রাজকিশোর রায়কে পুলিশ গ্রেপ্তার করে বিহারের বক্সার থেকে।

শিবরামবাবু জানিয়েছেন, এই মামলায় ৩৮জন সাক্ষী ছিলেন। শুক্রবার বিচারক দীপ্ত ঘোষ দুই অপরাধীকে ৩০২ ও ৩৯৪ ধারায় অভিযুক্ত করে ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ১ বছরের জেলের নির্দেশ দেন। ৩৯৪ ধারায় ৮ বছর জেল এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ৩ মাসের জেলের সাজা শোনান।

Recent Posts