শিয়রে ভোট, বর্ধমানে দেদার বন্ধ অফিস খুলতে শুরু করে দিল বামেরা

ফোকাস বেঙ্গল ডেস্ক,পূর্ব বর্ধমান: আর কয়েকমাসের মধ্যে বিধানসভার নির্বাচন। ২০১১ সালে রাজ্যে পালা বদলের পরই ভয় আর আতংকের কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পূর্ব বর্ধমান জেলার (তখন বর্ধমান জেলা) একাধিক সিপিএম এবং বামফ্রণ্টের শরিক সংগঠনের অফিস। কিন্তু বিধানসভার দামামা বাজতেই ফের সন্ত্রাসকে দূরে সরিয়ে রেখে বামেদের অফিস খোলা শুরু হয়ে গেল। কার্যত বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখেই এবার নতুন উদ্যমে কাজে নেমে পড়ল বাম নেতৃত্বরা। 

রবিবার প্রায় ৯ বছর পর খুলল বর্ধমান শহরের বিবেকানন্দ কলেজ মোড় এলাকায় শহীদ রামমুদি পঞ্চানন বাগদি স্মৃতি ভবন। এলাকার বামনেতা ধীরাজ পাল জানিয়েছেন, এই অফিসটি ২০১১ সালের পর থেকে সন্ত্রাসের কারণে বন্ধই ছিল। এরই মধ্যে অফিসের দোতলার তালা ভেঙে দুটি মাইক্রোফোন সেট চুরিও হয়ে যায়। তছনছ করা হয় আলমারি। দীর্ঘ প্রায় ৯ বছর পর রবিবার ফেডরিক এঙ্গেলসের জন্মদিনকে সামনে রেখে খুলল এই পার্টি অফিসটি। কার্যতঃ কার্ল মার্কস এবং এঙ্গেলস-কে এদিন শ্রদ্ধা জানানোর পর অফিসে দীর্ঘ ৯ বছর পর আবার উড়তে শুরু করল লাল পতাকা।

হাজির ছিলেন স্থানীয় নেতা রবিশংকর পাল, পুলক চক্রবর্তী, প্রদীপ মজুমদার প্রমুখরা। ধীরাজবাবু জানিয়েছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অফিস পরিষ্কার করে ২০২১ -এর নির্বাচন পরিচালনার কাজ শুরু হবে এই অফিস থেকে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় এদিন জানিয়েছেন, ২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর বর্ধমান জেলাতেও তাঁদের দলীয় অফিসের ওপর হামলা চালানো হয়েছে দফায় দফায়। বড় অফিসগুলি সন্ত্রাস সহ্য করে অফিস খোলা রাখলেও পাড়াগত বা এলাকাগত বর্ধমান শহরের প্রায় গোটা পঞ্চাশেক ছোট ছোট অফিস ও শাখা অফিসগুলির অনেকগুলিই বন্ধ করে দেওয়া হয়।

 অপূর্ববাবু জানিয়েছেন, বর্তমান সময়ে রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলের প্রতি মানুষ বীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠেছেন। আর তাই সন্ত্রাসকে উপেক্ষা করেই নির্ভয়ে মানুষ ফের লালপতাকার তলায় এসে সমবেত হচ্ছেন। বিশেষত, করোনা পরিস্থিতিতে যেভাবে বামফ্রণ্ট সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এবং রুটি রুজির প্রশ্নে একমাত্র বামফ্রণ্টই যে বিকল্প সে বিষয়ে সাধারণ মানুষ নিশ্চিত হতে পারছেন তাই তাঁরাও এবার অফিসগুলো খোলার উদ্যোগ নিচ্ছেন। 

যদিও এব্যাপারে তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিত দাস জানিয়েছেন, ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল কোনো সন্ত্রাস করেনি। কোথাও কোনো অফিস জোর করে দখল নেওয়া বা বন্ধও করে দেয়নি। কারণ তৃণমূল কংগ্রেস বদলার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। তিনি জানিয়েছেন, সিপিএম ৩৪ বছরের রাজত্বে যে সন্ত্রাস চালিয়েছিল আতংকে তারা নিজেরাই নিজেদের অফিস বন্ধ করে দিয়েছিল। এখন আবার খুলছে। এনিয়ে তৃণমূলের কোনো মাথাব্যথা নেই। অন্যদিকে, এব্যাপারে বিজেপির জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দী জানিয়েছেন, গত লোকসভা নির্বাচনের পর খোদ তৃণমূলই গর্তে ঢুকে পড়েছিল। এখন আবার তারাই সিপিএমকে নিজেদের প্রয়োজনেই উৎসাহ দিয়ে অফিস খোলাচ্ছে। কিন্তু ভারতীয় জনতা পার্টি গনতান্ত্রিক পথেই ছিল এবং আছে। তাই এবার এ টিম – বি টিম এক হলেও লাভ হবে না।

Recent Posts